হাবিব, সাইফুলসহ বিএনপির আরও ৩৬ জনের সাজা

0
82
উপরে বাঁ থেকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম; নিচে বাঁ থেকে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাজীব আহসান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশীদ

আরও একটি মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাজীব আহসান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশীদের সাজা হয়েছে। পুলিশের করা এ মামলা হয়েছিল ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, রাজধানীর পল্টন থানায়। এ মামলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে বেআইনি সমাবেশ, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া ও হামলা এবং ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ আনা হয়।

পল্টন থানার এ মামলায় মোট ৪৪ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছিল পুলিশ। আজ বুধবার রায়ে আদালত ১৯ জনকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দেন। খালাস দেওয়া হয়েছে ২৫ জনকে। ঢাকার সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসীম এ রায় দেন।

এ ছাড়া আজ আরও দুটি মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর ১৭ জন নেতা-কর্মীর সাজা হয়েছে। এ নিয়ে গত প্রায় পাঁচ মাসে ৮৮ মামলায় ১ হাজার ৩৩১ জনের সাজা হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বেশির ভাগ বিএনপি ও এর অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মী। এর মধ্যে হাবিব উন নবী খান (সোহেল), সাইফুল আলম (নিরব), রাজীব আহসান, হাবিবুর রশীদসহ বেশ কয়েকজনের একাধিক মামলায় সাজা হয়েছে।

এখন পর্যন্ত তিনটি মামলায় হাবিব উন নবী খানের ও ছয়টি মামলায় সাইফুল আলমের সাজা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁদের আইনজীবীরা।

পল্টন থানার মামলা
মামলার এজাহারের বিবরণ অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে নয়াপল্টন এলাকায় বিএনপির ৫০ থেকে ৬০ জন বেআইনি সমাবেশ করেন। পরে তাঁরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মিছিল করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাঁরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন এবং ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান। এ ঘটনায় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাজীব আহসানসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে প্রথমে মামলা করেছিল পুলিশ। পরে বিএনপি নেতা হাবিব উন নবী খানসহ ৪৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।

গত ১৭ মে এ মামলায় অভিযোগ গঠন করেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা ২০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫ জন পুলিশ সদস্যকে আদালতে হাজির করে। সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছিল গত ১৪ নভেম্বর, শেষ হয় ৫ ডিসেম্বর। এ মামলায় আসামিপক্ষ থেকে ছয়জন সাফাই সাক্ষ্য দেন। আজ রায়ে ১৯ জনকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। খালাস দেওয়া হয় ২৫ জনকে।

বাড্ডা থানার মামলা
বিএনপির নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে বাড্ডা থানায় করা এ মামলার বাদী আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা মোবিনুল ইসলাম। মামলায় উল্লেখ করা তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র কয়েক দিন আগে ১৬ ডিসেম্বর রাত নয়টার দিকে পূর্ব বাড্ডার আলিফনগর এলাকায় আওয়ামী লীগের একটি নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন দেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা।

এ মামলায় ২০১৯ সালের ৩০ জুন বিএনপির ১৫ জন নেতা–কর্মীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ১৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়। এঁদের মধ্যে তিনজন পুলিশ বাহিনীর সদস্য। এ ছাড়া আসামিপক্ষ থেকে তিনজন সাফাই সাক্ষ্য দেন।

গতকাল রায়ে ১২ জনকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। খালাস দেওয়া হয় তিনজনকে। ঢাকার সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. আতাউল্লাহ এ রায় দেন।

মিরপুর থানার মামলা
পুলিশের করা এ মামলার এজাহারের বিবরণ অনুযায়ী, ২০২১ সালের ১৫ মার্চ বিকেলে মিরপুরের পাইকপাড়া এলাকায় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের ১৫০ থেকে ২০০ জন পূর্বানুমতি না নিয়ে মিছিল করেন। এতে বাধা দিলে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করেন তাঁরা এবং কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান। এতে পুলিশের একজন সদস্য আহত হন।

এ ঘটনায় করা মামলায় গত বছরের ৩১ আগস্ট সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে পাঁচজন পুলিশ সাক্ষীকে আদালতে হাজির করে। এ মামলায় পাঁচজনকে আড়াই বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন। খালাস দেওয়া হয় দুজনকে।

ঢাকার সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. মইনুল ইসলাম এ রায় দেন। একই আদালত ২০১৩ সালে নিউমার্কেট থানায় দায়ের করা মামলায় ১১ জন আসামির সবাইকে খালাস দিয়েছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.