ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় সরকার ব্যর্থ, বললেন কীটতত্ত্ববিদেরা

0
107
সংবাদ সম্মেলনে কীটতত্ত্ববিদেরা

দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় সরকার ও সিটি করপোরেশন ব্যর্থ বলে মন্তব্য করেছেন কীটতত্ত্ববিদেরা। তারা বলছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে যে ডেঙ্গু রোগীর পরিসংখ্যান দেওয়া হচ্ছে তা খণ্ডিত। সিটি করপোরেশন মশা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তামাশা করছে।

শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘কেন এই ডেঙ্গু মহামারি? পরিত্রাণ কোন পথে?’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে কীটতত্ত্ববিদগন একথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে সঞ্চালনা করেন ‘সরকার কীটতত্ত্ববিদ ও বাংলাদেশ প্রাণিবিজ্ঞান সমিতি’র সাবেক সভাপতি মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী বলেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমানের যে ডেঙ্গু পরিস্থিতি তা প্রাকৃতিকভাবে বেড়েছে এবং প্রাকৃতিকভাবে কমে যাবে। সিটি করপোরেশন যে কার্যক্রম দেখাচ্ছে তাতে মূলত কোনো কাজ হচ্ছে না। কীটতত্ত্ববিদের দায়িত্বের জায়গা থেকে আমরা কথা বলছি। ম্যান মসকিউটো এফেক্ট কমাতে হবে। একটি পূর্ণাঙ্গ মশা তিন থেকে চার সপ্তাহ পর্যন্ত ডেঙ্গু ছড়াতে পারে। উড়ন্ত মশা মারার বিকল্প নেই। ফগিংয়ের মাধ্যমে ২০ শতাংশও মশা মারা সম্ভব নয়। ইউএলভি ফর্মুলার মাধ্যমে এডাল্ট মশা মারতে হবে। মশা যে পর্যায়ে চলে এসেছে সেখান থেকে কন্ট্রোল করা কঠিন। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে নিয়ন্ত্রণে এসেছে।’

মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘ডোবা-নালায় এডিস মশা ব্রিড করে সেটার কোনো সায়েন্টিফিক ভিত্তি নেই। এসব বিভ্রান্তিকর তথ্যের জন্য যারা নিয়ন্ত্রণ করবে তাদেরকেও দ্বিধাদ্বন্দে ফেলে। ঢাকায় ডেঙ্গুতে ক্রস-ইনফেকশন হচ্ছে। ৯৫ শতাংশ এডাল্ট মশা না মারতে পারলে বর্তমান ব্রিডিং কমানো সম্ভব নয়।’

বিটিআই নিয়ে মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন বিটিআই নামে যা এনেছে তা পয়জন। কোনো ধরনের নিয়মনীতি না মেনে এ বিটিআই আনা হয়েছে এবং তা প্রয়োগও করা হয়েছে। বিটিআইয়ের বিভিন্ন ক্লাসিফিকেশন আছে। যেটা উত্তর সিটি করপোরেশন এনেছে সেটা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি সেটা পাবলিক হেলথের জন্য নয়, কৃষির জন্য। সিটি করপোরেশন একটি চক্রে আটকে আছে। তারা বিভিন্ন সময় পাখি ছাড়ে, ব্যাং ছাড়ে কিন্তু কার্যকরী কিছুই হচ্ছে না।’

কীটতত্ত্ববিদ সাইফুল আলম বলেন, ‘২০১৬ সালের পর থেকে সারা বছরই কম বেশি ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যায়। তার মানে আমরা মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সারা বাংলাদেশকে নিয়ে একটি কন্ট্রোল প্রোগ্রাম নেওয়া দরকার। কিন্তু আমাদের এখানে পরীক্ষিত কোনে মশা কন্ট্রোল পদ্ধতি চালু নেই। মশা নিধনের ক্ষেত্রে আমরা ইনডিশিসনে ভুগি। আমরা কি ফগিং করব নাকি লার্ভিসাইড নাকি টিকা আনব। কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা আছে কিনা সেটা দেখতে হবে। আমরা কত দিনের মধ্যে মশা নিয়ন্ত্রণ করব সেটার নির্ধারণ করতে হবে।’

সাইফুল আলম আরও বলেন, ‘জনগণের বাড়ি-বাড়ি যদি ইনসেকটিসাইড পৌঁছে দেওয়া যায়। তবে আমরা জনগণের হাতে কোন ধরনের অস্ত্র দেইনি, দেওয়া হয়নি কোনো ট্রেনিং। কিন্তু বলছি সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে আগে জনগণের হাতে মশা মারার অস্ত্র দিতে হবে।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.