বড় বড় ঘটনার ফাঁসি কার্যকর করা জল্লাদ শাহজাহান মুক্তি পেলেন

0
99
কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর বেরিয়ে আসছেন শাহজাহান ভূঁইয়া (সাদা প্যান্ট ও শার্ট পরিহিত

এ পর্যন্ত ২৬ জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছেন তিনি। অন্তত কারাগারের রেকর্ড তাই বলে। যদিও শাহজাহান ভূঁইয়ার দাবি, তিনি ৬০ জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছেন। হত্যা ও অস্ত্র মামলায় তাঁর ৪২ বছরের সাজা হয়েছিল। ফাঁসি কার্যকর ও অন্যান্য কারণে তাঁর সাজার মেয়াদ কমিয়ে করা হয়েছে ৩২ বছর। তাঁর সাজার মেয়াদ আজ রোববার শেষ হলো।

আজ দুপুর প্রায় ১২টার দিকে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন শাহজাহান ভূঁইয়া।

শাহজাহান ভূঁইয়া যাঁদের ফাঁসি কার্যকর করেছেন, তাঁদের মধ্যে আছে বঙ্গবন্ধুর ছয় খুনি, জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লা, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, মীর কাসেম আলী ও জেএমবির দুই জঙ্গি আছেন।

আজ কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে কারাফটকের সামনে শাহাজাহান ভূঁইয়া বলেন, ‘আমার খুব ভালো লাগছে। আমার এক বোন আছে। তাকে কখনো দেখিনি। কিন্তু ফোনে কথা হয়েছে। সে আমাকে কোনো দিন দেখতেও আসেনি।’

শাহজাহান ভূঁইয়ার জন্ম ১৯৫০ সালের ২৬ মার্চ নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ইছাখালী গ্রামে। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ করে স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। নথি অনুসারে, ১৯৯২ সালের ৮ নভেম্বর ডাকাতির জন্য ১২ বছর এবং ১৯৯৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর অপর একটি মামলায় ডাকাতি ও হত্যার জন্য ৩০ বছরের কারাদণ্ড হয় তাঁর। এ ছাড়া উভয় রায়ে তাঁকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড হয়।

অস্ত্র ও হত্যা মামলায় ৪২ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত শাহজাহানের সাজা কমে ৩২ বছর হয়েছে। এখন শাহজাহানের বয়স ৭৩ বছর। তিনি বিয়ে করেননি। আজ তাঁর আগের এক কারাসঙ্গীর বাড়িতে যাচ্ছেন। সেখানে আপাতত কয়েক দিন থাকবেন।

আজ মুক্তি পাওয়ার পর শাহজাহান ভূঁইয়া বলেন, তাঁর থাকার কোনো জায়গাও নেই। বাড়িঘর কিছু নেই। তাই সরকার যেন তার একটা ব্যবস্থা করে, এ দাবি তাঁর।

আজ শাহজাহান ভূঁইয়া মুক্তি পাওয়ার আগে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে জেলার মাহবুবুল ইসলাম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, তাঁদের রেকর্ড অনুযায়ী দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত শাহজাহান ভূঁইয়া। একটি ডাকাতি করতে গিয়ে হত্যা মামলা এবং আরেকটি অস্ত্র আইনে মামলা। এ দুটি মামলায় ১৯৯১ সালের ১৭ মে থেকে কারাগারে আছেন। দুই মামলায় তাঁর সাজা হয়েছিল ৪২ বছর।

মাহবুবুল ইসলাম বলেন, কারা রেকর্ড অনুযায়ী ২০০১ সাল থেকে ২৬ জনের ফাঁসি কার্যকর করেছেন। যদিও তিনি দাবি করেছেন, তিনি ৬০ জনের ফাঁস দিয়েছেন।

জেলার মাহবুবুলের তথ্যানুযায়ী, ৪২ বছরের সাজার মধ্যে প্রতি ফাঁসির জন্য দুই মাস কারা রেয়াত পেয়েছেন শাহজাহান। কারাবিধি অনুযায়ী, আচার-আচরণ এবং অন্যান্য কারণে সব মিলিয়ে ১০ বছর ৫ মাস রেয়াত পেয়েছেন। সাজা খেটেছেন ৩১ বছর ৬ মাস ২ দিন।

শাহজাহানের হাতে কোনো টাকাপয়সা না থাকায় যে ১০ হাজার টাকা তাঁর দণ্ড হয়েছিল, তা কারা কর্তৃপক্ষ মিটিয়ে দিয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.