রায়ে অসন্তুষ্ট সগিরার পরিবার, যাবেন উচ্চ আদালতে

0
47
সগিরা মোর্শেদ সালাম

পারিবারিক দ্বন্দ্বে তিন যুগ আগে সগিরা মোর্শেদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় দুইজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাদেরকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করেছেন আদালত। আর মামলায় অপর তিন আসামিকে মামলা থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে। এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে উচ্চ আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সগিরা মোর্শেদের পরিবার।

বুধবার (১৩ মার্চ) ঢাকার বিশেষ দায়রা জজ মোহাম্মদ আলী হোসাইন এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সগিরা মোর্শেদের ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরীর শ্যালক আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান ও মারুফ রেজা। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদেরকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করেছেন আদালত। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- সগিরার ভাশুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী ও তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহীন।

নিহত সগিরা মোর্শেদের স্বামী সালাম মোর্শেদ বলেন, ‘৩৪ বছর পরে যে রায় দিয়েছেন বিচারক, তাতে আমি সন্তুষ্ট। তবে পুরোপুরিভাবে সন্তুষ্ট হতে পারছি না। আসামি মন্টু মন্ডল বাদে অপর দুই আসামির খালাসের আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবো।’

মেয়ে সামিয়া সারওয়াত চৌধুরী বলেন, ‘তিন দশক ধরে ঘটনাটি চাপা দিয়ে রেখেছিল। তারপরও যদি এমন স্বাভাবিক সাধারণ একটা রায় হয়, তাহলে তো বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা হারিয়ে যাবে। মানুষ বিচার ব্যবস্থার প্রতি বিশ্বাস করবে। সেটা তো হতে পারে না। এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট না। আমরা অবশ্যই উচ্চ আদালতে আপিল করবো।’

মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই সগিরা মোর্শেদ ভিকারুননিসা নূন স্কুল থেকে মেয়েকে আনতে যাচ্ছিলেন। বিকেলে সিদ্ধেশ্বরী রোডে পৌঁছালে মোটরসাইকেলে আসা ব্যক্তিরা তার হাতের সোনার চুড়ি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তখন তিনি দৌড় দিলে তাকে গুলি করা হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই সগিরা মোর্শেদ মারা যান। ওই ঘটনায় রমনা থানায় মামলা করেন সগিরা মোর্শেদের স্বামী সালাম চৌধুরী।

২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। ছিনতাই নয়, মূল পরিকল্পনা ছিল সগিরাকে হত্যা।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, সগিরা মোর্শেদের পরিবারের সঙ্গে আসামি শাহীনের বিভেদ তৈরি হয়েছিল। এ ছাড়া শাশুড়ি সগিরাকে অপছন্দ করতেন এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে সগিরা-শাহীনের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। এসব নিয়ে আসামিরা নিজেদের বাসায় বসে সগিরাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত সগিরা মোর্শেদের ভাসুরসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর মধ্যদিয়ে দীর্ঘ ৩১ বছর পর এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু হয়। মামলাটিতে ৫৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.