মোদির মুখে রা নেই, মণিপুরে যাচ্ছেন রাহুল

0
101
রাহুল গান্ধী ।

প্রায় দুই মাস ধরে ভারতের উত্তর–পূর্বের রাজ্য মণিপুর অগ্নিগর্ভ। রাজ্য ভ্রমণ তো দূরের কথা, পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি। একবারের জন্যও উদ্বেগ প্রকাশ করেননি। নিহত-আহত ব্যক্তিদের জন্য দুঃখ প্রকাশও নয়। তবে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী মণিপুর যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কাল বৃহস্পতিবার তিনি উপদ্রুত এই রাজ্যে যাবেন দুই দিনের সফরে।

গত মঙ্গলবার এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল রাহুলের মণিপুর সফরের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলেন, রাহুল সেখানে ঘরছাড়া মানুষদের আশ্রয় শিবিরগুলোয় যাবেন। রাজ্যের বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে তোলার চেষ্টা চালাবেন। দিন কয়েক আগে সোনিয়া গান্ধীও মণিপুরবাসীর উদ্দেশে এক বার্তা দিয়েছিলেন। হিংসা ছেড়ে শান্তির পথে ফিরে আসার আবেদন জানিয়েছিলেন।

দুই মাসের হিংসা মণিপুরে প্রায় গৃহযুদ্ধের রূপ নিয়েছে। নিহত মানুষের সংখ্যা দেড় শ ছুঁই ছুঁই। আহত সহস্রাধিক। শয়ে শয়ে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে–পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সম্পত্তির ক্ষতির পরিমাণ কত, কোনো আন্দাজ নেই। ৫০ হাজারের বেশি মানুষ শরণার্থীশিবিরে বসবাস করছে।

মণিপুর হাইকোর্ট সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতিদের তফসিল জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার প্রশ্নটি রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দেওয়ার পরই হিংসাত্মক ঘটনার শুরু। সেই থেকে সমতলের ‘হিন্দু’ মেইতি ও পাহাড়ের ‘খ্রিষ্টান’ কুকিদের মধ্যে যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে, তা কীভাবে দূর করে শান্তি ফেরানো যায়, সেই হদিস রাজ্য সরকার এখনো পায়নি। দাবি উঠেছে রাষ্ট্রপতির শাসন জারির। কিন্তু বিজেপি–শাসিত রাজ্যকে রাষ্ট্রপতির শাসনের আওতায় আনতে সরকার নারাজ। এ অবস্থায় শান্তির বার্তা নিয়ে রাহুল দুই দিনের সফরে মণিপুর যাবেন ঠিক করেছেন। বেণুগোপাল টুইট করে জানিয়েছেন, মণিপুরের মানবিক সংকটে ভালোবাসার শক্তি হয়ে ওঠা কংগ্রেসের দায়িত্ব।

এই টালমাটাল অবস্থায় রাজ্য সরকারের এক নির্দেশ নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। সরকারি কর্মীদের বলা হয়েছে, কাজে যোগ না দিলে তাঁদের বেতন কাটা হবে। এই ফরমান নতুন সমস্যা ও অশান্তির জন্ম দিয়েছে। জনজাতিরা সরকারের এই নির্দেশকে অমানবিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেছে।

একই ধরনের ফরমান জম্মু-কাশ্মীরের ‘পণ্ডিত’দের উদ্দেশেও জারি করা হয়েছিল। যেসব পণ্ডিত সরকারি কর্মী, উপত্যকা ছেড়ে জম্মুতে চলে এসেছিলেন, তাঁদের বলা হয়েছিল, কাজে যোগ না দিলে বেতন কাটা যাবে। রাজ্যের বিজেপি নেতাদের তীর বিরোধিতার মুখে ওই নির্দেশ সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়।
রাহুল মণিপুর যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও সেখানে তিনি কতটা খোলামেলা ঘোরার অনুমতি পাবেন, সে বিষয়ে কংগ্রেস চিন্তায় রয়েছে। দল মনে করছে, কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক বিজেপি এমন কোনো সুযোগ রাহুলকে দিতে চাইবে না, যাতে রাজনৈতিকভাবে তাদের আরও অসুবিধের মধ্যে পড়তে হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.