ব্র্যাক ব্যাংককে ৫ কোটি ডলার ঋণ দিল আইএফসি

0
115

কভিড-১৯ মহামারির দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব মোকাবিলায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে (এসএমই) সহায়তা করতে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান আইএফসি বাংলাদেশের ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডকে (বিবিএল) ৫ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে। স্থানীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার বেশি।

এসএমই খাতের আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক গ্রাহকদের চলতি মূলধন ও বাণিজ্য অর্থায়ন চাহিদা মেটাতে এই বিনিয়োগ ব্র্যাক ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার তারল্য বাড়াতে সহায়তা করবে। একই সঙ্গে কর্মসংস্থান সুরক্ষায় অবদান রাখবে। সম্প্রতি উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঋণচুক্তি হয়েছে। সোমবার আইএফসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের প্রাইম ব্যাংকের অনুকূলে একই ধরনের ঋণের পাশাপাশি ব্র্যাক ব্যাংককে দেওয়া এই ঋণ বাজারে একটি ইতিবাচক বার্তাও দেবে এবং স্থানীয় ব্যাংক ও এসএমইগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা অর্থায়নের চাহিদা পূরণে অন্যান্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণে অবদান রাখবে। এই অর্থায়ন প্যাকেজ জনস্বাস্থ্য সংকটের সময়কালে কোম্পানিগুলোকে সহায়তা করতে আইএফসির ৮ বিলিয়ন ডলারের বৈশ্বিক কভিড-১৯ ফাস্ট ট্র্যাক অর্থায়ন সুবিধার অংশ। এই নতুন বিনিয়োগ কভিড-১৯ এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে সংকটে থাকা কোম্পানিগুলোর জন্য চলতি মূলধন সমাধান (Working Capital Solutions) কর্মসূচির অধীনে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে উদীয়মান বাজারের ব্যাংকগুলোতে বছরে ২ বিলিয়ন ডলার দেওয়া হচ্ছে। এই প্রকল্প ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) প্রাইভেট সেক্টর উইন্ডোর মিশ্রণ অর্থায়ন সুবিধা (Blended Finance Facility) দ্বারাও সমর্থিত হবে।

ব্র্যাক ব্যাংক বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম বেসরকারি ব্যাংক এবং এই দেশের একমাত্র এসএমই-ফোকাস্ড ব্যাংক। ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের এসএমই এবং করপোরেট গ্রাহকরা কভিড-১৯ এর বিরূপ প্রভাবজনিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। এছাড়া বৈদেশিক মুদ্রার অপর্যাপ্ত যোগানের কারণে তাদের নিয়মিত বাণিজ্য পরিচালনায় বাড়তি সমস্যা হচ্ছে।’

কভিড-১৯ মহামারির পর বিশ্বে অর্থনৈতিক ধীরগতির সৃষ্টি হয়েছে, যার পেছনে ভূ-রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহসহ নানা কারণ রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার জন্য আইএফসির পোর্টফোলিও ম্যানেজার জুন ইয়ং পার্ক বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো রপ্তানি খাত চালিত অর্থনীতির দেশগুলো যারা নানা সামষ্টিক অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক সংকটের কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার মুখে পড়েছে, তাদের ব্যাংকিং খাতে আইএফসি সহায়তা করে আসছে। ব্র্যাক ব্যাংকের মতো যাদের উল্লেখযোগ্য এসএমই পোর্টফোলিও রয়েছে বাংলাদেশের এমন মুখ্য ব্যাংকিং পার্টনারদের আইএফসি অবিচল সহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। ব্র্যাক ব্যাংকের সঙ্গে আইএফসির গত ১৯ বছরের মূলধন এবং ঋণের প্রতিশ্রুতি রয়েছে।

২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত আইএফসি বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধিতে ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের অধিক বিনিয়োগ করেছে, যার ফলশ্রুতিতে এদেশের নাগরিকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কভিড সংকটের শুরু থেকে আইএফসি এ দেশের বিভিন্ন ব্যাংক এবং কোম্পানিকে ৩৬০ মিলিয়ন ডলারের চলতি মূলধন ও তারল্য সহায়তা দিয়েছে।

বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের জন্য নিযুক্ত আইএফসির কান্ট্রি ম্যানেজার মার্টিন হল্টম্যান বলেন, ‘তিন বছর লম্বা সময় করোনার প্রভাবের মধ্যে থাকার পর বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা চ্যালেঞ্জিং বাজার পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। ব্র্যাক ব্যাংককে সহায়তার মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সহাযোগিতা করতে এবং মহামারি পরবর্তী টেকসই অর্থনৈতিক দৃশ্যপটের জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবো।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.