টিসিবির পণ্য কিনতে দেওয়া হচ্ছে এক কোটি স্মার্ট কার্ড

0
160
টিসিবির ট্রাকের সামনে মানুষের ভীড়

স্মার্ট কার্ড সব ধরনের অসংগতি দূর করবে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়াবে। কাজটি পেয়েছে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ফ্যাসিলিটেশন কোম্পানি।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এক কোটি উপকারভোগীকে স্মার্ট কার্ড দেবে। এই কার্ড দেখিয়ে উপকারভোগীরা বাজারের চেয়ে সাশ্রয়ী দামে টিসিবির বিক্রি করা চাল, ডাল, পেঁয়াজ ও ভোজ্যতেল কিনতে পারবেন।

স্মার্ট কার্ড তৈরির কাজটি পেয়েছে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ফ্যাসিলিটেশন কোম্পানি (আইআইএফসি) নামের একটি একটি তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) প্রতিষ্ঠানকে। কোনো ধরনের দরপত্র ছাড়া সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে প্রতিষ্ঠানটিকে ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকার এই কাজ দেওয়া হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে গতকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. মাহমুদুল হোসাইন খান।

স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে বর্তমানে সাশ্রয়ী দামে নিত্যপণ্য বিক্রি করছে টিসিবি। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির ভাষ্য অনুযায়ী এ সুবিধা পাচ্ছে ‘এক কোটি পরিবার’। তিনি গত ৩ এপ্রিল টিসিবির কার্ডধারীদের মধ্যে টিসিবির দ্বিতীয় ধাপের বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন করার সময় স্মার্ট কার্ড দেওয়ার কাজ চলছে বলে জানিয়েছিলেন।

জানা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ও বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকায় টিসিবির কার্ড স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরের পরীক্ষামূলক কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে হাতে লেখা সব কার্ডই কিউআর কোড সংবলিত স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরিত হবে।

টিসিবির সূত্রগুলো জানায়, কিউআর কোডে স্ক্যান করলে সেকেন্ডের মধ্যেই গ্রাহকদের সব তথ্য চলে আসবে। এ কার্ডে থাকা তথ্য মেলানো থাকবে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সঙ্গে। ফলে টিসিবির প্রধান কার্যালয়ের পাশাপাশি জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও) মুহূর্তের মধ্যেই বুঝতে পারবেন কারা পণ্য পাচ্ছেন, কারা পাচ্ছেন না।

বৈঠক শেষে যোগাযোগ করলে টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান বলেন, কার্ডটি হবে ছোট এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য। এই স্মার্ট কার্ড সব ধরনের অসংগতি দূর করবে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়াতে ভূমিকা রাখবে।

টিসিবির বিদ্যমান তালিকা নিয়ে যে বিস্তর অভিযোগ আছে তার কি হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে আরিফুল হাসান বলেন, ‘আমরা এ তালিকা ধরেই এগোচ্ছি। স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরের সময়ই যোগ্য নন এমন অনেকেই বাদ পড়বেন বলে আশা করছি।’

কুঁড়ার তেল কিনছে টিসিবি

এদিকে গতকাল সরকারি ক্রয়–সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে যশোরের মজুমদার ব্র্যান অয়েল মিলস এবং ঢাকার মজুমদার প্রোডাক্টসের কাছ থেকে ২৫ লাখ লিটার করে মোট ৫০ লাখ লিটার রাইস ব্র্যান অয়েল (ধানের কুঁড়ার তেল) কেনার দুটি আলাদা প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এতে ৮০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। প্রতি লিটার তেলের দাম পড়বে ১৬০ টাকা। তবে টিসিবির কার্ডধারীদের কাছে বিক্রি করা হবে ১০০ টাকা লিটার দরে।

এ বিষয়ে টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান বলেন, ‘প্রচলিত ভোজ্যতেলের চেয়ে এ তেল তুলনামূলক স্বাস্থ্যকর। তাই আমরা এবার কুঁড়ার তেল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

মিলমালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ধানের সাড়ে ছয় কেজি কুঁড়া থেকে এক লিটার তেল হয়। এক লিটার সয়াবিন তেলে যে খাবার রান্না করা যায়, তা পৌনে এক লিটার কুঁড়ার তেলে করা সম্ভব। বিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুযায়ী অন্য ভোজ্যতেলের তুলনায় ধানের কুঁড়ার তেলে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারকের মাত্রা কম।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.