রাশিয়ার জব্দ হওয়া সম্পদ থেকে ইউক্রেনকে অর্থ দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন

0
103
যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পতাকা, রয়টার্স ফাইল ছবি

ইউরোপীয় কমিশন (ইসি) জানিয়েছে, তারা রাশিয়ার জব্দ করা অর্থ থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের উন্নয়নে ব্যয়ের কথা চিন্তা করছে। তবে তারা জব্দ হওয়া অর্থই সরাসরি দেবে না। রাশিয়ার জব্দ হওয়া অর্থ বিনিয়োগ করে যে আয় হবে, তা থেকে প্রতিবছর ইউক্রেনকে সহযোগিতা করা হবে। আর রাশিয়ার জব্দ হওয়া মূল অর্থ ভবিষ্যতে তাদের ফেরত দেওয়া যেতে পারে বলেও জানিয়েছে ইসি। খবর সিএনএন ও রাশিয়া টুডের।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শীর্ষ সম্মেলনে সংস্থাটির ইইউ দেশগুলোর নেতারা অংশ নেন। সেখানেই এমন প্রস্তাব আসে। এর আগে যুক্তরাজ্য আর যুক্তরাষ্ট্রও একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে।

বিশ্বব্যাংক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের যে ক্ষতি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে দেশটির কমপক্ষে ৪১১ বিলিয়ন বা ৪১ হাজার ১০০ কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন হবে। সে জন্য যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ ও তাদের মিত্ররা রাশিয়ার কাছ থেকে কোনোভাবে এই অর্থ আদায়ের ব্যবস্থা করতে চাইছে।

ইইউর সম্মেলনে গতকাল বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্রু বলেছেন, রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বছরে ৩০০ কোটি ইউরো (৩৩০ কোটি মার্কিন ডলার) রাজস্ব আয় করতে পারবে। এই অর্থ ইউক্রেনের সহায়তার জন্য দেওয়া হবে।

আলেকজান্ডার ডি ক্রু আরও বলেন, ‘আলোচ্য ইস্যুতে বেলজিয়াম খুব বেশি জড়িত। কারণ, রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদের প্রায় ৯০ শতাংশই বেলজিয়ামে রয়েছে। এখন এই সম্পদ ব্যবহার করে আমরা অতিরিক্ত আয়ের দিকে মনোযোগ দিতে পারি। তাতে বছরে ৩০০ কোটি ইউরো আমরা ইউক্রেনকে দিতে পারব।’

ইউরোপীয় কমিশনের তথ্য অনুসারে, রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রায় ২০০ বিলিয়ন বা ২০ হাজার কোটি ইউরোর সম্পদ এবং প্রায় ২৪ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৪০০ কোটি ইউরোর ব্যক্তিগত তহবিল অচল তথা জব্দ অবস্থায় রয়েছে। জব্দ হওয়া অর্থের বেশির ভাগই বেলজিয়ামভিত্তিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইউরোক্লিয়ারের কাছে রয়েছে।

গত বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করে রাশিয়া। এরপর ইইউ ও গ্রুপ অব সেভেনভুক্ত দেশগুলো রাশিয়ার ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এ সময় তারা রাশিয়ার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের প্রায় অর্ধেক সম্পদ জব্দ করে।

তবে ইইউর কিছু সদস্যরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি) এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, এ ধরনের যেকোনো উদ্যোগ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রিজার্ভ মুদ্রা হিসেবে ইউরোর ওপর আস্থা কমিয়ে দিতে পারে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইইউর একজন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক বলেন, ‘আমাদের আন্তর্জাতিক আইনের নীতিগুলোকে সম্মান করতে হবে।’

এদিকে ইউক্রেনের পুনর্গঠন ও পুনরুদ্ধার কাজে সহায়তার জন্য ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এই ঋণের জামিনদার হবে জাপান সরকার। আজ শুক্রবার এই ঋণের কথা জানায় বিশ্বব্যাংক।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.