আপত্তির মুখে আটকে গেল চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি

0
109
আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন

কয়েকজন সংসদ সদস্যের আপত্তির মুখে আটকে গেল চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন। তাঁদের আপত্তি আমলে নিয়ে নতুন করে কমিটি গঠন করে কেন্দ্রে পাঠাতে বলেছে দলের হাইকমান্ড। ওই সংসদ সদস্যদের অভিযোগ, কমিটিতে ত্যাগী নেতাদের সেভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি।

গত মে মাসে ৭৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে সেটির তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল। পাঠানো কমিটিতে সংসদ সদস্যদের পছন্দের নেতাদের সেভাবে মূল্যায়ন হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। অনেক সংসদ সদস্যের মতামত অগ্রাহ্য করা হয় বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কারণে সপ্তাহখানেক আগে কমিটি সংশোধন করে আবার দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে পাঠাতে বলা হয়।

জানতে চাইলে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দীন নদভী বলেন, ‘কমিটি নিয়ে চট্টগ্রামের কয়েকজন সংসদ সদস্য সংসদ অধিবেশন চলাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে গিয়েছিলেন।

ওই দিন আমি সংসদে ছিলাম না। হুইপ (সামশুল হক চৌধুরী), চন্দনাইশ ও বাঁশখালীর সংসদ সদস্য ছিলেন। পরে কী হয়েছে আমার জানা নেই।’

উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বরে সম্মেলনের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যথাক্রমে মোছলেম উদ্দিন আহমদ ও মফিজুর রহমানকে আবার একই দায়িত্ব দেওয়া হয়।

পরে গত ফেব্রুয়ারি মাসে মোছলেম উদ্দিন আহমদের মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে মনোনীত করা হয় সহসভাপতি মোতাহারুল ইসলাম চৌধুরীকে। তিনি ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান মিলে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজ শুরু করেন। এরপর মে মাসে ৭৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা কেন্দ্রে জমা দেন তাঁরা। এই কমিটি নিয়ে আপত্তি জানান সংসদ সদস্যরা।

পটিয়ার সংসদ সদস্য হুইপ সামশুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের চাওয়া, যাঁরা অতীতে নির্বাচনের বিরোধিতা করেছেন, বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন, তাঁরা যেন কমিটিতে না আসেন। কেন্দ্র থেকে কমিটি এখন সংশোধন করে আবার পাঠাতে বলেছে। দলের জন্য নিবেদিত, ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করে কমিটি পাঠাতে বলা হয়েছে।’

জানা গেছে, আগের কমিটিতে থাকা কয়েকজনকে নতুন কমিটির একই পদে বহাল রাখা হয়েছে। এ ছাড়া জ্যেষ্ঠ নেতাদের ডিঙিয়ে অনুজ কয়েকজনকে পদ দেওয়া হয়েছে। সহযোগী ও আওয়ামীপন্থী পেশাজীবী সংগঠনের দু-একজন ত্যাগী নেতাকে একেবারে বাদ দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। এসব বিষয় নিয়ে সংসদ সদস্যদের আপত্তি ছিল।

বিষয়টি স্বীকার করে চন্দনাইশ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘কমিটির বিষয়ে আমার সঙ্গে আগে থেকে কেউ কথা বলেনি। আমরা কয়েকজন এ নিয়ে হাইকমান্ডকে জানিয়েছি। পরে কমিটি সংশোধন করতে বলা হয়। এখন দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হজে রয়েছেন। তিনি এলে হয়তো তা করা হবে।’

প্রধানমন্ত্রীর কাছে সংসদ সদস্যদের অনুযোগের পর বিষয়টি দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে দেখতে বলা হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোতাহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘মফিজুর (সাধারণ সম্পাদক) দেশে ফিরলে আমরা সংশোধন করে দলের সাধারণ সম্পাদকের কাছে কমিটি পাঠিয়ে দেব।’

কমিটি যেহেতু হাতে আসেনি, তাই এ বিষয়ে মন্তব্য করা সমীচীন হবে না বলে উল্লেখ করেন চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.