ডিম-মুরগির দাম বাড়তি, সবজিতে স্বস্তি

0
99
মূল্য বৃদ্ধি

ঈদের পর বাজার এখনো কিছুটা ঢিমেতালে চলছে। রাজধানীর দোকানপাট সেভাবে খোলেনি। বাজারে পণ্যের সরবরাহ কম, ক্রেতারাও বাজারমুখী হননি। এতে পচনশীল পণ্য সবজির দাম কমছে। রোজা শেষ হওয়ায় নতুন করে ডজনপ্রতি ডিমের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। আর মুরগির দাম আগেই বেড়ে আছে।

বাজারে চাল, ডাল, আটা-ময়দা, সয়াবিনের মতো নিত্যপণ্যের দাম কমেনি। উচ্চ মূল্যে স্থিতিশীল আছে। তবে চিনির বাজার নিয়ে দুশ্চিন্তা কাটছে না। বাজারে চিনির সরবরাহ কম, বিক্রি হচ্ছে আগের মতো বাড়তি দামে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালী, মগবাজার ও তেজগাঁওয়ের কলমিলতা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মগবাজার ও মহাখালী বাজারে অর্ধেকের মতো দোকান খুলেছে। কলমিলতা কাঁচাবাজারের প্রায় সব দোকান বন্ধ। দু-একটা দোকান খুলেছে। বাজারে ক্রেতাও খুব কম। এর মধ্যে বাজারে সবজির দামে বেশ স্বস্তি দেখা গেছে। দু-একটি বাদে অধিকাংশ সবজি এখন ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে।

বেলা ১১টায় মগবাজার ও দুপুর ১২টায় মহাখালী বাজারে করলা, ঢ্যাঁড়স, পটোল, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল ও ঝিঙে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা গেছে। রোজায় বেগুনের দাম বেশি থাকলেও এখন বেশ সস্তা। কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। টমেটোর কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। মাঝারি আকারের প্রতিটি লাউ ও চালকুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। সবজির মধ্যে কেবল কাঁকরোল ও শসার দাম বেশি। কাঁকরোল ১০০ থেকে ১১০ টাকা এবং শসা মানভেদে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মহাখালী বাজারের সবজি বিক্রেতা আবু বকরের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ঈদের সময় মানুষ সবজি কম কেনে। পচনশীল পণ্য হওয়ায় দামও কমে আসে। এ জন্য এখন সবজির বাজারে স্বস্তি আছে।

ঈদের আগে মুরগির দাম বেড়েছিল, এখনো সেই দামেই বিক্রি হচ্ছে। একটার দিকে মহাখালী বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি। আর সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকায়। ঈদের পর নতুন করে বেড়েছে ডিমের দাম। ফার্মের বাদামি রঙের ডিমের ডজন ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা এবং সাদা রঙের ডিম ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এই দুই পদের ডিমে ডজনে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। তবে হাঁস ও দেশি মুরগির ডিমের দাম বাড়েনি।

মগবাজারের খুচরা ডিম বিক্রেতা শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, রোজার পর ডিমের চাহিদা বাড়ছে, আবার সরবরাহ একটু কম। তাই পাইকারিতে দাম বেড়েছে। তার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তালিকা বলছে, ঢাকার বাজারে চিনির দাম সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি। সরকার খোলা চিনির দাম নির্ধারণ করেছে কেজি ১০৪ টাকা। সেই চিনি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২৫ টাকায়। আর প্যাকেটজাত চিনির কেজি ১০৯ টাকা সরকার বেঁধে দিলেও তা বাজার থেকে প্রায় উধাও।

টিসিবির হিসাবে বাজারে চাল, ডাল, আটা-ময়দা ও সয়াবিনের দামে কোনো পরিবর্তন নেই। তবে গত এক সপ্তাহে আলু, পেঁয়াজ, রসুন ও আমদানি করা আদার দাম বেড়েছে। টিসিবি বলছে, বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে।

গত এক মাসে দেশি রসুন ১৮ শতাংশ ও আমদানি করা রসুনের দাম বেড়েছে ৯ শতাংশ। আমদানি করা আদার দাম বেড়েছে ১৮ শতাংশ। টিসিবি বলছে, বাজারে প্রতি কেজি রুই মাছের দাম পড়ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা। গরুর মাংসের কেজি ৭৩০ থেকে ৭৫০ টাকা ও খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায়।

কলমিলতা বাজারের ক্রেতা সফুরা খাতুন বলেন, ‘ঈদের সময় মাছ-মাংস বেশি খাওয়া হয়েছে। আজ সবজি নিলাম। রোজার চেয়ে বেশ সস্তাই মনে হলো।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.