ট্রাম্পকে জড়িয়ে আরেক নারীর নাম, কে এই ম্যাকডুগাল?

0
114
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কারেন ম্যাকডুগাল।

যৌনতা, নারী, ঘুষ। মামুলি তিন শব্দ। এতেই ঝড় বয়ে যাচ্ছে বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাশালী দেশের এক সাবেক প্রেসিডেন্টের জীবনে। তিনি আর কেউ নন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যিনি পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে হয়েছেন গ্রেপ্তার।

এ ঘটনা ঐতিহাসিক। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এর আগে আর কোনো প্রেসিডেন্ট ফৌজদারি অপরাধে গ্রেপ্তার হওয়ার নজির নেই। মঙ্গলবার আদালতে আত্মসমর্পণ করতে গিয়ে গ্রেপ্তারের পরই অবশ্য মুক্তি পান ট্রাম্প। কিন্তু এদিন সামনে এসেছে আরেক নারীর নাম। সাবেক প্লেবয় মডেল ওই নারীর নাম কারেন ম্যাকডুগাল। পর্নো তারকা ড্যানিয়েলসের মতো ট্রাম্পের সঙ্গে তারও সম্পর্ক ছিল বলে তিনি দাবি করেছেন।

কে এই প্লেবয় মডেল? ট্রাম্পের সঙ্গে কীভাবে তার ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে? আর কত দিন টেকে সেই সম্পর্ক? এসব বিষয় নিয়ে লিখেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।


প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীর্ঘ ১০ মাস নিয়মিত সম্পর্ক ছিল ট্রাম্প-ম্যাকডুগালের। ঘরসংসার সামলে বিবাহিত ট্রাম্প সেসময় মাসে অন্তত পাঁচ দিন দেখা করতেন এই নারীর সঙ্গে।

লাস্যময়ী এই সুন্দরীর জন্ম ইন্ডিয়ানাতে। ছোটবেলায় মিশিগানে চলে যান তিনি। মাত্র ২০ বছর বয়সে তিনি মডেলিং শুরু করেন। ১৯৯৮ সালে তিনি প্লেবয়ে যোগ দেন। প্রখ্যাত পামেলা অ্যান্ডারসনের পরে দ্বিতীয় নারী হিসেবে প্লেমেট অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড পান তিনি। একজন কলামিস্ট ও অ্যাডভোকেট হিসেবেও পরিচিতি আছে ম্যাকডুগালের।

১৯৯৯ সালে পুরুষদের ফিটনেস ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে প্রথম নারী হিসেবে তাকে দেখা যায়। মডেলিংয়ের পাশাপাশি বিজ্ঞাপন ও টিভিতেও দেখা গেছে তাকে। তবে অপরূপা এই নারী মডেল হিসেবে যতটা আকাঙ্ক্ষিত হয়ে ওঠেন ততটা অভিনেত্রী হিসেবে এগোতে পারেননি।
২০০৬ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে নিউ ইয়র্কার ম্যাগাজিনকে ম্যাকডুগাল জানান, তিনি লস অ্যাঞ্জেলেসের প্লেবয় ম্যানশনে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সেখানে দ্য অ্যাপ্রেন্টিসের একটি পর্বের শুটিং ছিল তার। ট্রাম্প প্রথম দেখাতেই মুগ্ধ হন, আর ম্যাকডুগালের রূপের প্রশংসা করতে শুরু করেন।

সিএনএনের সঙ্গে আলাপে ম্যাকডুগাল দাবি করেন, ট্রাম্পের এই সম্পর্ক ছিল প্রেমময়। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প এই দাবিকে উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, তেমন কোনো সম্পর্ক তাদের ছিল না।

২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ম্যাকডুগালকে দেড় লাখ ডলার দেয় ন্যাশনাল এনকোয়ারার নামের একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকা। চুক্তি ছিল, ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি খোলামেলাভাবে ফাঁস করবেন এবং সম্পর্কের বিষয়ে প্রকাশ্যে আর কোথাও কিছু বলবেন না। তবে ট্যাবলয়েডটি সেই সাক্ষাৎকার অবশ্য কখনো ছাপেনি। এই কৌশলে আসলে ম্যাকডুগালকে নীরব রাখা হয়েছিল বলে মনে করেন তিনি।

এ ধরনের কৌশল ‘ক্যাচ অ্যান্ড মেল’ অপরাধ নামে পরিচিত। ট্রাম্প তার বিষয়ে নেতিবাচক কথা ধামাচাপা দিতে এই কাজ করেছে বলে পরে তদন্তে জানা গেছে।

ম্যাকডুগাল অবশ্য ২০১৮ সালে ট্রাম্পের স্ত্রী মেলানিয়ার কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছিলেন। সে সময় তিনি বলেছিলেন, আমি দুঃখিত। আমি আসলেই দুঃখিত। আমি যা করেছি ঠিক করিনি।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চলমান আলোচিত মামলাটি ২০১৬ সালে পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে অবৈধভাবে অর্থ দেওয়ার অভিযোগে। তবে ট্রাম্প আরও এক নারীকে অর্থ দিয়েছিলে বলে মঙ্গলবার উল্লেখ করেন প্রসিকিউটর। সেই নারীই ম্যাকডুগাল। বিষয়টি সামনে আসার পর ট্রাম্পকে নিয়ে আলোচনার নদীতে নতুন জোয়ার দেখা দিয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.