শ্বশুরবাড়িতে যৌতুকের জন্য নির্যাতন, বাবার বাড়ি আসার পর মিলল গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ

0
123
ঝুলন্ত লাশ

ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলায় তাসলিমা আক্তার (২১) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শ্বশুরবাড়িতে যৌতুকের জন্য নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে তাসলিমা আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পরিবারের সদস্যদের।

গতকাল শনিবার দুপুরের দিকে উপজেলার পাঠাননগর ইউনিয়নে পূর্ব শিলুয়া গ্রামে বাবার বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তাসলিমা ওই গ্রামের ব্যাপারী বাড়ির মীর হোসেনের মেয়ে। তাঁর শ্বশুরবাড়ি ছাগলনাইয়া পৌরসভার উত্তর পানুয়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের গিয়াস উদ্দিন ওরফে ফকির আহাম্মদের স্ত্রী ছিলেন।

তাসলিমা আক্তারের বড় বোন রাবেয়া আক্তার বলেন, তিন বছর আগে পানুয়া গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের সঙ্গে তাসলিমার বিয়ে হয়। এরপর থেকে যৌতুকের জন্য তাঁকে নির্যাতন করতেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তাঁরা সব সময় টাকাপয়সার জন্য চাপ দিতেন। দিতে না পারলে মারধর করতেন। নানা ছুতোয় শুক্রবার সকালে তাসলিমাকে কয়েক দফা মারধর করা হয়। ফোন করে তাসলিমা নিজেই ফোন করে তাঁকে মারধরের কথা জানিয়েছিলেন। রাবেয়া তাঁকে ধৈর্য ধরতে বলেছিলেন।

রাবেয়া আক্তার বলেন, নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে শনিবার দুপুরের আগে তাসলিমা দুই বছর বয়সী একমাত্র মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসেন। এসেই বাড়ির একটি কক্ষে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে চুপচাপ বসে ছিলেন। কক্ষে তাঁর মেয়েও ছিল। বেলা একটার দিকে মেয়েটা কান্নাকাটি শুরু করে। শুনতে পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ঘরের বাইরে থেকে ডাকাডাকি শুরু করেন। দীর্ঘক্ষণ দরজা না খোলায় তাঁরা ছিটকিনি ভেঙে ভেতরে গিয়ে দেখেন, তাসলিমা ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে রয়েছেন। তাঁরা ওড়না কেটে তাঁকে নিচে নামান। কিন্তু ততক্ষণে তাঁর মৃত্যু হয়।

রাবেয়া আক্তারের অভিযোগ, তাসলিমাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছেন স্বামীর বাড়ির লোকজন। তাঁরা এ বিষয়ে মামলা করবেন।

অভিযোগের বিষয়ে তাসলিমার স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাঁরা অনেকটাই গা-ঢাকা দিয়েছেন। তাসলিমাকে শেষবারের মতো দেখতে তাঁর বাবার বাড়ি বা হাসপাতালের মর্গেও যাননি।

ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুদীপ রায় বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করেন। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ফেনী হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তাসলিমা কী কারণে আত্মহত্যা করেছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা হলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.