থাইল্যান্ডে নির্বাচনে গণতন্ত্রপন্থিদের বিশাল জয়

0
83
মুভ ফরওয়ার্ড পার্টির (এমএফপি) পিটা লিমজারোয়েনরাত।

সব জরিপের ফলাফল ভ্রান্ত প্রমাণ করে থাইল্যান্ডের সাধারণ নির্বাচনে অবিশ্বাস্য জয় পেয়েছে সামাজিক ও গণতন্ত্রপন্থি দল মুভ ফরওয়ার্ড পার্টি (এমএফপি)।

সোমবার সকাল পৌনে ১০টা পর্যন্ত প্রাপ্ত ৯৪ দশমিক ২ শতাংশ ফলাফলে দলটি নির্বাচনী এলাকায় ১১২ আসন এবং পার্টি তালিকায় ৩৮ আসন পায়। এর পরের অবস্থানেই রয়েছে নির্বাসিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার মেয়ে পায়েটংটার্ন সিনাওয়াত্রার পিউ থাই পার্টি। দলটি নির্বাচনী এলাকায় জয় পেয়েছে ১১৩টি আসনে আর পার্টি তালিকায় জয় পায় ২৯টিতে। পিউ থাই পার্টি বেশি আসন পাবে বলে একাধিক জরিপে উঠে এসেছিল।

অন্যদিকে, সেনাসমর্থিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান ওচার নতুন দল ইউনাইটেড থাই নেশন পার্টির ভরাডুবি হয়েছে। দলটির অবস্থান পঞ্চম স্থানে। ওচার দল পেয়েছে মাত্র ২৩টি নির্বাচনী আসন এবং ১৩টি আসনে জয় পায় দলীয় তালিকায়। খবর ব্যাংকক পোস্টের।

নির্বাচনে কোনো দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ফলে গঠন করতে হবে জোট সরকার। এরই মধ্যে এমএফপিকে অভিনন্দন জানিয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা পিউ থাই পার্টির নেতা পায়েটংটার্ন সিনাওয়াত্রা। তিনি বলেন, জোট সরকার গঠনে তাঁর দল আলোচনার জন্য প্রস্তুত। পায়েটংটার্ন বলেন, তাঁরা আনুষ্ঠানিক ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছেন। এমএফপির এই জয়ে তাঁরাও খুশি। একসঙ্গে কাজ করতে চান বলেও জানান তিনি।

এর আগে অবশ্য জোট সরকার গঠনের আগ্রহ প্রকাশ করেছিল এমএফপিও। দলটির নেতা পিটা লিমজারোয়েনরাত রোববার দুপুরে বলেন, মুভ ফরোয়ার্ড এবং অন্য বিরোধী দলগুলো নিয়ে একটি জোট সরকার গঠন করতে পারে পিউ থাই।

তবে ভোটে বড় জয় পেলেও গণতন্ত্রপন্থি দলগুলো ক্ষমতায় যেতে পারবে– এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। কারণ, ২০১৭ সালে প্রবর্তিত সংবিধানের আলোকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ৫০০ নির্বাচিত নিম্নকক্ষ সদস্যের পাশাপাশি ভোট দিতে পারবেন ২৫০ সামরিক নিযুক্ত সিনেটরও। এতে ফলাফল কী হবে, এখনই তা বলা যাচ্ছে না।

এর আগে রোববার সকাল ৮টায় শুরু হয়ে সারাদেশে ৯৫ হাজার কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। দেশটির সংসদের নিম্নকক্ষের ৫০০ আসনের ভোট গ্রহণ হয়েছে। এর মধ্যে সরাসরি নির্বাচনী আসন ৪০০টি এবং দলীয় তালিকায় আসন রয়েছে ১০০টি। দেশটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৫ কোটি ২০ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ২৩ লাখ ভোটার আগাম ভোট দিয়েছেন।

এদিকে, নির্বাচনে কোনো ধরনের কারচুপি হয়নি বলে দাবি করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।

এক দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা সেনাসমর্থিত সরকারের এই ভরাডুবির বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছেন বিশ্লেষকরা। তাঁদের মতে, দেশটিতে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়া, অর্থনৈতিক দুরবস্থা, করোনা-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে মন্থরগতি আর সুশাসনের অভাবে ভোটাররা নতুন নেতৃত্ব বেছে নিয়েছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.