মূল্যস্ফীতি কমাতে সুদের হার বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুল্লায়ে সেক। সেই সঙ্গে তিনি অর্থনীতির সংকট কাটাতে বিভিন্ন ধরনের সংস্কারের তাগিদ দিয়ে বলেন, বাংলাদেশকে বাজেট সহায়তা হিসেবে বিশ্বব্যাংক ৫০ কোটি ডলার দিচ্ছে, যা নিয়ে এখন কাজ চলছে।
বুধবার পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের সঙ্গে এক বৈঠকের পর আবদুল্লায়ে সেক সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। পরিকল্পনামন্ত্রীর রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর এ দেশের আর্থিক খাতে সংস্কারের তাগিদ দেন। তিনি মুদ্রা বিনিময় হার, মুদ্রানীতি, সুদের হার ইত্যাদি ক্ষেত্রে সংস্কারের পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি কমানোর কার্যকর উদ্যোগ নিতে বলেন।
আবদুল্লায়ে সেক বলেন, বাংলাদেশ কিছু সংস্কারকাজ করছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ ব্যাংক ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এটা ভালো। সুদের হারের ক্যাপ ধীরে ধীরে তুলে দেওয়া হচ্ছে। এসব সংস্কার অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি বলেন, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে।
এক প্রশ্নের জবাবে আবদুল্লায়ে সেক বলেন, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশকে বিভিন্ন প্রকল্পের বিপরীতে প্রায় ৪ হাজার কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। স্বল্প সুদের ঋণের পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন তহবিলসহ বিভিন্ন স্কিম থেকে আরও ঋণ নেওয়ার সুযোগ আছে বাংলাদেশের। দারিদ্র্য নিরসনে বাংলাদেশ ভালো করেছে। গত কয়েক বছরে প্রায় ১১ মিলিয়ন (১ কোটি ১০ লাখ) মানুষ দারিদ্র্যসীমার ওপরে উঠেছে। আরও ৫ মিলিয়ন (৫০ লাখ) মানুষ চরম দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে এসেছে।
এদিকে গত সেপ্টেম্বর মাসে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ হয়েছে, যা আগের মাস আগস্টে ছিল ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, ‘সেপ্টেম্বরে যে মূল্যস্ফীতি কমেছে, তাতে আমি সন্তুষ্ট নই। চলতি বছরের শেষ দিকে মূল্যস্ফীতি ৫-৬ শতাংশে নেমে এলে আমি খুশি হব।’
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। অনেক ক্ষেত্রে সংস্কার হচ্ছে, কিন্তু আরও করতে হবে।
এম এ মান্নান আরও বলেন, ‘আমরা ও বিশ্বব্যাংক উভয়েই মনে করি, আগামীর পরিবেশ অর্থাৎ নির্বাচনের পরিবেশ যদি ভালো থাকে, তাহলে উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। মানুষ যদি উন্নয়নের পক্ষে থাকে, তাহলে দেশ এগিয়ে যাবে।’
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে বলেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে প্রয়োজনে নিচের ৫ শতাংশ লোকের জন্য যেসব কর্মসূচি আছে, সেগুলো বাড়াতে হবে।