শিগগিরই যুগপৎ কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি

0
111
বিএনপি।

শিগগিরই যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি। তবে সে কর্মসূচি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আন্দোলনের এ পর্যায়ে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার বেড়ে যাওয়া এবং বিভিন্ন মামলায় নেতাদের সাজার রায়ের প্রেক্ষাপটে এবার থানা-পুলিশ ও আদালতকেন্দ্রিক কর্মসূচি আসতে পারে। এই কর্মসূচি হতে পারে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে এবং আদালত চত্বরে অবস্থান। একই সঙ্গে কর্মসূচিতে পেশাজীবীদের সক্রিয় করার উপায় নিয়েও ভাবা হচ্ছে।

তবে নতুন করে যৌথ কর্মসূচি শুরু করার লক্ষ্যে যুগপৎ আন্দোলনে যুক্ত থাকা বিভিন্ন দল ও জোটের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করছে বিএনপি। ইতিমধ্যে গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২-দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও গণ অধিকার পরিষদের (নুরুল হক) সঙ্গে বৈঠক হয়েছে।

এসব বৈঠকে নেতাদের কাছ থেকে নতুন কর্মসূচির ব্যাপারে প্রস্তাব চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে পরবর্তী পর্যায়ের আন্দোলনের কর্মকৌশলের বিষয়েও ধারণা নেওয়া হচ্ছে। এই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর শিগগিরই নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।

আমরা যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সঙ্গে আলোচনা করছি। এটি এখন শেষ পর্যায়ে। শিগগিরই নতুন কর্মসূচি আসবে, সেটি প্রক্রিয়াধীন আছে।’আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও লিয়াজোঁ কমিটির নেতা

অবশ্য কবে নাগাদ নতুন কর্মসূচি আসবে, তা নিশ্চিত করতে পারেননি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও লিয়াজোঁ কমিটির নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমরা যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সঙ্গে আলোচনা করছি। এটি এখন শেষ পর্যায়ে। শিগগিরই নতুন কর্মসূচি আসবে, সেটি প্রক্রিয়াধীন আছে।’

বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে শরিক দলগুলোর একাধিক দায়িত্বশীল নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৈঠকগুলোতে অনেকে গত ২৯ জুলাই ঢাকার চার প্রবেশমুখে বিএনপির সমন্বয়হীন অবস্থান কর্মসূচি নিয়ে কথা তোলেন। তবে এ বিষয়ে বিএনপির নেতারা কথা না বাড়িয়ে সমন্বয়হীনতার কথা স্বীকার করেন এবং সামনের দিনে এ বিষয়ে সতর্ক হওয়ার আশ্বাস দেন।

এ ছাড়া শরিক দলগুলোর কোনো কোনোটির কাছ থেকে ভবিষ্যতে আন্দোলনের বিশেষ মুহূর্তে কর্মসূচির সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ শরিকদের যুক্ত করা বা সময়মতো অবহিত করার পরামর্শ এসেছে। একই সঙ্গে মাঠের পরিস্থিতি বুঝে মাঠের নেতাদের দিয়েই কর্মসূচি প্রণয়নের পরামর্শও এসেছে। কোনো কোনো দল ও জোটের নেতারা যুগপৎ আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামীকে কাছে টানার প্রস্তাব করে বিএনপিকে উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।

গণতন্ত্র মঞ্চের একজন নেতা বলেন, ‘আমরা বলেছি, বাইরে থেকে সব সময় মাঠের প্রকৃত অবস্থা বোঝা সম্ভব হয় না। সে জন্য কর্মসূচির সমন্বয় মাঠের নেতাদেরই করতে হবে। না হয় চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে যেকোনো ভুল সিদ্ধান্ত বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে এবং পুরো আন্দোলনকেই নিঃশেষ করে দিতে পারে।’

নতুন করে যৌথ কর্মসূচি শুরু করার লক্ষ্যে যুগপৎ আন্দোলনে যুক্ত থাকা বিভিন্ন দল ও জোটের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করছে বিএনপি। ইতিমধ্যে গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২-দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও গণ অধিকার পরিষদের (নুরুল হক) সঙ্গে বৈঠক হয়েছে।

বিএনপির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগস্ট মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে তাঁরা জোরালো কর্মসূচিতে যাবেন। এর আগে জেলা, মহানগর ও বিভাগীয় শহর পর্যায়ে কর্মসূচি পালন করবেন।

এর মধ্যে বিক্ষোভ সমাবেশ, পদযাত্রার কর্মসূচি থাকতে পারে। এর পাশাপাশি সারা দেশে নেতা-কর্মীদের গণহারে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে জেলা প্রশাসক বা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে এবং পুরোনো ‘মিথ্যা’ মামলায় ‘অন্যায়ভাবে’ নেতাদের দণ্ড দেওয়ার প্রতিবাদে আদালত প্রাঙ্গণে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে পারে।

গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জনগণ এখন একত্র, সব রাজনৈতিক দল আজকে এক হয়ে গেছে। যারা যুগপৎ আন্দোলন করছে তারা, যারা যুগপৎ আন্দোলন করছে না, তারাও। সবার এক কথা, ভোটের আগে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.