সাংবাদিক রব্বানি হত্যায় জড়িত অভিযোগে আরেক ব্যক্তি গ্রেপ্তার

0
101
ছোট ছেলে রিসাদের সঙ্গে সাংবাদিক গোলাম রব্বানি

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় সাংবাদিক গোলাম রব্বানির হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে আরেক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়নের মধ্য ধাতুয়াকান্দা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম মো. আন্দোলন সরকার (৫৫)। তিনি মধ্য ধাতুয়াকান্দা এলাকার বাসিন্দা। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। তবে তাঁর নাম মামলার এজাহারে ছিল না।

বকশীগঞ্জ থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সাংবাদিক গোলাম রব্বানির ওপর হামলার ঘটনায় সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন আন্দোলন সরকার। ঘটনার পরই এলাকা থেকে পালিয়ে যান আন্দোলন। গত সোমবার গ্রেপ্তার হওয়া মো. নয়ন মিয়া হত্যাকাণ্ডে আন্দোলনের জড়িত থাকার কথা জানিয়েছেন। এর পর থেকে আন্দোলনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছিল। গোপন সংবাদের মাধ্যমে পুলিশ জানতে পারে, আন্দোলন ধাতুয়াকান্দা এলাকায় রয়েছেন। পরে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহেল রানা বলেন, গতকাল রাতেই গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে আন্দোলনকে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাঁকে আজ বুধবার দুপুরে আদালতে পাঠানোর কথা রয়েছে।

থানা-পুলিশ সূত্র জানায়, রব্বানির ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হওয়ার আগেই ১৩ জনকে আটক করা হয়। ১৭ জুন সকালে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থেকে প্রধান আসামি মাহমুদুল আলমকে আটক করে র‍্যাব। মামলার পর তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ১৮ জুন আদালত তাঁদের সবাইকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে পাঠান। ২২ জুন রিমান্ড শেষে আসামিদের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে রেজাউল করিম ও মো. মনিরুজ্জামান ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন। এক দিন পর রিমান্ড শেষে হত্যার দায় স্বীকার করে প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন। নয়ন মিয়া, আন্দোলনসহ আলোচিত হত্যা মামলাটিতে এ নিয়ে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

১৪ জুন রাত ১০টার দিকে পেশাগত দায়িত্বপালন শেষে বাড়িতে ফিরছিলেন সাংবাদিক গোলাম রব্বানি। বকশীগঞ্জের পাটহাটি এলাকায় সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান (বরখাস্ত) মাহমুদুল আলমের নেতৃত্বে তাঁর ওপর হামলা করে একদল সন্ত্রাসী। এ সময় তাঁকে টেনেহিঁচড়ে উপর্যুপরি কিলঘুষি ও বেদম মারধর করা হয়। একপর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়লে সন্ত্রাসীরা তাঁকে ফেলে পালিয়ে যায়। পরদিন দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

গোলাম রব্বানি অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর ডটকমের জেলা প্রতিনিধি এবং একাত্তর টিভির বকশীগঞ্জ উপজেলার সংবাদ সংগ্রাহক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রব্বানির স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার এজাহারে মাহমুদুল আলম, তাঁর ছেলে রিফাতসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.