হোয়াইটওয়াশ এড়ানো যাবে কি

0
72
সাকিবের কাঁধেই বড় দায়িত্ব

লিটন কুমার দাস পাল্টা প্রশ্ন করেন সাংবাদিকদের, নিক পোথাস কাটা কাটা উত্তর দেন। আর দলের বাকিরা মুখে কুলুপ এঁটে বসে। গুমোট একটা পরিবেশ বাংলাদেশ দলে। এই পরিবেশের পেছনে আফগানিস্তানের কাছে সিরিজ হারের ভূমিকা কতটা আর বাইরের ঘটনার প্রভাব কতটা, বিসিবি তা খতিয়ে দেখবে কিনা জানা নেই। দেখলে দল ও বিসিবি দু’পক্ষের জন্যই উপকার। সমস্যাগুলো খুঁজে বের করা গেলে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সাজাতে সহায়ক হবে মনে করেন ক্রিকেট-সংশ্লিষ্টরা।

এসব তো পরের ব্যাপার। এ মুহূর্তে মাঠের ক্রিকেটে মন দেওয়া খুব জরুরি। কারণ, আফগানিস্তানের বিপক্ষে মুখ বাঁচানোটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ দলের ম্যানেজমেন্টের সামনে। লিটনরা সিরিজের শেষ ম্যাচটি জিততে পারলে মুখরক্ষা হয়। কিন্তু এ রকম গুমোট একটা পরিবেশ থেকে রাতারাতি বের হয়ে এসে ম্যাচ জেতা কঠিন কাজ। তবে তা করাও জরুরি টি২০ সিরিজে ভালো খেলার প্রয়োজনে। কারণ, ক্রিকেট খেলাটা তো স্কিলের সঙ্গে মনস্তাত্ত্বিকও। গতকাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে সহকারী কোচ নিক পোথাস এই ঘুরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে তেমন কিছু বলেননি। বরং ক্রিকেটারদের মাথার ওপর ছাতা ধরলেন আফগানদের বিপক্ষে সিরিজ হারকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করে।

বাংলাদেশ আর আফগানিস্তানের ক্রিকেট কাঠামোর মধ্যে যোজন যোজন পার্থক্য। ক্রিকেটারদের সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তির দিক থেকে আকাশ-পাতাল ব্যবধান। বিসিবি কী দেয় না লিটনদের। বিশ্বমানের বিদেশি কোচিং স্টাফ রাখা হয়েছে জাতীয় দলে। দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দেয়। আর আফগানিস্তানের ক্রিকেটাররা তো নিজ দেশেই ঠিকমতো থাকতে পারেন না। সেই দলের ব্যাটার এবং বোলারদের সামনে সাকিব আল হাসানদের এভাবে মুখ থুবড়ে পড়া লজ্জার।

কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে সিরিজ শুরুর আগে অফিসিয়াল সংবাদ সম্মেলনে আফগানিস্তানের বোলিং ইউনিটকে বিশ্বমানের তকমা দিয়েছেন। অধিনায়ক তামিম ইকবাল প্রথম ম্যাচের আগে প্রতিপক্ষের স্তুতি গেয়েছেন। পরবর্তী সময়ে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক লিটনও সিরিজে সমতা আনার ব্যাপারে জোর দিয়ে কিছু বলতে পারেননি। গতকাল নিক পোথাস তো প্রতিপক্ষের বোলিংকে বিশ্বসেরার তকমা দিয়ে দলের ব্যর্থতাকে আড়াল করার চেষ্টা করলেন। তাঁর মতে, ‘সত্যি বলতে, তাদের স্পিন আক্রমণ বিশ্বসেরা। এটাই সত্য। তারা তিনজন (মুজিবুর  রহমান, রশিদ খান, মোহাম্মদ নবী) বিশ্বজুড়েই সাদা বলের অনেক ক্রিকেট খেলেছেন। অধিনায়কের জন্য এটা স্বপ্নের মতো, যখনই বল দেওয়া হবে তারা নিজেদের কাজ করে দেবেন। এই স্পিন মোকাবিলা করা আমাদের জন্য দারুণ কাজে দেবে। তাদের মোকাবিলা করলে বিশ্বের যে কারও বলে খেলা সম্ভব।’

তারা না হয় বিশ্বসেরা তিন স্পিনার নিয়ে খেলছে, কিন্তু বাংলাদেশের বোলিং লাইনআপও তো খারাপ নয়। তিন পেসার আর দুই স্পিনারের সমন্বয়ে মার্চে চট্টগ্রামে ইংল্যান্ডকে হারানোর স্মৃতি এই কয় মাসে ফিকে হয়ে যাওয়ার কথা নয়। তাহলে একই বোলিং লাইনআপকে আফগানিস্তানের দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ আর ইব্রাহিম জাদরান কীভাবে গুঁড়িয়ে দিলেন? তারা দু’জন যেভাবে ৩৬ ওভার ব্যাটিং করেছেন, তা বোলিং বিভাগের দুর্বলতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখায়।

নিক পোথাসের জন্য বার্তা হলো– গত বছর এই তিন স্পিনারের বলে খেলেই বিশ্বকাপ সুপার লিগের সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তীব্র লড়াই করে শেষ ম্যাচটি জিততে পেরেছিল আফগানিস্তান। দেড় বছরের ব্যবধানে তাদের কাছেই কিনা হোয়াইটওয়াশের শঙ্কায় বাংলাদেশ। অথচ ২০১৪ সালের পর দেশের মাটিতে কোনো বিদেশি দলের কাছে এক দিনের ক্রিকেট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়নি টাইগাররা। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ২০১৪ সালে শেষ ৩-০ ব্যবধানে হেরেছিল।

সাড়ে ৯ বছর পর র‌্যাঙ্কিংয়ের নিচের দলের কাছে হোয়াইটওয়াশ হতে না হয়। সে যাই হোক, আজ দুটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামতে পারে বাংলাদেশ। পেসার এবাদত হোসেন হাঁটুতে চোট পাওয়ায় একটি অবধারিতই ছিল। তাঁর জায়গায় একাদশে ফিরবেন তাসকিন আহমেদ। বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে বিশ্রাম দিয়ে খেলাতে পারে আরেক বাঁহাতি শরিফুল ইসলামকে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.