যুক্তরাষ্ট্র থেকে দীর্ঘ মেয়াদে এলএনজি আমদানি হবে

0
111
তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি

তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ১৫ বছর মেয়াদি চুক্তি স্বাক্ষর করবে বাংলাদেশ। এ জন্য সে দেশের কোম্পানি এক্সিলারেট গ্যাস মার্কেটিং পার্টনারশিপের সঙ্গে চুক্তি করার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

এলএনজি আমদানির দরও চূড়ান্ত হয়েছে। বর্তমানে শুধু কাতার ও ওমান থেকে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় এলএনজি আমদানি হয়। তৃতীয় দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে ১৪ হাজার ৩৬৫ কোটি টাকার মোট ২৪টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে। বৈঠক শেষে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান।

তিনি বলেন, এক্সিলারেট গ্যাস মার্কেটিং পার্টনারশিপের কাছ থেকে ১৫ বছর মেয়াদে এলএনজি আমদানিতে চুক্তি করবে পেট্রোবাংলা; যা কার্যকর হবে ২০২৬ সাল থেকে। চুক্তির আওতায় ২০২৬ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত বছরে সাড়ে ৮ লাখ টন এলএনজি সরবরাহ করবে প্রতিষ্ঠানটি। ২০২৮ থেকে ২০৪০ সাল পর্যন্ত বছরে এলএনজি সরবরাহ হবে ১০ লাখ টন। এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দামের ১৩ দশমিক ৩৫ শতাংশের সঙ্গে ৩০ সেন্ট যুক্ত করে এলএনজির দাম নির্ধারণ করা হবে।

এ বিষয়ে জ্বালানি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় এলএনজি আমদানি করলে দাম কম হয়। গতকালের বৈঠকে স্পট মার্কেটের আওতায় সিঙ্গাপুরের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিটের (এমএমবিটিইউ) দাম পড়ছে ১৭ দশমিক ৫৫ ডলার। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় এক্সিলারেটের সঙ্গে যে দর চূড়ান্ত হয়েছে, সে হিসাবে প্রতি এমএমবিটিইউর দাম পড়ত প্রায় ১৪ ডলার। সিঙ্গাপুরভিত্তিক ভিটল এশিয়া থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানিতে মোট ব্যয় হবে ৭৬২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর একই প্রতিষ্ঠান থেকে একই পরিমাণ এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। তখন প্রতি এমএমবিটিইউ ১৪ দশমিক ৯৭ ডলার দরে এক কার্গোর দাম ধরা হয় ৬৪৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

এদিকে মহেশখালীতে বিদ্যমান এলএনজির রিগ্যান ক্যাপাসিটি ৫০০ থেকে ৬০০ এমএমসিএফডি বাড়াতে এক্সিলারেট এনার্জি বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তিসংক্রান্ত একটি প্রস্তাবও গতকাল অনুমোদন করা হয়। এ ছাড়া অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ২০২৪ সালের জন্য সৌদি আরব এবং আবুধাবি থেকে ১৫ লাখ টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্রয়ের নীতিগত নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।

রাশিয়া থেকে আসছে সার

এদিকে রাশিয়া থেকে ৩০ হাজার টন মিউরেট অব পটাশ বা এমওপি সার কিনতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। এতে মোট খরচ হবে ১০৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। প্রতি কেজির দাম পড়বে ৩৫ টাকা ৫৩ পয়সা। প্রতি টনের দাম ধরা হয়েছে ৩২৩ ডলার। একই সঙ্গে শিল্প মন্ত্রণালয়ের তিনটি পৃথক প্রস্তাবে ৬০ হাজার টন ইউরিয়া এবং ২৫ হাজার টন রক ফসফেট সার কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট খরচ হচ্ছে ৩৬৪ কোটি ৩৫ লাখ ৩২ হাজার ৫০০ টাকা।

অন্যান্য প্রস্তাব

খাদ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১৬৪ কোটি ৭৪ লাখ ৯৯ হাজার টাকায় সিঙ্গাপুরের এগ্রিকর্প ইন্টারন্যাশনালের কাছ থেকে ৫০ হাজার টন গম আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে। এ হিসাবে প্রতি কেজি গমের দাম পড়ছে ৩৩ টাকা। টিসিবির জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ৬৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকায় শবনম ভেজিটেবল অয়েলের কাছ থেকে ৬ হাজার টন মসুর ডাল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রতি কেজির দাম পড়ছে ১১০ টাকা ৯৭ পয়সা। এ ছাড়া টিসিবির জন্য পৃথক দুটি প্রস্তাবে ১৫৬ টাকা ২৫ পয়সা লিটার দরে ৪০ লাখ লিটার রাইস ব্র্যান এবং ১৫৬ টাকা ৩৮ পয়সা দরে ৮০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়। রাইস ব্র্যান তেল কিনতে ৬২ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং সয়াবিন তেল কিনতে ১২৫ কোটি ১০ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের ‘প্রযুক্তির সহায়তায় নারীর ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের জন্য ওয়ালটনের কাছ থেকে ২৫ হাজার ১২৫টি ল্যাপটপ ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১৬৫ কোটি ১ লাখ ৩৪ হাজার টাকা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.