দেশে বছরে যক্ষ্মায় ৪২ হাজার মানুষের মৃত্যু

0
159
যক্ষ্মায় ৪২ হাজার মানুষের মৃত্যু

দেশে মৃত্যুর সপ্তম প্রধান কারণ টিউবারকিউলোসিস বা যক্ষ্মা (টিবি)। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যক্ষ্মা রোধে বাংলাদেশ উল্ল্যেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। তবে এখনও রোগটিতে প্রতিবছর ৪২ হাজার মানুষ মারা যায়।

রোববার আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রের (আইসিডিডিআরবি) সাসাকাওয়া হলে আয়োজিত টিবি প্রাইভেট-পাবলিক মিক্স (পিপিএম) স্ট্যাক হোল্ডারসদের নিয়ে আয়োজিত এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ও টিবির প্রোগ্রাম পরিচালক ডা. আফজালুর রহমান এসব তথ্য তুলে ধরেন।

আলোচনায় তিনি বলেন, এসডিজি গোল অর্জনে ২০৩০ সালের মাঝে টিবির মৃত্যুহার ৯০ শতাংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। আর ২০৩৫ সালের মাঝে টিবির মৃত্যুহার ৯৫ শতাংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এ ছাড়া ২০২০ সালের মাঝে টিবিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২০ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। আর ২০২৫ সালের মাঝে টিবিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ শতাংশে কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

এ দিকে ২০২৫ সালের ৭৫ শতাংশ মৃত্যুহার কমিয়ে আনা ও ৫০ শতাংশ আক্রান্ত কমিয়ে আনার যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তা পূরণে হাতে আছে আর মাত্র ২ বছর। এই সময়ের মাঝে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আরো কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে বলে জানায় আলোচকরা।

তবে ২০২৫ সালের মাঝে টিবির মৃত্যুহার ৭৫ শতাংশে কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের। তবে ২০২০ সাল পর্যন্ত টিবির মৃত্যুহার পূর্বের তুলনায় কমিয়ে আনা হয়েছে ৩৫ শতাংশ। তবে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সময় বাকি আছে আর ২ বছর। এর মাঝে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কতটুকু সম্ভব হব তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

অনুষ্ঠানে দেওয়া তথ্য মতে, ২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী দেশে টিবি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩ লাখ ৭৫ হাজার। এদের মাঝে ৩ লাখ ৭ হাজার ৫৬১ জনকে শনাক্ত করা সম্ভব হলেও ৬৭ হাজার ৪৩৯ জন শনাক্তকরণ পরীক্ষায় অংশ নেননি। টিবি আক্রান্ত রোগীদের মাঝে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত পুরুষ ৫৪ শতাংশ। এ ছাড়া নারী আক্রান্ত হয়েছেন ৪৬ শতাংশ ও শিশু আক্রান্ত হয়েছে ৮ শতাংশ। এ ছাড়া ৪ হাজার ৫০০ জন রোগী মেডিসিন প্রতিরোধযোগ্য টিবিতে আক্রান্ত আছেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, প্রতি বছর ৩ লাখ যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত হয়। সরকার তাদের বিনামূল্য ওষুধ দেয়। ফলে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কমেছে। তবে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে আরও দূর যেতে হবে। এখানে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা রয়েছে। যারা প্রশাসনের দায়িত্বে আছে তাদের বুঝতে হবে স্বাস্থ্যের জন্য, চিকিৎসক স্বাস্থ্যকর্মীদের কী প্রয়োজন।

বিএমএ মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে সরকার একটি বড় সফলতা দেখিয়েছে। তবে সকল কৃতিত্বের দাবিদার এককভাবে সরকার নয়। সরকারি, বেসরকারি ও এনজিওগুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টায় এটা সম্ভব হয়ছে। আমরা প্রান্তিক পর্যায়ে সেবা পৌঁছাতে পেরেছি। ভারতের নোবেল বিজয়ী অমত্য সেন একবার বলেছিলেন, ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উচিত বাংলাদেশ ঘুরে আসা। বাংলাদেশ কীভাবে প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করছে, তা দেখে শেখার রয়েছে।

স্বাস্থ্যা বিভাগের দায়িত্বে চিকিৎসকদের রাখার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, চিকিৎসককে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন। এতে স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন হবে। যে বা যারা স্বাস্থ্যখাতের পরিকল্পনা করবেন তাদের এই বিষয়ে ভালো ধারণা থাকা প্রয়োজন। এখন পর্যন্ত আমরা যা পেয়েছি তা সম্পূর্ণই প্রাধানমন্ত্রীর কৃতিত্ব।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.