তিন মাস পরপর সমন্বয় হবে জ্বালানি তেলের দর

চলতি বছরই কার্যকর

0
101
জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতির (অটোমেটেড প্রাইসিং ফর্মুলা)

জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতির (অটোমেটেড প্রাইসিং ফর্মুলা) দিকে যাচ্ছে সরকার। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে দেশে জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ করা হবে। প্রতি তিন মাস পর মূল্য সমন্বয় হবে। তেলের দাম নির্ধারণের দুটি অংশ থাকবে। প্রিমিয়াম (জাহাজ ভাড়া ও অন্যান্য), ট্যাক্স, বিপণন মার্জিন, ডিলারদের কমিশন ইত্যাদি মিলে একটি নির্ধারিত অংশ থাকবে, যা সাধারণত পরিবর্তন হবে না। অপর অংশটি আন্তর্জাতিক মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করে বাড়বে বা কমবে। চলতি বছরের শেষ প্রান্তিকে এই পদ্ধতি কার্যকর হতে পারে। জ্বালানি বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত পূরণে এই পদ্ধতির দিকে এগোচ্ছে সরকার। আইএমএফ জ্বালানি তেল ও গ্যাসের ওপর থেকে ভর্তুকি তুলে দিতে পরামর্শ দিয়েছে সরকারকে।

জ্বালানি বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রথমে জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতির কার্যকারিতা পর্যালোচনা করবে সরকার। এর পর গ্যাসের ক্ষেত্রে এমন মূল্য পদ্ধতির বিষয়ে বিবেচনা করা হবে। আইএমএফের সফররত প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রোববার বৈঠকে জ্বালানি বিভাগের পক্ষ থেকে এ কথা জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতির বিষয়ে একটি প্রতিবেদন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) পক্ষ থেকে জ্বালানি বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন নিয়ে জ্বালানি বিভাগ কাজ করছে। এ বিষয়ে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকও কাজ করছে। পদ্ধতি সম্পর্কে বাস্তব অভিজ্ঞতা নিতে জ্বালানি বিভাগ ও বিপিসির একটি প্রতিনিধি দল ভারত এবং অন্য একটি দেশ সফর করবে। সব বিষয় পর্যালোচনা শেষে আগামী সেপ্টম্বরের মধ্যে এই পদ্ধতি চালু করতে চায় সরকার।

বর্তমানে ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল ও অকটেনের মূল্য নির্বাহী আদেশে নির্ধারণ করে সরকার। এ ছাড়া জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েলসহ কিছু পণ্যের দাম প্রতি মাসে সমন্বয় করে বিপিসি।

গতকাল জ্বালানি বিভাগে আইএমএফ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন জ্বালানি সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার। এ সময় জ্বালানি বিভাগ, পেট্রোবাংলা, বিপিসিসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। আইএমএফের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান রাহুল আনন্দ বৈঠকে তাঁদের দলের নেতৃত্ব দেন।

আইএমএফের কাছ থেকে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন (৪৭০ কোটি) ডলার ঋণ নিচ্ছে সরকার। সংস্থাটি ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাত কিস্তিতে এই ঋণ দেবে। ঋণের প্রথম কিস্তি ৪৭৬ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার গত ৩০ জানুয়ারি ছাড় করা হয়েছে। আগামী নভেম্বরে ছাড় হবে দ্বিতীয় কিস্তি। দ্বিতীয় কিস্তির ঋণ পেতে যে শর্ত বা সংস্কারমূলক কাজ করার কথা, তার অগ্রগতি দেখতে গত মঙ্গলবার আইএমএফ  প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসে। তারা অর্থ মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), বাংলাদেশ ব্যাংক, বিদ্যুৎ বিভাগসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করছে।

ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আইএমএফের অন্যতম শর্ত ছিল জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ থেকে ভর্তুকি প্রত্যাহার করা। গতকালের বৈঠকে জ্বালানি বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এখন গ্যাস ও জ্বালানি তেলে তেমন লোকসান হচ্ছে না।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.