বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা ও রেলসেতুর মালামাল নিয়ে মোংলায় ২ জাহাজ

0
91
বঙ্গবন্ধু রেলওয়ের মালামাল নিয়ে এসেছে ‘এমভি সান ইউনিটি’ জাহাজ।

দেশে চলমান দুই মেগা প্রকল্পের মালামাল নিয়ে মোংলা বন্দরে ভিড়েছে দুটি বাণিজ্যিক জাহাজ। বুধবার সকালে বাংলাদেশের পতাকাবাহী ‘বসুন্ধরা ইমপ্রেস’ জাহাজে এসেছে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা। আর বঙ্গবন্ধু রেলওয়ের মালামাল নিয়ে এসেছে পানামা পতাকাবাহী  ‘এমভি সান ইউনিটি’ জাহাজ। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার বিভাগ এই তথ্য জানায়।

‘বসুন্ধরা ইমপ্রেস’ জাহাজের স্থানীয় শিপিং এজেন্ট টগি শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিক শিপিংয়ের খুলনার সহকারী ব্যবস্থাপক খন্দকার রিয়াজুল হক জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় মোংলা বন্দরের হারবাড়িয়া ৮ নম্বর বয়ায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে জাহাজটি নোঙর করে। এরপর সেখান থেকে ছোট লাইটারে কয়লা খালাস করে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে নেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, এর আগে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি হওয়া এই জাহাজ থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হয় ১৯ হাজার ৫০০ মেট্রিকটন কয়লা। সেই কয়লা এরই মধ্যে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। বাকি ৩০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস করে সেখানে পৌঁছানো হবে।

এদিকে কয়লা সংকটে বন্ধ থাকা রামপাল দুই-একদিনের মধ্যে আবার বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাবে। বৃহস্পতিবার জাহাজ থেকে মোংলায় খালাস হওয়া এই কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া পার্টনারশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) উপ-ব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম।

তিনি বলেন, নিয়মিত ৫৬০ থেকে ৫৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছিল রামপালের এই বিদ্যুৎকেন্দ্র। উৎপাদিত বিদ্যুতের মধ্যে ৪৬০ মেগাওয়াট ঢাকার জাতীয় গ্রিডে ও ২০০ মেগাওয়াট খুলনা-বাগেরহাটে সরবরাহ করা হচ্ছিল। নিয়মিত উৎপাদনের জন্য কেন্দ্রটি দৈনিক পাঁচ হাজার মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন হয়। কিন্তু কয়লা সংকটে গত ২৩ এপ্রিল রাত থেকে কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।

অন্যদিকে, বন্দরে আসা অপর বিদেশি জাহাজ ‘এমভি সান ইউনিটি’ জাহাজে এসেছে বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে ব্রিজের স্টিল স্ট্রাকচার।

জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট এনসিয়েন্ট স্টিমশিপের খুলনার ব্যবস্থাপক মো.  ওহিদুজ্জামান বলেন, বেলা ১১টায় জাহাজটি বন্দরের ৮ নম্বর জেটিতে নোঙর করে। গত ২ এপ্রিল ভিয়েতনাম থেকে ১৬৯ প্যাকেজের এক হাজার ৫৪৮ দশমিক ৪৬ মেট্রিক টন মেশিনারি পণ্য নিয়ে আসে জাহাজটি।

এদিন দুপুর ১২টার পর এই পণ্য খালাস শুরু হয়েছে। পরে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু কর্তৃপক্ষের কাছে খালাস হওয়া এসব পণ্য পৌঁছে দেওয়া হবে।

এর আগে গত ১৯ মার্চ বিদেশি জাহাজ এমভি এভার চ্যাম্পিয়ন জাহাজে এই ব্রিজের ১৪৪ প্যাকেজের ১৪১১ দশমিক ৬২৯১ মেট্রিক টন মেশিনারি পণ্য আসে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলী বলেন, দেশে বড় বড় মেগা প্রকল্পের আমদানিকৃত মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর পণ্যসহ দেশের বেশিরভাগ মালামাল মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস হওয়ায় এ বন্দরের সক্ষমতা পূর্বের তুলনায় অনেকগুণ বেড়েছে, এটা প্রমাণিত।যা দক্ষ লোকবলের মাধ্যমে বিভিন্ন মেশিনারিজ জাহাজ থেকে পণ্য খালাস ও বোঝাই করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নৌপথে গন্তব্য স্থানে পৌঁছাতে সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হচ্ছে মোংলা বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের। এছাড়া এখানকার ব্যবসায়ীদের আরও বেশি সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে সার্বক্ষণিক কাজ করছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। আগামীতে দেশের মেগা প্রকল্পের আরও পণ্যবাহী জাহাজ এসে এ বন্দর দিয়ে খালাস হবে বলে জানায় বন্দর চেয়ারম্যান।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.