দেশে ৪১ নৌপথের ১৫টিই পরিত্যক্ত

0
104
নৌপথ

দেশে একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে নৌপথ। ৪১টি নৌপথের মধ্যে ১৫টি এরই মধ্যে কার্যত পরিত্যক্ত। বাকি ২৬টির মধ্যে ২০টি নৌপথে নিয়মিত যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করছে। ছয়টিতে অনিয়মিতভাবে লঞ্চ চলাচল করে।

নৌপথ বন্ধ কিংবা পরিত্যক্ত হওয়ার পেছনে যাত্রী-স্বল্পতাকে দায়ী করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। তবে নৌযান মালিকসহ নৌ খাত নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর নেতা এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ড্রেজিংয়ের অভাবে তীব্র নাব্য সংকটের কারণেই নৌপথগুলোর এমন দুরবস্থা।

বিআইডব্লিউটিএর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূল পর্যন্ত নৌপথ ৪১টি। তবে ঢাকার সদরঘাট টার্মিনাল থেকে লঞ্চ চলাচল করে ২৬টি নৌপথে।

লঞ্চ মালিক সংগঠনের নেতারা বলছেন, তীব্র নাব্য সংকট সৃষ্টি হওয়ায় অনেক নৌপথে লঞ্চ চলতে পারছে না। সরকার নাব্য সংকট দূরীকরণে নদী খনন ও ড্রেজিং খাতে নিয়মিত বরাদ্দ দিলেও এই অর্থের সঠিক ব্যবহার হচ্ছে না। সংশ্লিষ্টদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ঘাটতি আছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট বদিউজ্জামান বাদল বলেন, লঞ্চ মালিকরা নৌ খাতের বড় অংশীজন। অথচ নদী খনন কিংবা ড্রেজিং কাজে তাঁদের যুক্ত করা হয় না। কোন নৌপথের কোথায় নাব্য সংকট রয়েছে, কোথায় বেশি কিংবা কম আছে– সেই বিষয়েও তাঁদের মতামত নেওয়া হয় না। যতটুকু ড্রেজিং হচ্ছে, এতেও ন্যূনতম স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নেই। বিআইডব্লিউটিএ নিজেদের ইচ্ছামতো ড্রেজিং করছে এবং ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে। তাই নৌযান মালিকসহ জনগণ এর সুফল পাচ্ছে না।

নাব্য সংকটের কারণে অনেক লঞ্চের গন্তব্যে পৌঁছতে সময় নষ্ট হয়, নির্ধারিত দূরত্বের অনেক বেশি পথ পাড়ি দিতে হয়। এতে জ্বালানি খরচ বেড়ে যায়। অতিরিক্ত সময় নষ্ট হওয়ায় যাত্রীরা লঞ্চে উঠতে চান না।

নিরাপদ নৌপথ বাস্তবায়ন আন্দোলনের সদস্য সচিব আমিনুর রসুল বাবুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভ্যন্তরীণ নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে আন্তরিক। সরকার এ খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দও দিচ্ছে। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে বিলুপ্ত নৌপথ চালু করায় ১৪ বছরেও সাফল্য আসেনি।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস বলেন, বিআইডব্লিউটিএর দায়িত্ব হচ্ছে রাজস্ব খাতের আওতায় নিয়মিত ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নৌপথগুলোর নাব্য বজায় রাখা। উন্নয়ন খাতের আওতায় নদী খনন ও বিলুপ্ত নৌপথ চালু করাসহ পলি অপসারণের কাজ হয়। সংস্থাটি এক যুগেরও বেশি সময় ধরে রাজস্ব ও উন্নয়ন খাতের এসব কাজ করছে। এ জন্য সরকারি তহবিলের কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। তবে আশানুরূপ সাফল্য চোখে পড়ছে না। এর পেছনে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহির ঘাটতি, অস্বচ্ছতা, অনিয়ম ও দুর্নীতি দায়ী।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.