চীন সফরে গিয়ে বেইজিংয়ের সমালোচনায় মার্কিন অর্থমন্ত্রী

0
90
চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের (ডানে) সঙ্গে মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন। গ্রেট হল অব দ্য পিপল, বেইজিং, চীন, ৭ জুলাই/ছবি: রয়টার্স

বিরোধপূর্ণ সম্পর্কের উন্নয়ন কীভাবে করা যায় সেই লক্ষ্য নিয়ে চীন সফর করছেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন। কিন্ত বেইজিংয়ে গিয়ে চীনের সমালোচনা করতে দেখা গেল তাঁকে। তবে একই সঙ্গে তিনি এ–ও বলেছেন, কোনো এক পক্ষের সুবিধা নয়, সুস্থ প্রতিযোগিতা চায় ওয়াশিংটন।

সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু খনিজ পদার্থ রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করায় বেইজিংয়ের সমালোচনা করেন ইয়েলেন।

চার দিনের সফরে ইয়েলেন গতকাল বৃহস্পতিবার বেইজিং পৌঁছান। সেখানে যাওয়ার আগে তিনি বলেছিলেন, চীনের অসাধু বাণিজ্যচর্চার বিরুদ্ধে ওয়াশিংটন ও এর পশ্চিমা মিত্রদের পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।

সফরের দ্বিতীয় দিন আজ শুক্রবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিন পিংয়ের ঘনিষ্ঠ অর্থনীতিবিদ লিউ হি এবং দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিদায়ী গভর্নর ই গাংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বিভাগের কর্মকর্তাদের মতে, তাঁদের সঙ্গে ‘বিস্তর’ আলোচনা হয়েছে ইয়েলেনের।

আজ চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গেও বৈঠক করেন ইয়েলেন। চীনের প্রধানমন্ত্রীকে ইয়েলেন বলেন, স্বচ্ছ নীতি মেনে চীনের সঙ্গে সুস্থ (বাণিজ্য) প্রতিযোগিতা চায় যুক্তরাষ্ট্র, যাতে দুই দেশই লাভবান হবে। যুক্তরাষ্ট্র এমন কোনো প্রতিযোগিতা চায় না যেখানে কোনো এক পক্ষ সুবিধা নেবে।

ইয়েলেন বলেন, তাঁর এ সফর বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের মধ্যে আরও নিয়মিত যোগাযোগের পথ খুলে দেবে। তিনি বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় যেকোনো বিষয় লক্ষ্যবস্তু করে যুক্তরাষ্ট্রের গৃহীত পদক্ষেপ এই সম্পর্ককে অপ্রয়োজনীয়ভাবে বিপন্ন করবে না।

এদিকে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং ইয়েলেনকে বলেন, বৃহস্পতিবার তাঁকে বহনকারী উড়োজাহাজ যখন অবতরণ করে, তখন বেইজিংয়ের আকাশে একটি রংধনু দেখা যায়। সেই ভবিষ্যৎ যুক্তরাষ্ট্র–চীন সম্পর্কের জন্য আশার প্রতীক হয়ে এসেছে। লি বলেন, ‘ঝড়–বৃষ্টির বাইরে যুক্তরাষ্ট্র–চীন সম্পর্কে আরও অনেক কিছু আছে। আমরা হয়তো আরও আরও রংধনু দেখতে পাব।’

মার্কিন অর্থমন্ত্রীর সফর কেন্দ্র করে চীনের অর্থ মন্ত্রণালয়ও শুক্রবার একটি বিবৃতি দেয়। তাতে বলা হয়, সুস্থ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্কের উন্নয়নের একটি অনকূল পরিবেশ তৈরির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করছে চীন। বিরোধে কোনো পক্ষই লাভবান হবে না।

চীনে পরিচালিত মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর আশা, ভূরাজনৈতিক যত উত্তেজনাই থাকুক, ইয়েলেনের এই সফর যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্য সম্পর্কের পথ উন্মুক্ত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করবে।

তবে ইয়েলেনের সফরে দুই বৈরী দেশের সম্পর্কের বরফ কতটা গলবে তার আভাস এখনই পাওয়া যাচ্ছে না। ইয়েলেনের আগে সম্প্রতি চীন সফর করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। সম্পর্ক উন্নয়নে তিনি বেইজিং সফর করলেও এতে অগ্রগতি তো হয়নি, উল্টো তাঁর সফর শেষে চীনের প্রেসিডেন্টকে নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরূপ মন্তব্যে উত্তেজনা বাড়ে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.