বেশি স্মার্টনেস দেখাবেন না, সেই পুলিশ কর্মকর্তাকে হাইকোর্ট

0
91
এসআই মাসুদ

মাত্র ৪২ ঘণ্টায় হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করায় এক এসআইকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্দেশ্য করে আদালত বলেন, ‘বেশি স্মার্টনেস দেখাবেন না। একদম কারাগারে পাঠিয়ে দেব।’

বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলন সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ মন্তব্য করেন।

মানিকগঞ্জে মো. রুবেল হত্যা মামলার নথি তলব চেয়ে এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আজ হাইকোর্টে হাজির হন সদর থানার এসআই মাসুদ রানা। এ সময় মামলার নথি দেখে আদালত তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনার মতো পুলিশ অফিসার দরকার। আপনি মাত্র ৪২ ঘণ্টায় একটি হত্যা মামলার তদন্ত শেষ করলেন? এ সময়ের মধ্যে কখন সাক্ষী নিলেন, কখন ঘুমালেন, কখন খাওয়া-দাওয়া করলেন— তা আমাদের দেখান। আর কতটি মামলা আপনি তদন্ত করেছেন, সেগুলো কত সময়ে শেষ করেছেন তার তালিকাও দেন।

এ সময় পুলিশ কর্মকর্তা মাসুদ বলেন, এটা আমার প্রথম তদন্ত।

এক পর্যায়ে এসআই মাসুদকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপারকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

এ ছাড়া এই হত্যা মামলা নতুন করে তদন্ত করতেও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সুপারের নিচে নয়, এমন কর্মকর্তা দিয়ে ৬০ দিনের মধ্যে এ ঘটনা এবং মামলাটির পুনঃতদন্ত করতে বলা হয়েছে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে  ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জী বাপ্পী।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের বলেন, ত্রুটিপুর্ণ তদন্ত প্রতিবেদন ও আদালতের সামনে ভুল তথ্য উপস্থাপনের জন্য হাইকোর্ট এসআই মাসুদকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

আইনজীবী শিশির মনির বলেন, আদালতের আদেশ অনুযায়ী, মামলাটির তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এসআই মাসুদ বরখাস্ত থাকবেন।

‘লাশ উদ্ধার থেকে অভিযোগপত্র, ৪২ ঘণ্টার অবিশবাস্য তদন্ত’ শিরোনামে গত ২ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনটি যুক্ত করে সংশ্লিষ্ট মামলার নথি তলবের নির্দেশনা চেয়ে আসামি সোহেল ওরফে নুরুনবী ও বাদী চম্পা আক্তার ওরফে অঞ্জনা ৫ মার্চ হাইকোর্টে আবেদন করেন। সোহেল ও চম্পা সম্পর্কে ভাই-বোন। আর রুবেল নামে হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তি সোহেলের ভগ্নিপতি।

ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ১৪ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মানিকগঞ্জ সদর থানার এসআই মাসুদকে কেস ডকেটসহ ৩ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টায় আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। সে অনুসারে তদন্ত কর্মকর্তা আজ হাইকোর্টে হাজির হন। এরপর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পর্যালোচনা করে আদালত আদেশ দেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে এসআই মাসুদ ও মামলা বাদী চম্পা আক্তারের মুঠোফোনে কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়। তবে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান সমকালকে বলেন, এসআই মাসুদকে বরখাস্তের কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। তবে হাইকোর্ট যে নির্দেশনা দেবেন তা পালন করা হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.