পাঙাশ-তেলাপিয়াও এখন দামি, বেড়েছে মুরগির দাম

0
93

নিত্যপণ্যের অস্থির বাজারে কখন যে কোন জিনিসের দাম সামর্থ্যের নাগাল পেরিয়ে যায় তা বোঝা মুশকিল হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের কাছে। সপ্তাহ দুয়েক আগেও রাজধানীর বাজারগুলোয় যে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা; এখন তা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকায়। অনেক পাড়া-মহল্লায় ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হতেও দেখা গেছে। একইভাবে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে সোনালি জাতের মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩১০ টাকায়। ডিমের বাজারও ঊর্ধ্বমুখী। ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকা দরে। তবে এক হালি কিনতে গেলে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৫০ টাকা।

বাজারে মাছের সরবরাহও স্বাভাবিক। এরপরও এমন কোনো মাছ নেই, যার দাম বাড়েনি। ইলিশের গায়ে যেন হাতই দেওয়া যাচ্ছে না। সাধারণত স্বল্প আয়ের ক্রেতাদের ভরসা পাঙাশ, তেলাপিয়া, চাষের কৈ, সিলভার কার্প ও নলা (ছোট রুই) জাতীয় মাছ। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাঙাশের কেজি ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, মাঝারি আকারের তেলাপিয়ার কেজি ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মাস দেড়েক আগেও এ দুই জাতের মাছের দাম ছিল যথাক্রমে ১৮০ থেকে ২০০ এবং ২২০ থেকে ২২০ টাকা। এ ছাড়া দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে সিলভার কার্প ২০০ থেকে ২৬০ টাকা এবং নলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা দরে।

চাষের কৈ এবং শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ২৫০ থেকে ২৮০ এবং ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা দরে। এক মাসের ব্যবধানে মাঝারি আকারের রুই-কাতলা কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ৩৪০ থেকে ৪০০ টাকায়। বড় আকারের রুই-কাতলা ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাবদা, ট্যাংরা জাতীয় মাছের দামও বাড়তি। পাবদার কেজি মানভেদে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা এবং ট্যাংরা মাছের কেজি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

সাগরে ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। বাজারে বেড়েছে ইলিশের সরবরাহও। তবুও ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ১৩০০ থেকে ১৪০০ এবং এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকায়। মাঝারি আকারের চিংড়ি ৬০০ থেকে ৮০০ এবং বড় চিংড়ির কেজি ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী দুলাল চন্দ্র দাশ বলেন, বাজারে যেসব মাছ আসছে তার ৮০ শতাংশই চাষের। নদীর মাছ খুব কম। ভারত ও মিয়ানমার থেকেও মাছ আসছে। পাইকারিতে এখন সব মাছের দাম বাড়তি। ব্যবসার খরচও আগের তুলনায় বেশি। এ কারণে খুচরা পর্যায়ে দাম বেড়েছে।

ভারত চাল রপ্তানি বন্ধ করলেও দেশের বাজারে খুব বেশি প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। মোটা চালের দাম দুই সপ্তাহ আগেই কেজিতে ২ টাকার মতো বেড়ে ৫০ থেকে ৫২ টাকায় উঠেছিল। সে দাম এখনও বহাল। এ ছাড়া মাঝারি আকারের চাল ৫৪ থেকে ৫৮ এবং চিকন চালের কেজি ৬৫ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। তুলনামূলক স্থির আছে সবজির বাজার। বেশিরভাগ সবজি কেনা যাচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে। তবে করলা ও গাজরসহ কয়েকটি সবজির দাম দেখা গেছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা।

এদিকে কোরবানি ঈদ শেষ হলেও তেজ কমেনি মসলার। মাস খানেক আগে জিরার কেজি ছিল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে জিরার কেজি বিক্রি হয়েছে ১১৫০ থেকে ১২০০ টাকায়। লবঙ্গ, দারুচিনি এবং এলাচও বিক্রি হচ্ছে উচ্চমূল্যে। গত এক মাসে রসুনের দামও কেজিতে বেড়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। দেশি ও আমদানি করা রসুন ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে পেঁয়াজ ও আদার দাম গত সপ্তাহের মতো স্থিতিশীল আছে। দেশি পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭৫ এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.