শ্রম অধিকার রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের নীতি ইস্যুতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি ওয়াশিংটন দূতাবাসের

0
82
বাংলাদেশি নারী শ্রমিক। ছবি: বিবিসি

বিশ্বজুড়ে শ্রম অধিকার রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতি বা দিকনির্দেশনা ঘোষণার পরে ওয়াশিংটনে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে একটি চিঠি পাঠিয়েছে। এতে জানানো হয়েছে, শ্রম অধিকার রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের নীতি বা দিকনির্দেশনা ঘোষণার আওতায় দেশটির বাণিজ্য ও ভিসা নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য হতে পারে বাংলাদেশ।

চিঠিটি গত ২০ নভেম্বর পাঠানো হয় বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। তবে এটি ওয়াশিংটন দূতাবাস থেকে কোনো সতর্কতা নয় বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ। আজ বুধবার দেশের একটি ইংরেজি জাতীয় পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘এটি একটি স্বাভাবিক যোগাযোগ।’

শ্রম অধিকার রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতি এবং দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের বক্তব্যের বিষয়টি জানিয়ে ওয়াশিংটন দূতাবাস বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে (সাধারণ যোগাযোগ কার্য হিসেবে) এই চিঠি দিয়েছে বলে উল্লেখ করেন বাণিজ্যসচিব।

গত ১৬ নভেম্বর ব্লিংকেন বিশ্বজুড়ে শ্রম অধিকার রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতি বা দিকনির্দেশনা ঘোষণা করেন। সে সময় তিনি জানান, বিশ্বজুড়ে শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা, শ্রমিক অধিকারের পক্ষের কর্মী, শ্রমিক সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে যে বা যারা হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করবে, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনবে যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে বাণিজ্য, ভিসা নিষেধাজ্ঞাসহ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে যত ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে, তা প্রয়োগ করা হবে।

বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করার প্রত্যয় নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ১৬ নভেম্বর প্রথমবারের মতো একটি মেমোরেন্ডামে স্বাক্ষর করেন। বিষয়টিকে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছে হোয়াইট হাউস। এ মেমোরেন্ডাম স্বাক্ষরের পরে সানফ্রান্সিসকোর একটি হোটেলে শ্রমিক নেতাদের সামনে এর বিস্তারিত তুলে ধরেন ব্লিংকেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেনের বক্তব্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং প্রবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনায় এসব শ্রমিকের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, বিশ্বের অনেক স্থানে শ্রমিকদের এ সুযোগ দেওয়া হয় না। শুধু তাই নয়, কিছু স্থানে শ্রমিকদের মানসম্পন্ন জীবনযাপনকেও অস্বীকার করা হয়, তাদের হয়রানি করা হয় এবং ক্ষতি করা হয়। এমনকি তাদের অধিকার চাইতে গেলে হত্যার শিকার হতে হয়। শ্রমিক ইউনিয়ন গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে, তারা বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বস্ত বন্ধু। আর এ কারণে যুক্তরাষ্ট্র তাদের রক্ষায় এগিয়ে এসেছে, শুধু যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে নয়, বিশ্বব্যাপী।

এ সময় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, আমরা বাংলাদেশি গার্মেন্ট ও অধিকারকর্মী কল্পনা আক্তারের মতো মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই।

এদিকে, শ্রম অধিকার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্মারকে শ্রমিকদের অধিকার হরণ করলে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞাসহ নানা নিষেধাজ্ঞা কোন মানদণ্ডের ভিত্তিতে দেওয়া হবে, তা গভীরভাবে পর্যালোচনা করছে বাংলাদেশ সরকার।

সরকারের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের রোডম্যাপ অনুযায়ী ৯০ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। সম্প্রতি পোশাক শিল্পে ন্যূনতম মজুরি নিয়ে বিশৃঙ্খলা দেখা দিলেও তাতে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তবে বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছেন। রপ্তানিকারকদের মধ্যেও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। কেননা, বাংলাদেশের একজন শ্রমিক অধিকারকর্মীকে উদাহরণ হিসেবে সামনে আনা হয়েছে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.