ডলার কেনাবেচায় অনিয়ম, ১৩ ব্যাংকের কাছে ব্যাখ্যা তলব

0
99
বাংলাদেশ ব্যাংক

প্রধান নির্বাহীদের ঠিক করা দরের বেশিতে ডলার কেনাবেচার অভিযোগে ১৩ ব্যাংকের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আমদানিতে সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা দর নির্ধারিত থাকলেও কোনো কোনো ব্যাংক ১১৭ টাকা পর্যন্ত নিয়েছে। একইভাবে কিনেছে ১১৬ টাকা দরে।

রোববার বিভিন্ন ব্যাংকে এ সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। ব্যাখ্যা তলব তালিকার সবই বেসরকারি খাতের ব্যাংক। এর মধ্যে একটি শরিয়াহভিত্তিক। আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিস এবং বৈদেশিক মুদ্রা পরিদর্শন বিভাগ থেকে ডলার কেনাবেচা পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শনের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বাড়তি দরে ডলার কেনা থেকে বিরত ছিল অনেক ব্যাংক। এতে গত আগস্টে রেমিট্যান্স প্রায় সাড়ে ২১ শতাংশ কমে ১৬০ কোটি ডলারে নেমেছে। প্রাথমিকভাবে পরিদর্শনে শরিয়াহভিত্তিক একটি ব্যাংক পাওয়ায় এ খাতের অন্যান্য ব্যাংকেও ডলার বেচাকেনার তথ্য যাচাই করা হচ্ছে।

২০২১ সালে অতিরিক্ত মুনাফার অভিযোগ এনে ১২ ব্যাংকের লাভের অর্থ থেকে ৫০০ কোটি টাকা সিএসআর খাতে ব্যয়ের নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই তালিকায় বিদেশি মালিকানার দুটি ও বেসরকারি খাতের ১০ ব্যাংক ছিল।

ব্যাংকাররা জানান, ডলারের দর বাজারভিত্তিক বলা হলেও এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঠিক করে দিচ্ছে। এবিবি ও বাফেদার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্ধারিত ডলার কেনার দর এখন ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা; আমদানিতে ১১০ টাকা। তবে এ রকম দরে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ হুন্ডিতে ডলারের চাহিদা বেড়েছে।

বর্তমানে হুন্ডিতে অর্থ পাঠিয়ে প্রবাসীরা এক ডলারের বিপরীতে ১১৭ টাকা পর্যন্ত পাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে তাদের কোনো খরচ করতে হচ্ছে না। কিন্তু ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠাতে গড়ে খরচ হয় ৪ শতাংশ। ফলে সরকার আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার পরও হুন্ডির সমান পাচ্ছেন না তারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক হুন্ডির চাহিদা বন্ধ না করে এভাবে শুধু ব্যাংকের ওপর চাপ দিলে বাজার আরও অস্থির হবে বলে মনে করেন তারা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, পরিদর্শনের ভিত্তিতে ব্যাংকগুলোর কাছে প্রাথমিকভাবে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কী ধরনের ব্যবস্থা, তা বলতে রাজি হননি তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংক অনেক দিন ডলারের দর কৃত্রিমভাবে ৮৪ থেকে ৮৬ টাকায় ধরে রেখেছিল। কিন্তু করোনা পরবর্তী সময়ে বাড়তি চাহিদা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর তা আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। গত দুই বছরে দর প্রতি ডলারে ৩০ শতাংশ বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকগুলোর কাছে গত দুই বছরে প্রায় সাড়ে ২৩ বিলিয়ন ডলার বিক্রির পরও বাজার ঠিক হয়নি। বরং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমে ২৩ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। এ অবস্থায় গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ডলারের দর নির্ধারণ করে আসছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপর থেকেই কমছে রেমিট্যান্স।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.