চকরিয়ায় নির্ধারিত এলাকার বাইরে ওষুধ বিক্রি নিয়ে দ্বন্দ্বে সহকর্মীকে হত্যা

0
98
চকরিয়ায় সহকর্মীকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার আশিক বিল্লাহ

কক্সবাজারের চকরিয়ায় একটি ওষুধ কোম্পানির ‘ডেলিভারি ম্যান’ (সরবরাহকারী) মো. এরশাদ আলীকে খুনের ঘটনায় তাঁর সহকর্মী আশিক বিল্লাহকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নির্ধারিত এলাকার বাইরে অন্য জায়গায় কম দামে ওষুধ বিক্রির (মাইগ্রেশন) তথ্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়ার কথা বলায় আশিক এই হত্যাকাণ্ড ঘটান। আশিক একই ওষুধ কোম্পানিতে মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভ হিসেবে কর্মরত।

গতকাল রোববার সন্ধ্যা ছয়টায় চকরিয়া থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী।

গত শনিবার রাত সোয়া ১০টার দিকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাঠে এই হত্যার ঘটনা ঘটে। এর পরপরই আশিক বিল্লাহকে আটক করে পুলিশ। নিহত মো. এরশাদ আলী (২৮) কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর থানার সুতাইল এলাকার মো. সফিকুল ইসলামের ছেলে। আশিক বিল্লাহ ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর থানার ছনধরা গ্রামের বাসিন্দা। জিজ্ঞাসাবাদের পর আশিক বিল্লাহ খুনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নিহত এরশাদ আলী
নিহত এরশাদ আলী

সংবাদ সম্মেলনে মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, শনিবার চকরিয়ার আল রাজি হসপিটাল ফার্মেসির নামে ১৯ হাজার ২৩০ টাকার ওষুধ অর্ডার করিয়ে আনেন আশিক বিল্লাহ। পরে বদরখালীর আল আমিন ফার্মেসি ও নূর আহাম্মেদিয়া ফার্মেসির কাছে ওষুধগুলো বিক্রি করে দেন তিনি। এরশাদ আলী বিষয়টি কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করবে বলায় আশিক বিল্লাহ ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পরিকল্পনা অনুযায়ী আশিক চকরিয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনের একটি দোকান থেকে নতুন ছুরি কেনেন। পরে এরশাদকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাঠের দক্ষিণ কোনায় নিয়ে যান। এ সময় ওষুধ মাইগ্রেশনের কথাটি কর্তৃপক্ষকে না জানানোর অনুরোধ করেন তিনি। সেখানে বিষয়টি নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আশিক ছুরি দিয়ে এরশাদ আলীর গলায় পোঁচ মারেন। দৌড়ে পালাতে গিয়ে এরশাদ ১৫ ফুট দূরে ঘাসের ওপর পড়ে যান। আশিক সেখানে গিয়ে হাঁটু দিয়ে আঘাত করে মাটিতে শুইয়ে ছুরি দিয়ে গলা কেটে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে কাঁধের ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে হাসপাতালের দেয়াল ডিঙিয়ে পালিয়ে যান তিনি।

ঘটনাস্থল থেকে আনুমানিক ৫০০ মিটার দূরে বাসায় গিয়ে রক্তাক্ত জামাকাপড় পরিবর্তন করেন আশিক। পরে ঘটনাস্থলে রেখে যাওয়া মোটরসাইকেল নেওয়ার জন্য গেলে গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় তাঁকে আটক করে পুলিশ।

চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল জব্বার বলেন, গতকাল রাতে এরশাদ আলীর চাচা মিয়া রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে আশিককে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। আজ সোমবার দুপুরে তাঁকে আদালতে তোলা হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.