জাতিসংঘ অধিবেশন: উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বৈশ্বিক ব্যবস্থা সংস্কারে চাপ

0
100
সাধারণ অধিবেশনের মূল বিতর্কে অংশ নিতে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা এসে জড়ো হচ্ছেন। গতকাল নিউইয়র্কের জাতিসংঘের অ্যাসেম্বলি হলে, ছবি: এএফপি

বিশ্বের অতিদরিদ্রদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়াতে বৈশ্বিক ব্যবস্থা সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছে উন্নয়নশীল দেশগুলো। গত সোমবার জাতিসংঘের উন্নয়ন সম্মেলনে এ আহ্বান জানানো হয়। দারিদ্র্যমুক্তির অঙ্গীকার নিয়ে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে, যা এখনো অধরাই রয়ে গেছে।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনের প্রাক্কালে এ সম্মেলনের আয়োজন করেন সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ইউক্রেন যুদ্ধের বাইরেও অন্য বিষয়গুলোর ওপর জোর দেওয়ার আশায় তিনি এ সম্মেলন আয়োজন করেন।

জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্রগুলো ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ২০১৫ সালে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) গ্রহণ করে। এসব লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রয়েছে ২০৩০ সালের মধ্যে চরম দারিদ্র্যের সম্পূর্ণ অবসান এবং এই গ্রহের ৮০০ কোটি মানুষের একজনও যাতে ক্ষুধার্ত না থাকে, তা নিশ্চিত করা।

এসডিজির লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জনে ‘বৈশ্বিক উদ্ধার পরিকল্পনার’ আহ্বান জানিয়েছেন গুতেরেস। তিনি স্বীকার করেছেন, এসব লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ১৫ শতাংশ অর্জনের পথে রয়েছে। আর কয়েকটি লক্ষ্যমাত্রার সূচক বিপরীতমুখী।

সম্মেলনে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, এসডিজি কেবল কিছু লক্ষ্যমাত্রার তালিকাই নয়, এসব লক্ষ্যমাত্রা ঘিরে রয়েছে সব অঞ্চলের মানুষের আশা, স্বপ্ন, অধিকার এবং প্রত্যাশা।

গুতেরেস বলেন, ‘আমাদের প্রাচুর্যের পৃথিবীতে ক্ষুধা মানবতার ওপর এক মর্মান্তিক কালিমা। এটি মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন। আজকের এই দিনে এবং এই যুগেও লাখ লাখ মানুষের অনাহারে থাকাটা আমাদের প্রত্যেককেই কাঠগড়ায় দাঁড় করায়।’

সম্মেলনে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেন, শেষ নাগাদ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নির্ভর করছে বিশ্বব্যাপী সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্কের মৌলিক সংস্কারের ওপর।

সোমবার সর্বসম্মতভাবে গৃহীত এক ঘোষণায় জাতিসংঘের সদস্যদেশগুলো এসব লক্ষ্যমাত্রার প্রতি এবং চরম দারিদ্র্য নির্মূলে নিজেদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। দিনে ২ দশমিক ১৫ ডলারের (২৩৬ টাকা) কম অর্থ ব্যয়ে জীবন যাপন করলে সেটাকে ‘চরম দারিদ্র্য’ বলা হয়।

ঘোষণায় বলা হয়েছে, মানবজাতি, পৃথিবী, সমৃদ্ধি, শান্তি ও অংশীদারত্ব—এসবের একটিকেও অবহেলা না করে কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে দেশগুলো ‘জরুরি ভিত্তিতে কাজ করতে’ সম্মত হয়েছে।

কিন্তু করোনা মহামারি, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং অন্যান্য সমস্যা, যেমন বাড়বাড়ন্ত জলবায়ু বিপর্যয় ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের ব্যাপক বৃদ্ধির কারণে এসব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অর্থায়ন ও মনোযোগ দেওয়ার প্রচেষ্টা বারবার ব্যাহত হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.