শুটিংবাড়িতে বিস্ফোরণে গুরুতর অগ্নিদগ্ধ: সংগঠনে অভিযোগ করে ৯ মাসেও বিচার না পাওয়ায় ক্ষোভ অভিনেত্রীর

0
106
অভিনেত্রী শারমিন আঁখি, ছবি: সংগৃহীত

গত ২৮ জানুয়ারি মিরপুরের একটি শুটিংবাড়িতে বিস্ফোরণে গুরুতর দগ্ধ হয়েছিলেন অভিনেত্রী শারমিন আঁখি। সেদিনই তাঁকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেই বিস্ফোরণে আঁখির হাত, পা, চুলসহ শরীরের ৩৫ শতাংশ পুড়ে যায়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, আইসিইউ থেকে ফেরার সম্ভাবনা ৩০ ভাগ। সেই আঁখি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দুই মাস হাসপাতালে সংগ্রাম করেন। পরে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। ৯ মাস ধরে তিনি সুস্থ হওয়ার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু দীর্ঘ এই সময়ে সংগঠনের কাছে অভিযোগ করে এ অভিনেত্রী কোনো বিচার পাননি। ডিরেক্টরস গিল্ড ও অ্যাক্টর ইকুইটির সদস্যদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছিল বলে জানান আঁখি। কিন্তু গত ৯ মাসে সেই কমিটির কাজের অগ্রগতি না পেয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করলেন।

শারমিন আঁখি অগ্নিদগ্ধের পর চিকিৎসা ও বিশ্রামের পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে যাওয়ার চেষ্টা করছেন, সীমিত পরিসরে বাসা থেকে বেরোচ্ছেন। সহকর্মীসহ অনেকের সঙ্গে কথা হচ্ছে। তাঁরা কেউ কেউ তাঁকে প্রশ্ন করছেন, ‘ঘটনার পরে কেন অভিযোগ করেননি, করলে তো আপনি ন্যায়বিচার পেতেন।’

৯ আগস্ট শারমিন ছবিটি পোস্ট করে লিখেছিলেন, ‘পুরো পৃথিবীই একটা আগুন।’
৯ আগস্ট শারমিন ছবিটি পোস্ট করে লিখেছিলেন, ‘পুরো পৃথিবীই একটা আগুন।’ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

এ নিয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাসে আঁখি লিখেছেন, ‘আমি অভিযোগ করিনি এটা ভুল তথ্য। আমি যখন হাসপাতালে তখন আমার পরিবার তো সংগঠনে গিয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সংগঠনে হাজির করেছে। তাঁর সামনে একটা কমিটি গঠন করা হয়েছে। বাকি দায়িত্ব তো ওই কমিটি আর সংগঠনের। এখন সংগঠনের কাজ যে অন্যায় হয়েছে, তার দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহিতা তৈরি করা। এটা কি আমার কাজ? নাকি এখন প্রতি পদে এই জবাবদিহি আমাকেই করতে হবে? তাহলে নিজেদের দায় এড়াতে আমাকে কেন অভিযুক্ত করছেন, আমার পরিবার সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি?’

দুর্ঘটনার পরে ক্ষতিপূরণ চেয়েও এই অভিনেত্রী কোনো মামলা করেননি। এসব নিয়ে কেউ কেউ কথা বলছেন। কিন্তু ক্ষতিপূরণের চেয়ে তরুণ এ অভিনেত্রী চেয়েছেন অভিনয়শিল্পীদের স্বার্থে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনা।

অভিনেত্রী শারমিন আঁখি
অভিনেত্রী শারমিন আঁখি, ছবি: ফেসবুক

শুটিং ইউনিটের পরিবেশ ঠিক হোক। তিনি লিখেছেন, ‘আমার ছবিটার দিকে তাকিয়ে বলেন তো ক্ষতিপূরণ দিয়ে আমার ক্ষতি পোষাতে পারবেন কেউ? সেই ক্ষমতা কি এই সমাজের আছে? আমাকে এমন লোভী বানানোর অধিকার কে দিয়েছে আপনাদের? ডিরেক্টরস গিল্ড এবং অ্যাক্টর ইকুইটি মিলে একটা কমিটি গঠন করেছে। আজকে তো ৯ মাস। কোথায় সেই কমিটি? এখন কি তাদের পেছনে কী হলো ভাই…? কী করলেন…? অগ্রগতি কী…? বলতে হবে আর ঘুরতে হবে। দেন আপডেট দেন কী করলেন এই ৯ মাসে?’ স্ট্যাটাসে তিনি জানিয়েছেন, ওই কমিটিতে ইমরাউল রাফাত, ইমেল হক, ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর, মাহমুদ নিয়াজসহ আরও বেশ কজন।

ছবিটি আজ পোস্ট করেছেন এই অভিনেত্রী। ছবি: ফেসবুক

আঁখি ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও লিখেছেন, ‘সংগঠনের কাজ কি শুধু বিচার–আচার করা? নাকি সংগঠনের কাজ শিল্পী–কলাকুশলীদের কাজের পরিবেশ সুন্দর করাও। আমার কাজের পরিবেশ সুন্দর ছিল না। কাজের ক্ষেত্র অনিরাপদ ছিল। জীবনের নিরাপত্তা ছিল না। এগুলো ঠিক করেন। শুটিং হাউস মালিককে ডেকে জবাবদিহির আওতায় আনেন। না হলে শুটিং হাউসে কালকে আরও দু–চার শিল্পী মরুক, কেউ আগুনে পুড়ে, কেউ ছাদ থেকে পড়ে, কিংবা শুটিংয়ের ভারী লাইট মাথায় ভেঙে মরুক, দু–একটা বিগ শট মরুক। তখন হয়তো সংগঠনের টনক নড়বে। তারপর দেখি সংগঠন কী করে…!’ ক্ষোভ হলেও মন থেকে কথাগুলো লেখেননি এই অভিনেত্রী।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.