এআই নীতি: ঐক্যমত জি–৭–এর নেতারা

0
82
জি–৭–এর সম্মেলনে ডিজিটাল এবং তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রীদের বৈঠকের সময় একটি ফটোসেশনে। শনিবার জাপানের তাকাসাকিতে, ছবি: রয়টার্স

শিল্পোন্নত সাত দেশের জোট জি-৭–এর তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রীরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) ক্ষেত্রে ঝুঁকিভিত্তিক প্রবিধান গ্রহণ করার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন। গতকাল রোববার জাপানে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তাঁরা এ বিষয়ে একমত হন।

ইউরোপীয় আইন প্রণেতারা চ্যাটজিপিটির মতো উদীয়মান প্রযুক্তিগুলোর ক্ষেত্রে নিয়ম প্রয়োগ করার জন্য একটি ‘এআই আইন’ প্রবর্তন করার জন্য তাড়াহুড়ো করেছেন। এর মধ্যেই জি–৭–এর ডিজিটাল মন্ত্রীরা ঝুঁকিভিত্তিক প্রবিধান প্রণয়নে সম্মতির কথা জানালেন।

জি-৭-এর ডিজিটাল মন্ত্রীরা দুই দিনের বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, এআই প্রযুক্তির বিকাশের জন্য এ ধরনের প্রবিধান গ্রহণ করা হলেও তার জন্য একটি উন্মুক্ত এবং সক্ষম পরিবেশ সংরক্ষণ করা উচিত এবং প্রবিধান গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত। তবে তাঁরা স্বীকার করেছেন, বিশ্বস্ত এআইয়ের ক্ষেত্রে সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি ও লক্ষ্য অর্জনের জন্য এ–সংক্রান্ত নীতিমালা জি–৭ দেশগুলোর মধ্যে আলাদা হতে পারে।

গোপনীয়তার উদ্বেগ এবং নিরাপত্তাঝুঁকির মধ্যেও কীভাবে জি-৭–এর জোটের দেশগুলো এআইকে পরিচালনা করবে, তা নিয়ে করা চুক্তিটি একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

ইউরোপীয় কমিশনের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্গ্রেথ ভেস্টেগার বলেন, ‘জি–৭–এর বৈঠকের শেষে আমরা দেখতে পাচ্ছি, এ ক্ষেত্রে আমরা একা নই।’

বর্তমানে বিভিন্ন দেশের সরকারের মধ্যে চ্যাটজিপিটির মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন প্রোগ্রাম নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এ ধরনের প্রোগ্রামগুলোর জনপ্রিয়তার দিকটি তারা বিবেচনায় ধরে এ নিয়ে কর্মপন্থা ঠিক করছে।

গত বছরের নভেম্বরে মার্কিন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান ওপেনআইয়ের তৈরি চ্যাটজিপিটি প্রোগ্রামটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেছে বিশ্বের বৃহত্তম সফটওয়্যার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট।

মন্ত্রীদের যৌথ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা জেনারেটিভ এআইয়ের ওপর ভবিষ্যতে আলোচনা চালিয়ে যাব। এতে সরকার পরিকল্পনা, বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তির অধিকার রক্ষা, স্বচ্ছতা ও তথ্যের বিভ্রান্তি দূর করা যায়।’

জি–৭–এর সদস্যভুক্ত দেশ ইতালি ব্যক্তিগত তথ্যনীতি সম্ভাব্য লঙ্ঘনের তদন্ত করতে গত মাসে চ্যাটজিপিটিকে নিষিদ্ধ করে রেখেছিল। তবে গত শুক্রবার দেশটি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে।

তবে ইতালির এ ঘটনা ইউরোপের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বিষয়টি দেখভাল করার সংস্থাগুলোকে চ্যাটজিপিটির মতো প্রোগ্রামগুলোর বিষয়ে তদন্তে উৎসাহী করেছে। ইইউ আইনপ্রণেতারা বৃহস্পতিবার আসন্ন এআই আইনের একটি নতুন খসড়া নিয়ে প্রাথমিক চুক্তিতে পৌঁছেছেন। ইইউর কারিগরি নিয়ন্ত্রক প্রধান ভেস্টেগার বলেছেন, ইউরোপে এআই আইন করতে এ বছর রাজনৈতিক চুক্তি হবে।

জাপান এ বছর জি–৭–এর চেয়ারম্যান হিসেবে এআই ডেভেলপারদের জন্য সুবিধাজনক পদ্ধতি গ্রহণ করার কথা জানিয়েছে। ফ্রান্সের ডিজিটাল রূপান্তরবিষয়ক মন্ত্রী জিন-নোয়েল ব্যারোট বলেন, নিষেধাজ্ঞা কোনো সঠিক প্রতিক্রিয়া নয়।

উদ্ভাবনকে বিকশিত করা উচিত। তবে নির্দিষ্ট সীমারেখার মধ্যে রেখেই তা করতে হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.