রেকর্ড পানি ছাড়ল ভারত, তিস্তা পাড়ে বন্যার শঙ্কা

গজলডোবা ব্যারেজ

0
108
২০২১ সালের অক্টোবরে তিস্তা ব্যারেজে হঠাৎ পানি বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের অনেক গ্রাম তলিয়ে গিয়েছিল। বিবিসির ফাইল ছবি

তিস্তার গজলডোবা ব্যারেজ দিয়ে বাংলাদেশের দিকে রেকর্ড পরিমাণ পানি ছেড়েছে ভারত। আজ শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে বিকেল চারটার মধ্যে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২ লাখ ১ হাজার ৬৪৭ কিউসেক এবং সর্বনিম্ন ১ লাখ ৬৯ হাজার ৮৪৮ কিউসেক পানি বাংলাদেশের দিকে ছাড়া হয়েছে। এতে বন্যার আশংকা করা হচ্ছে বাংলাদেশের তিস্তা সংলগ্ন এলাকায়।

পশ্চিমবঙ্গ সেচ দপ্তরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সেচ অধিদপ্তর তিস্তা সংলগ্ন ভারতের সংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সর্তকতা জারি করা হয়েছে। আর দোমহনী থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত সংরক্ষিত এলাকায় জারি করেছে লাল সতর্কতা।

এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সিকিম, দার্জিলিং ও পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের জেলাগুলোতে চলছে ভারী বৃষ্টি। তিস্তা সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গের উত্তর জেলা জলপাইগুড়িতে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ১৪৩ মিলি এবং শিলিগুড়িতে বৃষ্টি হয়েছে প্রায় ২২৩ মিলি লিটার।

বন্যা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র জানিয়েছে, সমতলের তুলনায় পাহাড়ে বৃষ্টির পরিমাণ আরও বেশি। ফলে উত্তরের নদনদী ও পাহাড়ি ঝোরাগুলোতে দেখা দিয়েছে অপ্রত্যাশিত হড়পা বান, যা ব্যারেজ দিয়ে আটকে রাখা বা সাময়িক সময়ের জন্য ঠেকিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়।

অন্যদিকে, পাহাড়ে প্রবল বর্ষণের জেরে দার্জিলিংয়ের পাঠাবংয়ে ভূমিধসে একজনের মৃত্যু হয়েছে। জানা গেছে, শুক্রবার সকালে তকবরের পাঠাবংয়ের ডান্ডা গ্রামে একটি বাড়ি ধ্বসের কবলে পড়ে। পুলিশ ও ফায়ার ব্রিগেডের উদ্ধারকারী দল দীর্ঘসময় উদ্ধার কাজ চালিয়ে বাড়ির মালিক বাবুরাম রাইয়ের মরদেহ উদ্ধার করে।

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে

নীলফামারী ডিমলার ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি আবারও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট (স্লুইসগেট) খুলে রাখা হয়েছে।

শুক্রবার সকাল ৯টায় ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমা বরাবর প্রবাহিত হচ্ছিল। দুপুর ১২টায় বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বিকেল তিনটায় বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক নুরুল ইসলাম বলেন, আগামী কয়েক ঘণ্টায় পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।

এদিকে, তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে ডিমলা উপজেলা ঝাড়সিংহেস্বর, কালীগঞ্জ, ছোটখাতা, কিছামত ছাতনাই, খোগার চর, জুয়ার চর, ছাতুনামা, ভেন্ডাবাড়ী, পূর্ব বাইশপুকুর ও জলঢাকা উপজেলার শৌলমারী, গোলমুন্ডাসহ প্রায় ১৫টি চর এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

ডালিয়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদৌলা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে তিস্তা অববাহিকার বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। পানি আরও বৃদ্ধি পাওয়ায় আশঙ্কা রয়েছে।

শুভজিৎ পুততুন্ড, কলকাতা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.