ঢাকা চিড়িয়াখানায় হায়েনার কামড়ে শিশুর হাত বিচ্ছিন্ন

0
106
ঢাকা চিড়িয়াখানা

ঢাকার মিরপুরে জাতীয় চিড়িয়াখানায় হায়েনার কামড়ে প্রায় দুই বছরের একটি শিশুর এক হাতের কনুই থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।

শিশুটিকে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) ভর্তি করা হয়েছে। সে এখন আশঙ্কামুক্ত বলে হাসপাতালের চিকিৎসক মানস দাস জানিয়েছেন। তিনি সন্ধ্যায় বলেন, কনুই থেকে হাত ছিঁড়ে যাওয়ায় শিশুটির রক্তপাত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে অস্ত্রোপচার করে ছিঁড়ে যাওয়া জায়গাটি যতটুকু পারা যায় ঠিক করার চেষ্টা করা হয়েছে।

শিশুটিকে নিয়ে তার মা–বাবা চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসেছিলেন বলে জানিয়েছেন শাহ আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, শিশুটির বাবা গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। স্ত্রী–মেয়েকে নিয়ে তিনি জয়দেবপুরে থাকেন। সকালে স্ত্রী ও মেয়ে ছাড়াও অন্য আত্মীয়স্বজন নিয়ে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসেছিলেন।

ঘটনার বিষয়ে জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, চিড়িয়াখানায় প্রাণীরা যেখানে থাকে, সেখানে একটি; এরপর আরেকটিসহ দুটি নিরাপত্তাবেষ্টনী দেওয়া থাকে। দর্শনার্থীরা দ্বিতীয় বেষ্টনীর বাইরে থেকে প্রাণী দেখেন। এ ঘটনায় শিশুটির সঙ্গে তার মা–বাবা ছিলেন। শিশুটি একপর্যায়ে প্রথম নিরাপত্তাবেষ্টনীর কাছে চলে যায় এবং বাইরে থেকে ডান হাত এগিয়ে দেয়। তার হাতের আঙুল হায়েনার খাঁচার ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়েছিল। তখনই ঘটনাটি ঘটে।

রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রাণীকে ঘিরে রাখা এ নিরাপত্তাবেষ্টনীর চারপাশে নেট দেওয়া রয়েছে। সোয়া এক ইঞ্চির নেটের ছিদ্র দিয়ে প্রায় দুই বছর বয়সী শিশুটির আঙুল ঢুকে গিয়েছিল। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে হায়েনা তার আঙুল টেনে ধরে। এতে শিশুটির কবজি পর্যন্ত হায়েনার মুখে ঢুকে যায়। তখন চিড়িয়াখানার নিরাপত্তাকর্মী বাইরে থেকে তার হাত ধরে টান দেন। এতে শিশুটির কনুই থেকে হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এখন তার ওই হাতের কনুই থেকে নেই।

জাতীয় চিড়িয়াখানার এই পরিচালক বলেন, ‘চোখের পলকে ঘটনাটি ঘটেছে। আমাদের অবহেলা ছিল বলতে পারছি না। তবে নিরাপত্তাবেষ্টনী আরও উঁচু করা প্রয়োজন, যাতে কেউ তা ডিঙিয়ে ভেতরে ঢুকতে না পারেন।’

এ ঘটনা খতিয়ে দেখতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকেও আলাদা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক যুগ্ম সচিব (প্রাণিসম্পদ–১) শাহীনা ফেরদৌসী বলেন, তিনি চিড়িয়াখানা এবং হাসপাতালে শিশুটিকে দেখতে গিয়েছিলেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে যতটুকু চিকিৎসা দরকার তা করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিভাবক না চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ, কার দোষ বা অবহেলা ছিল, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তদন্ত চলছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.