প্রথম ইনিংসে ৪৪৫ রান করেও ডাকেট–ঝড়ে চাপে ভারত

0
114
শতকের পর ডাকেট, এএফপি

বেন ডাকেট বোধ হয় জানতেন না! জানলেই বা কী! তিনি যে আদর্শে বিশ্বাসী, সেই আদর্শের ক্রিকেটাররা রেকর্ডের দিকে তাকান বলে মনে হয় না। তাঁরা মনের আনন্দে খেলেন, যখন যেভাবে ভালো লাগে। তাই ৭৫ বলে শতক করে ডাকেট ইংল্যান্ডের দ্রুততম টেস্ট শতকের মালিক গিলবার্ট জেসফকে ছাড়িয়ে যাওয়ার কোনো চেষ্টাই করলেন না। সেটা ইনিংসের একপর্যায়ে ৩৩ বলে ৩২ রান লাগার পরও।

রেকর্ড ভাঙতে পারেননি, তবে তাঁর ৮৮ বলের শতকে প্রথম ইনিংসে ভারতের করা ৪৪৫ রানের জবাব নিজেদের মতো করেই দিচ্ছে ইংল্যান্ড। রাজকোট টেস্টে ইংল্যান্ড দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে ২ উইকেটে ২০৭ রান নিয়ে, পিছিয়ে ২৩৮ রানে। ১১৮ বলে ১৩৩ রানে অপরাজিত আছেন ডাকেট, রুট তৃতীয় দিন শুরু করবেন ৯ রান নিয়ে।

ভারতের বিপক্ষে এটি ইংল্যান্ডের কোনো ব্যাটসম্যানের দ্রুততম শতক। ভারতের মাটিতে সফরকারী ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তৃতীয় দ্রুততম। তাঁর চেয়ে দ্রুততম শতক করেছেন অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, ২০০১ সালে তিনি করেছিলেন ৮৪ বলে। ক্লাইভ লয়েড শতক করেছেন ৮৫ বলে, সেটা ১৯৭৪ সালে। ৮৮ বলের শতকে ৮৪ শতাংশ বলই স্বাচ্ছন্দ্যে খেলেছেন ডাকেট। ১৯টি যে চার মেরেছেন, সেখানে কোনো বাউন্ডারিই এজ থেকে আসেনি।

৫০০ উইকেটের ক্লাবে অশ্বিন
৫০০ উইকেটের ক্লাবে অশ্বিন, এএফপি

সঙ্গী জ্যাক ক্রলির সঙ্গে ডাকেটের বোঝাপড়াটা দারুণ। ইংল্যান্ডের হয়ে টেস্টে আজ ২৬ তম বারের মতো ওপেন করেছে এই জুটি। ২০১২ সালে আন্ড্রু স্ট্রাউস অবসর নেওয়ার পর যা সর্বোচ্চ। ভালো বোঝাপড়ার সুযোগ নিয়ে চলতি সিরিজে আরও একবার ইংল্যান্ডকে ভালো শুরু এনে দিয়েছেন ডাকেট-ক্রলি। আজকে ৮৯ রানের জুটি গড়ার আগে তাদের সর্বনিম্ন জুটি ছিল প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৫ রানের। ৮৯ রানের জুটিতে আজ ক্রলি ছিলেন অনেকটা দর্শকের ভূমিকায়, অশ্বিনের বলে আউট হয়েছেন ১৫ রান করে।

ক্রলিকে আউট করে ৫০০তম উইকেটটি পেয়েছেন অশ্বিন। লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে থেমেছেন ক্রলি। অনিল কুম্বলের পর ভারতের দ্বিতীয় স্পিনার হিসেবে ৫০০ উইকেট পেলেন অশ্বিন। সব মিলিয়ে ৫০০ উইকেট নেওয়া তিনি টেস্ট ইতিহাসের নবম বোলার। কুম্বলেও ৫০০তম উইকেট নিয়েছিলেন এই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, ২০০৬ সালে।

৫০০
অনিল কুম্বলের পর ভারতের দ্বিতীয় স্পিনার হিসেবে ৫০০ উইকেট অশ্বিনের

ম্যাচের হিসাবে ৫০০ উইকেট নেওয়ার ক্ষেত্রে অশ্বিন দ্বিতীয় দ্রুততম। তাঁর লাগল ৯৮ ম্যাচ। শীর্ষে থাকা শ্রীলঙ্কার স্পিন কিংবদন্তি মুত্তিয়া মুরালিধরন ৫০০ তম উইকেট পেয়েছিলেন ৮৭ ম্যাচে। সময়ের হিসাবে অশ্বিন তৃতীয় দ্রুততম। এ ক্ষেত্রে তাঁর ওপরে আছেন মুরালিধরন ও গ্লেন ম্যাকগ্রা।

ক্রলির বিদায়ে ডাকেটের সঙ্গী হন ওলি পোপ। ইনিংসটা বড় করতে পারেননি। তবে ৩৯ রান করে ইংল্যান্ডের রান তোলার গতি ধরে রেখেছেন। মোহাম্মদ সিরাজের বলে ৫৫ বলে ৩৯ রান করে এলবিডব্লু হয়েছেন পোপ। চলতি সিরিজে কিছুটা নিষ্প্রভ থাকা জো রুট ক্রিজে আসতেই ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা বল তুলে দেন যশপ্রীত বুমারকে। টেস্টে রুটকে ৮ বার আউট করেছেন বলে কথা! তবে আজ আর পারেননি। ক্রাম্পের কারণে তাঁকে বোলিং থেকে সরিয়ে নেন রোহিত। এরপর খেলাও হয়েছে মাত্র দুই ওভার।

এর আগে রোহিত ও জাদেজার শতকের সঙ্গে সরফরাজের দ্রুতগতির অর্ধশতকে প্রথম দিন ৫ উইকেট হারিয়ে স্বাগতিকেরা তোলে ৩২৬ রান। ভারত এর সঙ্গে আজ যোগ করতে পারে ১১৯ রান। ১১০ রান নিয়ে আজকের দিন শুরু করা জাদেজার এতে খুব একটা অবদান ছিল না।

আজ আর ২ রান করে রুটের বলে ফেরেন এই অলরাউন্ডার। ভারত এই রানটা তুলেছে অভিষিক্ত ধ্রুব জুরেলের ৪৬, অশ্বিনের ৩৭ আর বুমরার ২৬ রানের ইনিংসে ভর করে। প্রথম টেস্টে উইকেট না পাওয়া ইংলিশ পেসার মার্ক উড নিয়েছেন ৪ উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর (২য় দিন শেষে)

ভারত ১ম ইনিংস: ৪৪৫ (রোহিত ১৩১, জাদেজা ১১২, সরফরাজ ৬২; উড ৪/১১৪, রেহান ২/৮৫)

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২০৭/২ (ডাকেট ১৩৩*, পোপ ৩৯, রুট ৯*; অশ্বিন ১/৩৭, সিরাজ ১/৫৪)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.