শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক ও সহপাঠীদের গুলি শিক্ষার্থীর, নিহত ৯

0
86
শ্রেণিকক্ষ থেকে বেঁচে ফেরা এক শিশু মাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ে, ছবি: রয়টার্স

দক্ষিণ–পূর্ব ইউরোপের দেশ সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে ১৪ বছরের এক কিশোর শ্রেণিকক্ষে তার শিক্ষককে গুলি করেছে। এরপর সে কক্ষের অন্য শিক্ষার্থীদের ওপরও গুলি ছোড়ে। এ সময় এক নিরাপত্তারক্ষী এগিয়ে এলে তিনিও রেহাই পাননি। এতে আট শিক্ষার্থী ও এক নিরাপত্তারক্ষী নিহত হন।

আজ বুধবার সকালে ভ্লাদিস্লাভ রিবনিকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে বলে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, সপ্তম শ্রেণির ওই হামলাকারী শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ওই শ্রেণিকক্ষের এক শিক্ষার্থীর বাবা মিলান মিলোসেভিক টেলিভিশন চ্যানেল এন১কে বলেন, ঘটনার সময় তাঁর মেয়ে ওই শ্রেণিকক্ষে ছিল। সে (মেয়ে) সেখান থেকে পালাতে সক্ষম হয়। সে বলেছে, (হামলাকারী)…প্রথমে শিক্ষককে গুলি করে। এরপর এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে।

ঘটনার পর স্কুলটির ঘেরাও করে রাখে পুলিশ
ঘটনার পর স্কুলটির ঘেরাও করে রাখে পুলিশ, ছবি: রয়টার্স

স্কুলটি ভ্রাকার জেলায় অবস্থিত। এ ঘটনায় জেলার মেয়র মিলান নেদেলজকোভিচ বলেন, চিকিৎসকেরা ওই শিক্ষককে বাঁচাতে লড়ে যাচ্ছেন। আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই শিক্ষকের সঙ্গে আরও ছয় শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মিলান মিলোসেভিক ঘটনার পরপরই স্কুলে ছুটে আসেন। তিনি বলেন, ‘আমি দেখলাম নিরাপত্তারক্ষীর দেহ টেবিলের নিচে পড়ে আছে। আরও দুটি মেয়েশিশু পড়ে ছিল। তাদের জামায় রক্তের দাগ ছিল। হামলাকারী ছেলেটি সম্প্রতি তাদের  ক্লাসে যোগ দিয়েছে। তারা (শিক্ষার্থীরা) বলেছে, সে শান্ত ও ভালো ছাত্র।’

ঘটনার পর হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ ভেস্ট পরা পুলিশ সদস্যরা স্কুল এলাকাটি ঘিরে রাখেন।

সপ্তম শ্রেণির ওই হামলাকারী শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে মুখ ঢেকে নিয়ে যায় পুুলিশ
সপ্তম শ্রেণির ওই হামলাকারী শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে মুখ ঢেকে নিয়ে যায় পুুলিশ, ছবি: রয়টার্স

ভ্লাদিস্লাভ রিবনিকার স্কুলটির সংলগ্ন একটি উচ্চবিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল আরটিএসকে বলে, ‘আমি দেখলাম বাচ্চারা স্কুল থেকে ছুটে আসছে, চিৎকার করছে। যেসব বাবা-মা এসেছিলেন, তাঁরা আতঙ্কিত ছিলেন। পরে আমি তিনটি গুলির শব্দ শুনতে পাই। ’

পুলিশের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, হতাহতদের চিকিৎসা চলছে। এবং হামলার কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

সার্বিয়ায় এ ধরনের গুলির ঘটনা তুলনামূলক খুবই কম। কারণ, দেশটিতে বন্দুক আইন খুবই কঠোর। কিন্তু ১৯৯০–এর দশকে দেশটির যুদ্ধ ও অস্থিরতার পর সেখানে লাখ লাখ অবৈধ অস্ত্র রয়ে যায়। এসব অবৈধ অস্ত্র হস্তান্তর বা নিবন্ধন করতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে মালিকদের বেশ কয়েকবার সুযোগ দিয়েছে সার্বিয়ান কর্তৃপক্ষ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.