চার বছর ধরে অকেজো কোটি টাকার লাগেজ স্ক্যানার

0
110

খুনের আসামি, দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি, মাদকের আসামিসহ অনেকেই কারাগারে যাওয়ার সময় প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস সঙ্গে নেন। তাদের সেই জিনিসপত্র ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরীক্ষার জন্য কোটি টাকা দামের একটি লাগেজ স্ক্যানার বসানো হয় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে। কিন্তু চার বছর ধরে সেটি অকেজো। বাধ্য হয়ে আগের মতো হাত দিয়ে আসামিদের শরীর, ব্যাগ ও জিনিসপত্র তল্লাশি করে কারাগারে প্রবেশ করাচ্ছেন কারারক্ষীরা।

অভিযোগ রয়েছে, হাতে তল্লাশিতে অনেক সময় সবকিছু সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই হয় না। ফলে কারাগারে নিষিদ্ধ কিছু ঢুকছে কিনা, সেই সন্দেহ থেকে যায়।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রতিদিন বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার ৮০ থেকে ৯০ জন বন্দি আসেন। আবার প্রতিদিন কারাগার থেকে হাজিরা দিতে প্রায় ২০০ বন্দি মহানগর ও জেলা দায়রা জজ আদালতে যান। তারা হাজিরা দিয়ে বিকেলে কারাগারে ফিরে আসেন। আদালতে হাজিরা দেওয়া ও নতুন বন্দিরা প্রয়োজনীয় কাপড়চোপড় ও বিভিন্ন জিনিস সঙ্গে রাখেন। বন্দিদের এসব মালপত্র স্ক্যান করতে ২০১৭ সালের আগস্টে ১ কোটি ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি ডিজিটাল লাগেজ স্ক্যানার বসানো হয়। এটির মাধ্যমে মাদক, মোবাইল ফোনসহ নিষিদ্ধ ও অবৈধ জিনিস সহজেই শনাক্ত করা হতো। কিন্তু বছর না ঘুরতেই স্ক্যানারটি অকেজো হয়। কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একবার মেরামত করে স্ক্যানারটি সচল করা হয়। ২০১৯ সালের এপ্রিলে আবার সেটি অকেজো হয়। তার পর থেকে স্ক্যানারটি পড়ে আছে। স্ক্যানারটি মেরামতে ২০২১ সালের ২১ মে কারা অধিদপ্তরে সর্বশেষ চিঠি দিয়ে অনুরোধ করে চট্টগ্রাম কারা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এখন পর্যন্ত মেরামত হয়নি। ফলে তল্লাশির কাজ চলছে সেই পুরোনো পদ্ধতি, অর্থাৎ হাতে।

এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র জেল সুপার মুহাম্মদ মঞ্জুর হোসেনকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। কারাগারের ডেপুটি জেলার আরিফুর রহমান বলেন, ‘কারাগার সম্পর্কে কোনো তথ্য আমি দিতে পারব না। সিনিয়র জেল সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তথ্য নিতে হবে।’
চট্টগ্রাম কারাগারের এক কর্মকর্তা জানান, লাগেজ স্ক্যানারটি অকেজো থাকায় হাত দিয়ে বন্দিদের তল্লাশি করতে হচ্ছে। এতে নিষিদ্ধ জিনিসপত্র শনাক্ত করা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। বন্দিদের কাছে প্রায়ই মাদক ও অবৈধ জিনিসপত্র পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম কারাগারে ২ হাজার ২০০ বন্দির ধারণক্ষমতা থাকলেও এখন ৫ হাজার ৫৪৬ জন কয়েদি ও হাজতি বন্দি রয়েছেন। এর মধ্যে শতাধিক জঙ্গি ও শতাধিক দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী। এসব বন্দিকে তল্লাশি করতে অনেক সাধারণ কারারক্ষী ইতস্তত বোধ করেন। সেই সুযোগকে ভয়ংকর বন্দিরা মাদক ও মোবাইল ফোন নিয়ে কারাগারে ঢুকে পড়েন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.