‘৩০০’–এর মাইলফলকে গার্দিওলা যেখানে ফার্গুসন–ওয়েঙ্গার–ক্লপ–মরিনিওর চেয়ে এগিয়ে

0
34
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে কোচ হিসেবে ৩০০ ম্যাচ হয়ে গেল পেপ গার্দিওলারম্যানচেস্টার সিটি

১ জুলাই, ২০১৬ থেকে ২৮ এপ্রিল ২০২৪।

প্রথম তারিখটি ম্যানচেস্টার সিটিতে পেপ গার্দিওলার যোগ দেওয়ার। পরেরটি পরশুর—নটিংহাম ফরেস্টের মাঠ সিটি গ্রাউন্ডে এদিন ২-০ গোলে জিতেছে ম্যানচেস্টার সিটি। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে সিটি কোচ হিসেবে এটি ছিল গার্দিওলার ৩০০তম ম্যাচ।

এই পথ পর্যন্ত আসতে সিটিতে অষ্টম মৌসুম কাটছে গার্দিওলার। ভাবতে পারেন, কালে কালে বেলা তো কম হলো না! প্রিমিয়ার লিগে সর্বোচ্চসংখ্যক ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়ানো কোচদের তালিকায় গার্দিওলা কততম?

প্রিমিয়ার লিগে ১৯তম কোচ হিসেবে ন্যূনতম ৩০০ ম্যাচে কোচিং করালেন গার্দিওলা। এক ক্লাবের কোচ হিসেবে প্রিমিয়ার লিগে ৩০০ ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়ানোদের তালিকায় পঞ্চম এই স্প্যানিশ কোচ। আর্সেনালে আর্সেন ওয়েঙ্গার, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে অ্যালেক্স ফার্গুসন, এভারটনে ডেভিড ময়েস এবং লিভারপুলে ইয়ুর্গেন ক্লপের পর পঞ্চম কোচ হিসেবে এই ক্লাবে নাম লেখালেন গার্দিওলা।

এই ফাঁকে জানিয়ে রাখা ভালো প্রিমিয়ার লিগে কোচ হিসেবে সর্বোচ্চ ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়ানোর রেকর্ড ওয়েঙ্গারের—৮২৮ ম্যাচ এবং সেটাও শুধু আর্সেনালের হয়ে। পরের নামটি নিশ্চয়ই আন্দাজ করতে পারছেন, কে আবার ফার্গুসন! প্রিমিয়ার লিগে ৮১০ ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়িয়েছেন ইউনাইটেড কোচ হিসেবে। ওয়েস্ট হাম ইউনাইটেডের বর্তমান কোচ ডেভিড ময়েস তালিকায় তৃতীয়—৬৯৪। প্রিমিয়ার লিগে বর্তমান কোচদের মধ্যে ম্যাচের হিসাবে কোচ হিসেবে ডাগআউটে দাঁড়ানোর অভিজ্ঞতায় ময়েসই শীর্ষে।

কিন্তু যদি হার-জিতে পরিসংখ্যান টানা হয় এবং সেটাও যদি হয় এভাবে—প্রিমিয়ার লিগে কোচ হিসেবে নিজের প্রথম ৩০০ ম্যাচে জয়সংখ্যায় কে এগিয়ে? উত্তর—জোসেপ ‘পেপ’ গার্দিওলা সালা। হ্যাঁ, পেপ গার্দিওলাই। ওটা পুরো নাম।

ফার্গুসন, ওয়েঙ্গার, জোসে মরিনিও ও ক্লপ—প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে বৈশ্বিকভাবে পরিচিতি পাওয়া চার কোচ। ইউনাইটেডে ২৬ বছরের কোচিং ক্যারিয়ারে ১৩টি লিগ ও ২টি চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতান ফার্গুসন। ওয়েঙ্গার আর্সেনালকে অপরাজিত রেখে ২০০৩-০৪ মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগ জিতিয়েছেন। মরিনিও চেলসিকে প্রিমিয়ার লিগ জিতিয়েছেন ৩ বার। আর ক্লপ লিভারপুলকে প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা এনে দেওয়ার পাশাপাশি চ্যাম্পিয়নস লিগও জিতিয়েছেন। চলতি মৌসুম শেষেই ছাড়বেন লিভারপুল।

এই চার কোচের তালিকায় গার্দিওলাকে খুব সহজেই রাখা যায়। স্প্যানিশ এই কোচ সিটিকে পাঁচবার প্রিমিয়ার লিগ জিতিয়েছেন, এবারও আছেন সেই পথেই। জিতিয়েছেন চ্যাম্পিয়নস লিগও। তবে একটি তালিকায় ফার্গুসন, ওয়েঙ্গার, মরিনিও ও ক্লপ কিন্তু গার্দিওলার চেয়ে যোজন ব্যবধানে পিছিয়ে। যে প্রশ্নটি তোলা হয়েছিল—প্রথম ৩০০ ম্যাচে জয়সংখ্যায় কে এগিয়ে—তার উত্তরে যে তালিকাটি বেরিয়ে আসবে সেখানে। সেই তালিকা দেখে মজা করে বলাই যায়, নাহ, এখানে গার্দিওলার সঙ্গে ফার্গুসন, ওয়েঙ্গার, মরিনিও ও ক্লপের তুলনা শুধু কঠিন নয়, অসম্ভবও!

প্রিমিয়ার লিগে কোচ হিসেবে গার্দিওলার প্রথম ৩০০ ম্যাচে জয়সংখ্যা ২২১। ড্র ৪১ ম্যাচ, হার ৩৮ ম্যাচ। কোচ হিসেবে এ প্রতিযোগিতায় নিজের প্রথম ৩০০ ম্যাচে ২০০–র বেশি জয় পাওয়া একমাত্র কোচও গার্দিওলা।

মরিনিও নিজের প্রথম ৩০০ ম্যাচে জিতেছেন ১৮৯ ম্যাচ। পর্তুগিজ কোচ এ তালিকায় দ্বিতীয়। ৬৭ ড্রয়ের পাশাপাশি ৪৪ ম্যাচ হেরেছেন মরিনিও। ১৮৮ জয় নিয়ে এ তালিকায় দ্বিতীয় ক্লপ। এই পথে ৬৯ ড্রয়ের পাশাপাশি ৪৩ ম্যাচে হেরেছেন লিভারপুল কোচ। ইউনাইটেডের কিংবদন্তি কোচ ফার্গুসন জিতেছেন ১৮৩ ম্যাচ। ৭৮ ড্রয়ের পাশাপাশি ৩৯ ম্যাচ হেরেছেন এই স্কটিশ। ওয়েঙ্গার জিতেছেন ১৮০ ম্যাচ। ৭৭ ড্র ও ৪৩ হার।

গার্দিওলা সিটি কোচ হিসেবে যোগ দেওয়ার পর এই ৮ মৌসুমে তাঁর দলই প্রিমিয়ার লিগ থেকে সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট তুলে নিতে পেরেছে। গার্দিওলার এই ৩০০ ম্যাচ থেকে ৭০৪ পয়েন্ট পেয়েছে সিটি, যা তালিকায় দ্বিতীয় লিভারপুলের চেয়ে ৫৪ পয়েন্ট বেশি।

প্রিমিয়ার লিগে প্রথম ৩০০ এর মাইলফলক কোচ

গার্দিওলা সিটিতে কোচ হয়ে আসার পর এ সময়ে প্রিমিয়ার লিগ থেকে ৬৫০ পয়েন্ট তুলে নিতে পেরেছে লিভারপুল। আরও একটি পরিসংখ্যানে প্রিমিয়ার লিগে গার্দিওলার ৩০০ ম্যাচের পারফরম্যান্সটা বোঝানো যায়। ফার্গুসন, মরিনিও, ওয়েঙ্গার ও ক্লপ—এই চার কোচের কেউ প্রিমিয়ার লিগে তাঁদের প্রথম ৩০০ ম্যাচে গার্দিওলার মতো এত গোল পাননি। প্রথম ৩০০ ম্যাচে গার্দিওলার দল করেছে ৭৪১ গোল, ক্লপ ৬৩৭ গোল, ফার্গুসন ৫৭৯ গোল, ওয়েঙ্গার ৫৬১ গোল এবং মরিনিও ৫১৯ গোল।

এই পাঁচ কোচের মধ্যে গোল হজমেও গার্দিওলার পারফরম্যান্স ক্লপ, ফার্গুসন ও ওয়েঙ্গারের চেয়ে ভালো। প্রিমিয়ার লিগে কোচ হিসেবে ৩০০ ম্যাচে গার্দিওলা ২৪৭টি গোল হজম করেছেন, মরিনিও ২৩০ গোল হজম করে তাঁর চেয়ে ভালো অবস্থানে। এই প্রতিযোগিতায় কোচ হিসেবে নিজের প্রথম ৩০০ ম্যাচে ২৬৪ গোল হজম করেছেন ওয়েঙ্গার, ফার্গুসন হজম করেছেন ২৬৫ গোল এবং ক্লপ সবচেয়ে বেশি—২৯৩।
প্রিমিয়ার লিগে প্রথম ৩০০ ম্যাচ (কোচ হিসেবে)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.