বাংলাদেশসহ ২৮ দেশের ভোটে ইসরায়েলে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের প্রস্তাব পাস

0
74
জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ

ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের আহ্বান জানিয়ে প্রস্তাব পাস হয়েছে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে। ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পক্ষ থেকে উত্থাপিত এ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে ৪৭ সদস্যদেশের মধ্যে বাংলাদেশসহ ২৮টি দেশ।

শুক্রবার (০৫ এপ্রিল) পাস হওয়া এই প্রস্তাবে ফিলিস্তিনের গাজায় সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলকে বিচারের আওতায় আনার আহ্বানও জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, ওআইসি পক্ষে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে প্রস্তাবটি তুলেছিল পাকিস্তান। বাংলাদেশসহ ২৮টি দেশের ভোটে পাস হয় প্রস্তাবটি। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানিসহ ৬টি দেশ প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছিল। আর ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল ভারত ও ফ্রান্সসহ ১৩টি দেশ।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে প্রায় ৬ মাস ধরে হামাস নির্মূলের নামে গাজায় নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। দখলদার রাষ্ট্রটির সেনাবাহিনীর অব্যাহত অভিযান ও হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে অবরুদ্ধ উপত্যকাটি। এরই মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ৩৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। সম্প্রতি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মানবিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হলেও তা মানছেনই না বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার মন্ত্রিপরিষদ।

এমন পরিস্থিতিতে শুক্রবার বৈঠকে বসে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ। এ সময় গাজায় সম্ভব্য যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য ইসরায়েলের জবাবদিহি চাওয়া হয়। সেইসঙ্গে ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করারও দাবি জানায় সংস্থাটি।

জাতিসংঘের মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট মুখপাত্র জেরেমি লরেন্স বলেন, গাজায় ৭ অক্টোবর থেকে অব্যাহতভাবে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন চলছে। ছয় মাস ধরে নজিরবিহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে বেসামরিক ফিলিস্তিনিরা।

উল্লেখ্য, জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে প্রস্তাব পাস হলেও এই সিদ্ধান্ত মানার ক্ষেত্রে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে, প্রতীকি অর্থে বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এবারই প্রথমবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এই অবস্থান নিয়েছে।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরেই মানবাধিকার পরিষদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করে আসছে তেল আবিব। অন্যদিকে, গাজায় আগ্রাসন চালানোর ক্ষেত্রে বিদেশি অস্ত্র ও গোলাবারুদ সহায়তা পাচ্ছে ইসরায়েল। এ অবস্থায় গত ফেব্রুয়ারিতে তেল আবিবে অস্ত্র রপ্তানি অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানায় জাতিসংঘের কর্মকর্তারা। এরপরও ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের অন্যান্য মিত্ররা।

প্রস্তাবের পক্ষে এবং ইসরায়েলের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে যেসব দেশ:

বাংলাদেশ, আলজেরিয়া, বেলজিয়াম, ব্রাজিল, বুরুন্ডি, চিলি, চীন, আইভরি কোস্ট, কিউবা, ইরিত্রিয়া, ফিনল্যান্ড, গাম্বিয়া, ঘানা, হন্ডুরাস, ইন্দোনেশিয়া, কাজাখস্তান, কুয়েত, কিরগিজস্তান, লুক্সেমবার্গ, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মরক্কো, কাতার, সোমালিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুদান, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ভিয়েতনাম।

প্রস্তাবের বিপক্ষে ও ইসরায়েলের পক্ষে ভোটদানকারী ছয় দেশ:

আর্জেন্টিনা, বুলগেরিয়া, জার্মানি, মালাউই, প্যারাগুয়ে ও যুক্তরাষ্ট্র।

ভোটদানে বিরত থাকা ১৩ দেশ:

আলবেনিয়া, বুলগেরিয়া, ক্যামেরুন, কোস্টারিকা, ডোমিনিকান রিপাবলিক, ফ্রান্স, জর্জিয়া, ভারত, জাপান, লিথুয়ানিয়া, মন্টিনিগ্রো, নেদারল্যান্ডস ও রোমানিয়া।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.