রফিকুল আলমকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ, তিন দিনের কর্মসূচি বিএনপির

0
131
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনু

দলের নেতা রফিকুল আলমকে (মজনু) গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশসহ তিন দিনের কর্মসূচি দিয়েছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি। আজ সোমবার দুপুরে নয়াপল্টনে নেতারা জরুরি বৈঠক করে এই কর্মসূচি নিয়েছেন। কর্মসূচি হলো আজ ২২ মে ও আগামী ২৪ মে বুধবার মহানগর দক্ষিণের সব থানা ও ওয়ার্ডে বিক্ষোভ মিছিল এবং ২৭ মে শনিবার সমাবেশ।

আজকের বৈঠক শেষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। গতকাল রোববার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে রফিকুল আলমের শাহজাহানপুরের বাসার নিচ থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে নয়াপল্টনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এর আগে রফিকুল আলমসহ নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন রুহুল কবির রিজভী।

পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, রফিকুল আলম রাত পৌনে ১২টার দিকে বাসায় ফেরেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন আগে থেকেই তাঁর বাসার নিচে অবস্থান করছিলেন। তিনি বাইরে থেকে ফেরামাত্র বাসার নিচ থেকে পুলিশ তাঁকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। প্রথমে তাঁকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

রফিকুল আলমের ছোট ভাই বদরুল আলম আজ সকালে বলেন, রাত ১২টার দিকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ভাইকে তুলে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তারা বলেছে, সকালে ডিবি অফিসে যেতে। তিনি জানান, বেলা ১১টা পর্যন্ত তাঁকে ডিবি অফিসে রাখা হয়েছে।

ডিবির মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার রাজীব আল মাসুদ আজ বলেন, বিএনপির ওই নেতাকে মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

বিএনপির ঢাকা মহানগর নেতা রফিকুল আলমকে গ্রেপ্তার

সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশে মিথ্যা ও গায়েবি মামলার হিড়িক পড়েছে। বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি বাতিল করতে সরকার গায়েবি মামলা, মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার এবং নির্বিচার গুলি চালিয়ে অসংখ্য মানুষকে হত্যা, অন্ধ ও পঙ্গু করে যাচ্ছে। গতকাল রাতে মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলমকে তুলে নিয়ে গেছে গোয়েন্দা পুলিশ। কিন্তু পুলিশ তাঁকে আটকের কথা এখন পর্যন্ত স্বীকার কিংবা তাঁর কোনো হদিস দিচ্ছে না।

রিজভী বলেন, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সবার সামনে থেকে মজনুকে তুলে নিয়ে গেছে। তাঁকে ডিবি কার্যালয়েই রাখা হয়েছে। কিন্তু তারা এখনো স্বীকার করছে না। এ ঘটনায় মজনুর পরিবার ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা শঙ্কিত। মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন নম্বর-৪৫২৩/২০২১–এর আদেশ এখনো বলবৎ রয়েছে।

উক্ত আদেশে কোনো উপযুক্ত আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়া রফিকুল আলমকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করতে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এই নির্দেশনাও রয়েছে, যেন সুনির্দিষ্ট মামলা ছাড়া অনিষ্পন্ন মামলায়ও তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো না হয়।

রিজভী অভিযোগ করেন, ঢাকা মহানগরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাসায় বাসায় পুলিশ হানা দিচ্ছে। গত কয়েক দিন ধরে খুলনা, পটুয়াখালী, ফরিদপুর, নেত্রকোনা, ফেনীসহ বেশ কিছু জেলায় বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশসহ আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সহিংস আক্রমণ চালিয়েছে। এ ছাড়া যশোর, সিলেট, ঝিনাইদহ ও রাজশাহীতে নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গ্রেপ্তার, তল্লাশি, আসবাবপত্র ভাঙচুর করছে।

পরোয়ানা ছাড়াই রফিকুল আলমকে গ্রেপ্তার করার অভিযোগ ফখরুলের

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহপ্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল আলম, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস প্রমুখ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.