হৃদয়–শরিফুল–শামীমরাও এখন বাংলাদেশের ভরসা

0
100
তারুণ্যের তিন প্রতিনিধি তৌহিদ হৃদয়, শরিফুল এবং শামীম হোসেন

সেই দৃশ্যটা সবার মনে থাকার কথা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচটার একটা পর্যায়ে জয়ের জন্য বাংলাদেশ দরকার ছিল ১৭ বলে ১৮ রান। রশিদ খানের স্পেলের আর মাত্র পাঁচটি বল বাকি। এই ওভারটা বুঝেশুনে খেলে দিলেই হলো। বাকি বোলারদের দুই-একটি বাউন্ডারি মারতে পারলেই খেলা শেষ। যেকোনো হিসাবি ব্যাটসম্যানের চিন্তা তো এমনই উচিত। কিন্তু নাহ, সে সময় ক্রিজে থাকা শামীম হোসেন সেই ওভারেই রশিদকে স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হন। তিনি ভুলটা করার পরেই বাংলাদেশ আরও চারটি উইকেট হারায়। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ জিতেছে ঠিকই, কিন্তু তালগোল পাকিয়ে।

দলকে এমন অবস্থায় ফেলে দেওয়া নিয়ে কেউ কেউ হয়তো আক্ষেপ করতেন। কিন্তু শামীম সেই দলের নন। ম্যাচ শেষে তিনি বরং ওই বলটায় ছক্কা না মারতে পারার আক্ষেপে পুড়ছিলেন। দলের আরেক সদস্য গল্পটা শোনার পর হেসে উঠে বললেন, ‘ওর মাথা খারাপ। ও এভাবেই চিন্তা করে।’

টি-টোয়েন্টি খেলতে গেলে অবশ্য এমন পাগলামির দরকার আছে। এখানে শামীমের মতো ব্যাটসম্যান দরকার আছে, আছে তাওহিদ হৃদয়ের মতো হিসাবি ব্যাটসম্যানেরও। প্রথম ম্যাচটায় তাওহিদের ঝোপ বুঝে কোপ মারতে পারার দক্ষতাই তাঁকে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকতে সাহায্য করেছে।

আর ম্যাচটা শেষ করেছেন যিনি, সেই শরীফুল ইসলামের কথাটা না বললেই নয়। বল হাতে ১ উইকেট নেওয়ার পর তাঁকে ব্যাটিংয়ে নামতে হয় চূড়ান্ত চাপের মুহূর্তে। কিন্তু এই পেসার তা তোয়াক্কা না করে প্রথম বলেই চার মেরে নিশ্চিত করেন বাংলাদেশের জয়।

হৃদয়-শরীফুলের সেই বুনো উদ্‌যাপনের ছবিটা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এই তিন তরুণ ক্রিকেটারই ২০২০ সালে বিশ্বকাপ জয়ী অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সদস্য। একসঙ্গে বয়সভিত্তিক দলে খেলার যে রসায়ন, তা স্বাভাবিকভাবেই জাতীয় দলে বয়ে এনেছেন। শুধু এই ত্রয়ী নয়, হাসান মাহমুদ ও আফিফ হোসেন একই সঙ্গে খেলেছেন ২০১৮ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে। মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাজমুল হোসেন ২০১৬ সালের ব্যাচ।

শরিফুলের উল্লাস
শরিফুলের উল্লাস

একটি মিল নিশ্চয়ই খুঁজে পাচ্ছেন। ২০০৬ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলা ক্রিকেটারদের একটা দল দীর্ঘদিন বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলেছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেটটা পরের ধাপে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।

সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল ছিলেন সে দলে। কাল শরীফুল বিসিবির এক ভিডিও বার্তায় বলছিলেন, ‘খুব ভালো লাগে যখন সাকিব ভাই, মুশফিক ভাই, তাসকিন ভাইদের মতো খেলোয়াড়দের সঙ্গে আমরা খেলি। অনূর্ধ্ব-১৯ খেলে আসার পর জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ হতো। এখন আমরা তিনজন আছি এই টি-টোয়েন্টি দলে। আমরা অনেকটা বন্ধুর মতো। আর সিনিয়ররাও আমাদের খুব কাছে টেনে নিয়েছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.