ভারতীয় কোম্পানির অর্থ জব্দ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, সন্দেহ রাশিয়া–সংযোগ

0
119
ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া

রাশিয়ার একটি বড় হীরার কোম্পানির সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বিভাগ দুটি ভারতীয় কোম্পানির ২ কোটি ৬০ লাখ ডলার জব্দ করেছে বলে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে। তিনটি ভারতীয় সূত্র বার্তা সংস্থাকে জানিয়েছে, ওই অর্থ মুক্ত করার জন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষ যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করেছে।

রাশিয়ার ওই কোম্পানিটির নাম আলরোসা, যেটির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এর সঙ্গে ভারতীয় ওই দুই হীরা কোম্পানির বাণিজ্য–সংযোগ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

মার্কিন অর্থ বিভাগের অফিস অব ফরেন অ্যাসেট কন্ট্রোল (ওএফএসি) নিষেধাজ্ঞার বিষয়গুলো দেখাশোনা করে। তারা চলতি বছরের আরও আগে ওই অর্থ জব্দ করে বলে দুটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে। এই সূত্রগুলো ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তা, যারা বিষয়টির স্পর্শকাতরতার কারণে নিজেদের পরিচয় বা কোম্পানি দুটির নাম প্রকাশ করতে রাজি হয়নি।

গত বছর রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরু করার পর ভারতীয় কোনো ব্যবসার বিরুদ্ধে ওএফসিএর পক্ষ থেকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে এই প্রথম জানা গেল। ইউক্রেন আক্রমণ করার পর রাশিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলো নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

অজ্ঞাত ওই ভারতীয় কোম্পানিগুলোর সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক ইউনিটগুলো যখন অমসৃণ হীরা কেনার জন্য অর্থ স্থানান্তর করার চেষ্টা করছিল, তখন মার্কিন অর্থ বিভাগের বিদেশি সম্পদসংক্রান্ত ওই দপ্তর সেই অর্থ জব্দ করে। রয়টার্স অবশ্য নিশ্চিত হতে পারেনি যে ওই অর্থ আলরোসা নাকি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করা হচ্ছিল।

ভারতের একটি সরকারি সূত্র বলেছে, ‘সরকার ওএফএসির পদক্ষেপ সম্পর্কে জ্ঞাত রয়েছে এবং এ ব্যাপারে আলোচনা শুরু করেছে। সমস্যাটি হলো, আলরোসার সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহ করা হচ্ছে।’

সূত্রগুলো জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট ভারতীয় কোম্পানিগুলো সরকারকে বলেছে যে ওই অর্থ পরিশোধ করার বিষয়ে দুটির যেকোনো একটি ঘটনা ঘটতে পারে—হয় নিষেধাজ্ঞার আওতায় নেই রাশিয়ার এমন প্রতিষ্ঠানকে অর্থ দেওয়া হচ্ছিল অথবা গত বছরের এপ্রিলে আলরোসার ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার আগেই হীরা কেনার আদেশ দেওয়া হয়েছিল।

রাশিয়ার রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত আলরোসা বিশ্বের সবচেয়ে বড় অমসৃণ হীরা উৎপাদনকারী কোম্পানি। মন্তব্যের জন্য রয়টার্স তাদের কাছে ই–মেইল পাঠালেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। ভারতের বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং মার্কিন অর্থ বিভাগও কোনো মন্তব্য জানায়নি।

ভারত হীরা প্রক্রিয়াজাত করার সবচেয়ে বড় সক্ষমতা গড়ে তুলেছে। এ বছর মার্চে শেষ হওয়া অর্থবছরে দেশটি যে পরিমাণ মসৃণ হীরা রপ্তানি করেছে, তার মূল্য ছিল ২ হাজার ২০০ কোটি ডলার। ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটে বেশির ভাগ হীরার কারখানা অবস্থিত।

এসব কারখানা হীরা প্রক্রিয়াজাত করার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত, বেলজিয়াম ও রাশিয়ার মতো দেশ থেকে মূলত অমসৃণ হীরা আমদানি করে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.