ধৈর্য্যই আমার ক্ষমতা: দীপিকা পাড়ুকোন

0
108
দীপিকা পাড়ুকোন

পেশাদার ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় থেকে মডেল, সেখান থেকে সফল বলিউড তারকা, আর এখন গ্লোবাল ফ্যাশন আইকন—দীপিকা পাড়ুকোন একের ভেতর অনেক। এই মুহূর্তে নারী-পুরুষ মিলিয়ে বলিউডের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক গোনা তারকাদের একজন দীপিকা। আর এবার বলা হচ্ছে, ২০২২ সালে ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ফ্যাশন মার্কেট হিসেবে প্রতিষ্ঠার পেছনে এককভাবে বড় ভূমিকা রেখেছেন দীপিকা। লিভাই’স, অ্যাডিডাস, লুই ভুঁতোর পর এবার কার্টিয়ার—বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফ্যাশন আর বিউটি ব্র্যান্ডগুলো দীপিকাকে তাঁদের অ্যাম্বাসেডর বানাতে মুখিয়ে আছে। বিজনেস অব ফ্যাশনের এডিটর ইন চিফ ইমরান আমেদের সঙ্গে দীর্ঘ আলাপে উঠে এসেছে একজন ‘বহিরাগত’ থেকে বলিউড হয়ে তিনি কীভাবে হয়ে উঠলেন ‘বিশ্ব ফ্যাশনের রানী’।

কথোপকথনে দীপিকা বলেন, ‘অবশ্যই আমাকে ইন্ডাস্ট্রির বাইরের একজন হিসেবে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। অবশ্য কষ্টের কথাটা বলাই বাহুল্য; কেননা, কষ্ট ছাড়া কেউ কোনো দিন কোথাও পৌঁছাতে পারেনি। তবে আমার যাত্রাটা একদম অন্য রকম।’

সেই অন্য রকমের গল্পও কিছুটা হলেও খোলাসা করে দীপিকা বলেন, ‘ক্যারিয়ারের শুরুতেই আমি হোঁচট খাই। প্রথম সিনেমা সুপারহিট। তারপর একটার পর একটা ফ্লপ। তারপর প্রচণ্ড বিষণ্নতায় ডুবে গেলাম।’

ফ্যাশন আইকন দীপিকা
ফ্যাশন আইকন দীপিকাছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

প্রায় পাঁচ বছর বিষণ্নতার সঙ্গে লড়াইয়ের সেই কঠিন দিনগুলোর কথাও দীপিকা বলেন, ‘কড়া ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমাতাম। ঘুম থেকে উঠেই মনে হতো, কেন উঠলাম। আমার ভেতরে, বাইরে, চারপাশে কেবল শূন্যতা আর শূন্যতা। মনে হতো, কেন বেঁচে আছি! এ রকম জীবনের অর্থ কী! আত্মহত্যার কথাও ভেবেছি বহুবার। কিন্তু সাহস হয়নি। চারপাশে যা কিছু ঘটত, কোনোকিছুই আমাকে স্পর্শ করত না। আমার কিছু খেতে ইচ্ছা করত না। কারও সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছা করত না। কেবলই মনে হতো, কখন এই সমস্ত কিছু ছেড়ে পালিয়ে যাব।’

দীপিকা জানান, ওই পাঁচ বছরের ভেতর যেকোনো সময় তিনি হারিয়ে যেতে পারতেন। তবে তাঁর মনের ভেতর সব সময়ই একটা বিশ্বাস ছিল যে তিনি হারিয়ে যেতে আসেননি। দীপিকা বলেন, ‘আমি মনে করি, ধৈর্যই আমার সবচেয়ে বড় ক্ষমতা। আমি কেবল ওই সময়টা দাঁতে দাঁত চেপে পার করেছি, কেবল বেঁচে থেকেছি। জীবন আমাদের এমন সব মুহূর্তে এনে দাঁড় করায়, যখন কেবল টিকে যাওয়াটাই যুদ্ধ জয়ের মতো। আমি ওই সময় কেবল সারভাইভ করেছি। কখনো ভাবিনি যে আমি শেষ।’

এভাবেই অফ শোল্ডার কালো গাউন আর হীরের নেকলেস এ ৯৫তম অস্কারের মঞ্চে হাজির হন দীপিকা দীপিকাছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

কীভাবে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে সব জয় করলেন, সে কথা জানিয়ে ৩৭ বছর বয়সী দীপিকা বলেন, ‘আমি পরিবার আর আপনজনদের কাছে খারাপ সময়ে সাহায্য চাইতে কুণ্ঠাবোধ করিনি। সবাই আমার পাশে ছিল। শক্তি দিয়েছে, সাহস জুগিয়েছে। আমি বেঙ্গালুরু থেকে মুম্বাইয়ে আমার সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে উড়ে গেছি। একটু সুস্থ্ হয়েই আমি কেবল ধৈর্য ধরে আমার কাজটা করে গেছি আর নিজেকে প্রমাণ করার জন্য সঠিক সুযোগের অপেক্ষা করেছি। এ ছাড়া আমি সব সময় সৎ থেকেছি। নিজের ভেতরের সত্যিকার সত্তাকে বিকশিত করার চেষ্টা করেছি। আমি দীপিকা পাড়ুকোন ছাড়া কোনোদিন অন্য কেউ হবার চেষ্টা করিনি।’

ধৈর্য ধরে সঠিক সময়ের অপেক্ষা করা আর সুযোগকে কাজে লাগানো—এই দুই-ই দীপিকাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় তারকাদের একজন হিসেবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.