৫০ শতক জমি কিনে বানানো হয় জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

0
100
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার টাট্রিউলি গ্রামে ৫০ শতক জমি কিনে প্রশিক্ষণ শিবির তৈরি করে ‘ইমাম মাহমুদের কাফেলা’। সেই প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দিয়ে সশস্ত্র জিহাদে অংশ নিতে কথিত হিজরতের নামে নিজ নিজ বাসা ছাড়েন ওই শিবির থেকে গ্রেপ্তার হওয়া ১০ জন। সবাই ওই শিবিরে পৌঁছে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেছিলেন। ইমাম মাহমুদের অনুসারী জামিল ওই জমি কিনেছিলেন।

রোববার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান এসব তথ্য জানান।

এর আগে শনিবার মধ্যরাতে রাজধানীর মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. ফরহাদকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসি। ফরহাদ জিজ্ঞাসাবাদে জানান, কুলাউড়ায় একটি দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় কথিত ইমাম মাহমুদের নেতৃত্বে তার বেশ কিছু অনুসারী আস্তানা স্থাপন করেছেন।

ফরহাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ‘অপারেশন হিলসাইড’ পরিচালনা করে জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে জঙ্গি সন্দেহে ৪ পুরুষ ও ৬ নারীকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসি ইউনিট।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে আসাদুজ্জামান বলেন, পরকালীন পুরস্কার পাওয়ার কথা বলে ইমাম মাহমুদ মানুষকে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করতেন। লোকজনকে বলতেন, জিহাদের প্রস্তুতি গ্রহণের প্রথম ধাপ হলো গৃহ ত্যাগ; তথা হিজরত। তাই জিহাদের প্রস্তুতি গ্রহণের উদ্দশ্যে ইমাম মাহমুদের নেতৃত্বে সংগঠিত হওয়ার জন্য তাঁরা সবাই ঘটনাস্থলে জড়ো হয়েছিলেন।

সিটিটিসির ভাষ্য, সম্প্রতি যশোর, সিরাজগঞ্জ, জামালপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন বয়সী লোকদের পরিবারসহ ও পরিবারছাড়া নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে তথ্য পেয়ে এ–সংক্রান্ত অনুসন্ধান শুরু করে সিটিটিসি। এদের মধ্যে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানা থেকে চিকিৎসক সোহেল তানজীম রানা, যশোর থেকে ঢাকার নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী ফাহিম, জামালপুর থেকে এরশাদুজ্জামান শাহিনসহ আরও অনেকের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়।

এরই সূত্র ধরে অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে ৭ আগস্ট রাজধানীর গাবতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঝিনাইদহ, মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কথিত ইমাম মাহমুদের আহ্বানে হিজরতের নামে পরিবার ছেড়ে আসা ৬ জন নারীসহ ১০ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা আট শিশুকে হেফাজতে নেওয়া হয়।

সিটিটিসির প্রধান বলেন, ‘কুলাউড়ার আস্তানাটি দুই মাস আগে করা হয়েছিল। এজন্য ৫০ শতক জায়গা কেনা হয়েছিল। যার নামে ওই জমির দলিল করা হয়েছিল, সেই দলিলগ্রহীতার নামও আমরা পেয়েছি। তবে কত টাকা দিয়ে জমি কেনা হয়েছিল, সে বিষয়ে আমরা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। তাদের সদস্যদের জিহাদের জন্য যা যা করা প্রয়োজন ছিল, সবকিছুই ওই আস্তানা থেকে করা হতো।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সংগঠনটির নাম ইমাম মাহমুদের কাফেলা। এই নামেই তারা লোকজনদের উদ্বুদ্ধ করেছে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে জঙ্গিদের নাশকতার পরিকল্পনা রয়েছে কি-না জানতে চাইলে মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.