চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরে আ.লীগ ও ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, র‍্যাবের লাঠিপেটা-গুলি

0
107
আওয়ামী লীগ ও ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ। বুধবার বিকেলে শান্তির মোড়ে

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, বেলা দুইটার দিকে শান্তির মোড় এলাকায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন আওয়ামী লীগ ও ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর সমর্থকেরা। আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর দুটি নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করেন। এ সময় ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর সমর্থকেরা নৌকার সমর্থকদের দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। পুলিশ মোটরসাইকেল দুটি সদর থানায় নিয়ে যায়। শান্তির মোড় থেকে সরে গিয়ে নৌকার সমর্থকেরা সোনার মোড়ে ককটেল ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাবের সদস্যরা তাঁদের ধাওয়া দিয়ে লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে র‍্যাব সদস্যরা ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতারা দাবি করেন, তাঁরা দুপুরের খাবার খেতে বসেছিলেন। এ সময় র‍্যাব এসে অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাঁদের ওপর লাঠিপেটা করে। তাঁদের জ্যেষ্ঠ নেতা জেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি আবদুল হাকিমকে মারধর করেছে। তাদের অন্তত ৫০ জন নেতা-কর্মী র‍্যাবের পিটুনিতে আহত হয়েছেন।

সকালে ভোট গ্রহণ শুরুর সময়েই চাঁপাইনবাবগঞ্জ আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তখন র‍্যাব এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই কেন্দ্রের ভেতর থেকে একটি বিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করা হয়। তখন থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বেলা দুইটার দিকে সেই ঘটনার জের ধরে শান্তির মোড় এলাকায় আবার সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

বিজিবি ও র‍্যাবের সদস্যরা ফাঁকা গুলি ও লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বুধবার বিকেলে সদরের শান্তির মোড় এলাকায়

বিজিবি ও র‍্যাবের সদস্যরা ফাঁকা গুলি ও লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বুধবার বিকেলে সদরের শান্তির মোড় এলাকায়

‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী সামিউল হক বলেন, তিনি বাড়ির সামনে নির্বাচনী কেন্দ্রে বসে ছিলেন। তখন নৌকার সমর্থকেরা অতর্কিত সেখানে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। তাঁর পায়ে একটি ইট লেগেছে। পরে তাঁর ছেলে তাঁকে বাড়ির ভেতরে নিয়ে যান। আওয়ামী লীগ সমর্থকদের দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুরের বিষয়ে তিনি বলেন, পরের ঘটনা তিনি জানেন না। তাঁর দাবি, অন্তত ১০টি কেন্দ্র থেকে তাঁর এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে নৌকার প্রার্থী আবদুল ওদুদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ফাইজার রহমান বলেন, তাঁদের কয়েকজন নেতা-কর্মী মোটরসাইকেলে মাঝপাড়ার দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় তাঁদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় আপেল প্রতীকের সমর্থকেরা। এতে নবাবগঞ্জ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দ চ্যাটার্জি আহত হন।

র‍্যাবের চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার রুহফি তাহমিন বলেন, র‍্যাবের একটি টহল গাড়ি শান্তি মোড় থেকে বিশ্বরোড মোড়ের দিকে যাচ্ছিল। এ সময় দুর্বৃত্তরা তাঁদের গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। তাদের আঘাত থেকে বাঁচতে র‍্যাব প্রথমে লাঠিপেটা করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে র‍্যাবের গাড়ির দিকে বোমা নিক্ষেপ করে তারা। তাদের হামলা থেকে বাঁচতে প্রায় ২০টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম আলমগীর জাহান বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত। ঘটনা তাঁদের নিয়ন্ত্রণে আছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.