বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনকে ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি। একইসঙ্গে তিনি এসব বিষয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে পছন্দ করবেন বলেও জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদ্যসমাপ্ত টোকিও সফর নিয়ে আজ বুধবার সকালে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে ঢাকার জাপান দূতাবাস। এতে যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন জাপানি রাষ্ট্রদূত। সেখানে এক প্রশ্নের জবাবে ইওয়ামা কিমিনোরি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাতের আঁধারে ব্যালট বাক্স ভরা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছিলেন ইওয়ামা কিমিনোরির পূর্বসূরি ইতো নাওকি। বর্তমান রাষ্ট্রদূত তার সেই মন্তব্যকে সমর্থন করেন কি-না জানতে চাইলে বলেন, আমার পূর্বসূরি কী বলেছেন, তা আমার জানা নেই। আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকব। এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, সামনে বাংলাদেশের নির্বাচন আসছে। তবে যে সরকারই থাকুক না কেন, জাপান বাংলাদেশের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বাংলাদেশের প্রতিরক্ষাখাতে সহযোগিতা বাড়াতে চায় জাপান। এ বিষয়ে একমত হয়েছে ঢাকা–টোকিও। প্রতিরক্ষাখাতে সহযোগিতা বাড়ানোর অংশ হিসেবে সমরাস্ত্র সহযোগিতা নিয়ে বর্তমানে আলোচনা করছে দুই দেশ। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষায় সহযোগিতা বাড়িয়ে জাপান আঞ্চলিক নিরাপত্তায় অবদান রাখতে চায় বলেও জানিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রদূত।
চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্প (বিআরআই) এবং ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশলের (আইপিএস) মধ্যে স্বার্থের কোনো দ্বন্দ রয়েছে কি-না জানতে ইয়াওমা কিমিনোরি বলেন, আইপিএস কোনো স্বতন্ত্র বিষয় নয়। আর চীনের বিআরআই সম্পর্কে আমার জানা নেই। কোনো দেশের সরকারকে পক্ষে আনা অবাধ ও মুক্ত ভারত প্রশান্ত মহাসাগরের লক্ষ্য নয়। এর সঙ্গে থাকার মাধ্যমে কানেকটিভিটসহ অবাধ ও মুক্ত ভারত প্রশান্ত মহাসাগরের সুফল পেতে ভোগ করতে পারবে। বাংলাদেশ যে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় ধারণাপত্র তৈরি করেছে, দেখে মনে হয়েছে ঢাকা ও টোকিও একই পথে রয়েছে।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৫ এপ্রিল দেশটিতে ৪ দিনের সরকারি সফর করেছেন। এ সময় বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, তথ্যপ্রযুক্তি, সাইবার নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন চুক্তি ও সহযোগিতা স্মারক সই হয়।
টোকিওতে দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক বেশ ফলপ্রসূ হয়েছে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক সমন্বিত অংশীদারিত্ব থেকে কৌশলগত অংশীদারিত্বের পর্যায়ে পৌছেঁছে। আর কৌশলগত অংশীদারিত্ব শুধু রাজনৈতিক এবং নিরাপত্তা বিষয়াদির সম্পর্ক জোরদার নয়। দুই দেশ অভিন্ন স্বার্থে অর্থনৈতিক সহযোগিতাসহ মানুষে মানুষে যোগাযোগও এগিয়ে নিয়ে যাবে।