মোখার গতি বেড়ে ১৭০ কিলোমিটার, দূরত্ব কমছে উপকূলের সঙ্গে

0
82
মোখার গতিবেগ বাড়ছেছবি: আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার গতি বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের উপকূলের সঙ্গে এর দূরত্ব কমছে। আজ শনিবার সন্ধ্যায় এ ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাব পড়তে শুরু করবে কক্সবাজার ও এর কাছাকাছি উপকূলীয় এলাকায়।

আজ সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ বলেন, মোখার গতিবেগ বাড়ছে। আবার বাংলাদেশের উপকূলের সঙ্গে এর দূরত্বও কমছে।

আজ দেওয়া ১৩ নম্বর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে। এ জন্য কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

আজ দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়

আজ দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ভোলা এবং তাদের কাছের দ্বীপ ও চর ৮ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে। ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং তাদের কাছের দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুট বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে দেওয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ ১৩ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ উত্তর-উত্তর–পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ–পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ–পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ–পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ–পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

এটি আরও উত্তর-উত্তর–পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে কাল রোববার সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। আজ সন্ধ্যা থেকে কক্সবাজার ও এর কাছের উপকূলীয় এলাকায় ‘মোখা’র অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হতে পারে।

গতকাল রাত নয়টায় দেওয়া ১২ নম্বর বিজ্ঞপ্তিতে দেখা গিয়েছিল, মোখা চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ–পশ্চিমে ও কক্সবাজার থেকে ৮৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ–পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ–পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ–পশ্চিমে অবস্থান করছিল। দেখা যাচ্ছে, প্রতিটি সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে মোখার দূরত্ব কমছে।

গতকাল রাতেই দুই বন্দরকে এই মহাবিপৎসংকেত দেওয়া হয়েছিল। তবে তখন বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ১৬০ কিলোমিটার। এখন যেটি ১৭০ হয়েছে।

এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ভোলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৭ ফুট বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। এ জন্য উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.