পাকিস্তানে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগ

0
71
উমর আতা বান্দিয়াল

পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল ও সুপ্রিম কোর্টের সমমনা বিচারপতিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে একটি ফাইল তৈরির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি। প্রস্তাব অনুযায়ী, তাঁদের কথিত অসদাচরণের বিষয়টি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে জানাতে ‘অভিযোগ প্রস্তুত ও দায়েরে’ পাঁচ সদস্যের সংসদীয় কমিটি গঠন করা হবে।

একটি দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে দেওয়া জামিন নিয়ে ক্ষমতাসীন জোটের অসন্তোষের মধ্যেই গত সোমবার প্রস্তাবটি পাস হয়।

আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় ইমরান খানকে ৯ মে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন বিশেষ আদালত (অ্যাকাউন্টেবিলিটি কোর্ট) এ মামলায় তাঁর আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় দেশজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে তাঁর দল পিটিআই। এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ মে শুনানি হয়। এতে আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় ইমরান খানের গ্রেপ্তার ‘বেআইনি’ ঘোষণা করেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। পরে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের দুই বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত একটি বেঞ্চ তাঁর দুই সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করেন।

দুই দিন বিরতির পর সোমবার পার্লামেন্টের অধিবেশন বসে। এতে গত সপ্তাহে বিক্ষোভকারীদের চালানো ‘তাণ্ডবের’ নিন্দা জানিয়ে এবং ‘সামরিক স্থাপনায় হামলার’ জন্য পিটিআই নেতৃত্বকে দায়ী করে কড়া ভাষায় দুটি রেজল্যুশনও পাস হয়।

জামিনের মাধ্যমে ইমরান খানকে সব ধরনের মামলা থেকে সুরক্ষা দেওয়ার অভিযোগে অধিবেশনে প্রধান বিচারপতির কড়া সমালোচনা করে বক্তব্য দেন গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন মন্ত্রীসহ ক্ষমতাসীন জোটের পার্লামেন্ট সদস্যরা। এরপর সংবিধানের ২০৯ অনুচ্ছেদের অধীনে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে অভিযোগ দায়েরে কমিটি গঠনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) থেকে নির্বাচিত সদস্য শাজিয়া সোবিয়া সুমরো।

ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির অধিবেশনের শুরুতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ ৯ মে পিটিআই প্রধানকে গ্রেপ্তার এবং সুপ্রিম কোর্টের ‘নজিরবিহীন’ হস্তক্ষেপে তাঁর মুক্তি ঘিরে সংঘটিত ঘটনাগুলো নিয়ে বিতর্ক করার সুযোগ চেয়ে অধিবেশনের স্বাভাবিক কার্যক্রম স্থগিত রাখতে স্পিকারের প্রতি আহ্বান জানান।

ক্ষমতাসীন জোটের সদস্যরা প্রধান বিচারপতি বান্দিয়ালকে ‘পিটিআইয়ের এজেন্ট’ বলে অভিহিত করেন। তাঁরা বিশেষ করে আদালতে পিটিআই প্রধানকে স্বাগত জানিয়ে এবং তাঁকে রাতযাপনের জন্য গেস্টহাউসে পাঠানোর সময় ‘শুভকামনা জানিয়ে’ করা কথিত মন্তব্যের জন্য প্রধান বিচারপতির কড়া সমালোচনা করেন।

এ ছাড়া রাওয়ালপিন্ডিতে সদর দপ্তরসহ সামরিক স্থাপনায় হামলারও নিন্দা জানান পার্লামেন্ট সদস্যরা। এ জন্য অগ্নিসংযোগকারীদের ও পিটিআই নেতৃত্বকে সেনা আইনে সামরিক আদালতে বিচার করার দাবি জানান তাঁরা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.