বসে ছিলেন ট্রেনের দুই বগির জয়েন্টের হুকে, পড়ে গিয়ে বিচ্ছিন্ন হলো দুই পা

0
116
ট্রেনে কাটা পড়ে আহত

নরসিংদী রেলস্টেশনে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে মো. কালা মিয়া (৫৮) নামের এক ব্যক্তির দুই পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রামগামী ট্রেনটি রেলস্টেশনটির ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে যাত্রাবিরতি দেওয়ার ঠিক আগমুহূর্তে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ওই ব্যক্তি ট্রেনটির দুটি বগির জয়েন্টের হুকের ওপর বসে ছিলেন। যাত্রাবিরতির আগে তিনি সেখান থেকে পড়ে যান। আহত কালা মিয়া (৫৮) ঢাকার সাভার উপজেলার পোড়াবাড়ি এলাকার মৃত লালু মিয়ার ছেলে।

রেলওয়ে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনটি চট্টগ্রামের দিকে যাচ্ছিল। বেলা ১১টার দিকে ট্রেনটি নরসিংদী রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতি দেয়। ট্রেনটি থামার ঠিক আগমুহূর্তে দুই বগির জয়েন্টের হুকের ওপর বসে থাকা কালা মিয়া রেললাইনে পড়ে যান। এ সময় ট্রেনের চাকায় তাঁর দুই পা কাটা পড়ে। এর পরপরই ট্রেনটি থেমে যায়। এ দৃশ্য দেখতে পেয়ে প্ল্যাটফর্মে থাকা স্থানীয় চার তরুণ দুই বগির ফাঁকা স্থান থেকে তাঁকে টেনে তুলে আনেন।

পরে ওই চার তরুণ মিলে ধরাধরি করে কালা মিয়াকে নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকায় স্থানান্তর করার কথা বলা হয়েছে। তবে বেলা ১টা পর্যন্ত তাঁর কোনো স্বজন সেখানে না আসায় সদর হাসপাতালে রেখেই তাঁর চিকিৎসা চলছে। খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক রাকিবুল ইসলাম ওই হাসপাতালে যান।

নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক নুসরাত শারমীন বলেন, ট্রেনে কাটা পড়ে ওই ব্যক্তির দুই পা হাঁটুর নিচ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁর রক্তক্ষরণ বন্ধ করা হয়েছে। তাঁকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য হাসপাতালটির একজন অর্থোপেডিক চিকিৎসককে খবর দেওয়া হয়েছে। তিনি যদি মনে করেন এখানে রেখে তাঁর চিকিৎসা সম্ভব নয়, তাহলে ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

কালা মিয়াকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া ওই চার তরুণের একজন মাসুদ ভূঁইয়া বলেন, দুর্ঘটনাটি যখন ঘটে, অনেক লোকই সেটি দেখেছেন। তাঁদের অনেকে তখন ছবি তুলতে বা ভিডিও করতে ব্যস্ত ছিলেন। কেউ এগিয়ে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করছিলেন না। তখন প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা তাঁরা চার বন্ধু এগিয়ে যান। তাঁকে টেনে তুলে দ্রুত এ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তবে ওই ব্যক্তি উঠে আসতে চাইছিলেন না। ওই ব্যক্তি এখন কিছুটা সুস্থ আছেন, কথা বলতে পারছেন বলে শুনেছেন।

রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক রাকিবুল ইসলাম বলেন, কালা মিয়া অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছেন। পুলিশ তাঁর স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন। ওই চারজন তরুণ দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসায় তিনি এখনো বেঁচে আছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.