ভারতে আবার পেগাসাস বিতর্ক, দুই সাংবাদিকের ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগ

0
76
কিয়েভের একটি গুদামে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন একজন ফায়ারম্যান। ছবি: বিবিসি থেকে নেওয়া

ভারতে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে পেগাসাস বিতর্ক। ইসরায়েলি সংস্থা এনএসওর তৈরি ফোনে আড়ি পাতা প্রযুক্তি ‘পেগাসাস’–এর মাধ্যমে দুই বিশিষ্ট ভারতীয় সাংবাদিকের ওপর ভারত সরকারের নজরদারি চালানোর নতুন অভিযোগ এসেছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তদন্তের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন পোস্ট–এর এক প্রতিবেদনে এই দাবি করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত সরকার এখনো এভাবে নজরদারির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই দুই ভারতীয় সাংবাদিক হলেন ‘দ্য ওয়্যার’ পোর্টালের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক সিদ্ধার্থ বরদারাজন এবং অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্ট প্রজেক্টের (ওসিসিআরপি) দক্ষিণ এশিয়া সম্পাদক আনন্দ মঙ্গনালে।

গত অক্টোবর থেকে ওই দুই সাংবাদিকের আইফোনে ‘অ্যাপল’ থেকে বারবার সতর্কবার্তা আসছিল। তারপর তাঁরা তাঁদের ফোন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের কাছে পরীক্ষার জন্য পাঠান। ফরেনসিক পরীক্ষার পর অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানায়, তাঁদের ফোনে পেগাসাস-এর মাধ্যমে নজরদারি চালানো হচ্ছে।

দুই বছর আগে ২০২১ সালে পেগাসাস মারফত ভারতের রাজনীতিক, সাংবাদিক, আন্দোলনকর্মী, বিচারপতিসহ বহু মানুষের ফোনে প্রথম আড়ি পাতার অভিযোগ উঠেছিল। সে সময় সরকার জানিয়েছিল, আইন ভেঙে কিছুই তারা করেনি। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছিল। সর্বোচ্চ আদালত তদন্তের জন্য এক উচ্চপদস্থ কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই কমিটির সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার সহযোগিতা করেনি। কমিটি নিজেই সেই অসহযোগিতার কথা জানিয়েছিল।

সরকার সুপ্রিম কোর্টকে বলেছিল, দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে তারা এই বিষয়ে কিছু বলতে পারবে না। এমনকি এনএসওর সঙ্গে পেগাসাস প্রযুক্তি নিয়ে চুক্তি হয়েছিল কি না, কিংবা ওই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে কি না, সে বিষয়েও সরকার কিছু জানাতে অস্বীকার করেছিল। এবার নতুন করে সেই বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছে।

এনএসও সংস্থা বারবার জানিয়েছে, তারা ওই প্রযুক্তি সরকার ছাড়া আর কারও কাছে বেচে না।

নতুন এই অভিযোগ নিয়ে ভারতের তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী রাজিব চন্দ্রশেখর ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে গত বৃহস্পতিবার লিখেছেন, ‘প্রতিবেদনটি পুরোপুরি তথ্যনির্ভর নয়। অর্ধতথ্যের সমাহার। এবং পুরোপুরি সাজানো।’

রাজিব চন্দ্রশেখর লিখেছেন, সতর্কবার্তা সম্পর্কে ৩১ অক্টোবর অ্যাপল যা জানিয়েছিল, ওই প্রতিবেদনে তা লেখা হয়নি। তারা বলেছিল, কোন বিশেষ রাষ্ট্রীয় সংস্থা আড়ি পাতছে, তা তারা জানায় না। কোনো কোনো সতর্কবার্তা মিথ্যাও হয়। কখনো কখনো তা ধরাও যায় না। ওই ধরনের সতর্ক বার্তা কেন দেওয়া হয়, সব সময় তা বলাও যায় না। কারণ, রাষ্ট্রীয় দুর্বৃত্তরা সজাগ হয়ে যায়।

মন্ত্রী বলেন, কেন ওই সতর্কবার্তা এবং তাদের ফোনে আড়ি পাতা যায় কি না, তা অ্যাপলই বলতে পারবে। ভারত সরকারের তদন্তে যোগ দিতে অ্যাপলকে বলা হয়েছিল। তারা বৈঠকও করেছে। তদন্ত চলছে। সত্য এটুকুই। প্রতিবেদনের বাকিটা কল্পনাপ্রসূত।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.