রাফাহ সীমান্তে হাজার হাজার বিপন্ন মানুষ

0
86
রাফাহ সীমান্ত দিয়ে দেশ ছাড়তে চান গাজার বাস্তুহারা মানুষ।

ইসরাইলের বিমান হামলা থেকে বাঁচতে ফিলিস্তিনের গাজা ছাড়ার এখন একমাত্র পথ মিশর সংলগ্ন রাফাহ সীমান্ত। এই সীমান্ত পয়েন্টে জড়ো হয়েছেন গাজার হাজার হাজার মানুষ। সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতির সময় এই সীমান্ত সাময়িকভাবে পুনরায় চালু করা হবে এমন আশায় সোমবার সকালে হাজার হাজার বাস্তুহারা মানুষ রাফাহ সীমান্তে ছুটে যান। ইসরায়েলের স্থল অভিযান শুরুর আগে এই সীমান্ত দিয়ে গাজা ছাড়ার জন্য তারা সেখানে পৌঁছেন। এটি খুলে দেওয়ার ব্যাপারে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালুর আলোচনা চলছে। যদিও ইসরায়েল ও হামাস উভয় পক্ষ এ ধরনের কোনো চুক্তির কথা অস্বীকার করেছে।

ইসরায়েলকে দুষছে মিসর: তবে জাতিসংঘ বলেছে, সীমান্ত ক্রসিং পুনরায় খুলে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনায় কোনো অগ্রগতি হয়নি। আর মিসর এজন্য ইসরায়েলকে ‘সহযোগিতা না করার’ জন্য দায়ী করেছে। গত ৭ অক্টোবর হামাসের রকেট হামলার পর ইসরায়েল বিমান হামলা শুরু করার পর গাজা থেকে বেরিয়ে আসার সব পথ বন্ধ রয়েছে। এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো সোমবার ইসরায়েল সফরে যান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। এই অঞ্চলের ছয়টি আরব দেশ সফরের পর তিনি মানবিক সহায়তা সরবারহ ও বিদেশি পাসপোর্টধারীদের সরিয়ে নিতে সীমান্তটি পুনরায় খুলে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করতে ইসরাইলে রয়েছেন।

ব্লিঙ্কেন ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র সচিব জেমস ক্লিভারলি দুজনই বলেছেন, তারা রাফাহ সীমান্ত আবার চালু করতে ইসরায়েল, মিশর ও অন্যান্য নেতৃস্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে কাজ করছেন। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজা অবরোধ করায় হামাস-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে অন্যান্য প্রবেশপথগুলো বন্ধ রয়েছে। হামাসের হামলার জবাবে গাজায় বিমান হামলা শুরু করার আগে পানি, খাদ্য ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয় ইসরাইল।

প্রবেশের অনুমতির অপেক্ষায় জ্বালানি-ত্রাণবাহী গাড়ি: গাজায় মানবিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় জ্বালানি ও ত্রাণসামগ্রী বহনকারী বেশ কিছু গাড়ি রাফাহ ক্রসিংয়ের মিশর সীমান্তের দিকে অবস্থান করছে। এসব গাড়ি সীমান্ত দিয়ে প্রবেশের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করছে। তবে ইসরায়েল বলছে, হামাস ইসরায়েলের জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে। ইসরায়েলের দাবি, গাজায় ১৯৯ জনকে আটকে রাখা হয়েছে।  হামাসের হামলার পর ইসরাইলের বিমান হামলায় গাজায় প্রায় ২ হাজার ৫০ জন মারা গেছে। ১০ লাখের বেশি মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বাড়িঘর ছেড়েছেন।

মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শউকরি বলেন, গাজায় ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের দুর্ভোগ কমানো খুবই জরুরি। এ বিষয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। কায়রো গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের জন্য মানবিক সহায়তা পাওয়ার দিকে মনোনিবেশ করছে। মিশর চিকিৎসা সেবা পৌঁছানো এবং কিছু গাজাবাসীকে প্রবেশের অনুমতি দিতে পারে।

 বিদেশি নাগরিকদের রাফাহ ক্রসিংয়ে যাওয়ার পরামর্শ: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশ তাদের নাগরিকদের রাফাহ ক্রসিংয়ের দিকে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। সীমান্তটি পুনরায় খোলার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

যদিও বিদেশি পাসপোর্টধারীদের বের হওয়া এবং মানবিক সাহায্যের অনুমতির জন্য রাফাহ সীমান্ত পুনরায় খোলার জন্য মিশর প্রস্তুত বলে মনে হচ্ছে, তবে যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসা ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতির আশঙ্কাও করছে দেশটি।

ফিলিস্তিনিদের দেশত্যাগ গ্রহণযোগ্য নয়: মিশর ও অন্যান্য আরব রাষ্ট্রগুলো বলছে, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের দেশত্যাগ গ্রহণযোগ্য হবে না। কারণ এটি তাদের ভূমি থেকে বিতাড়নের সমান হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.